ট্রাইব টিভি বাংলা ডিজিটাল: বাংলা সংস্কৃতিতে বাঙালির বছরে মোট বারো (Jamai Sasthi 2025) মাসের মধ্যে তেরোটি পার্বণ বা উৎসব পালন করা হয়। এইসব উৎসবের মধ্যে জামাইষষ্ঠী একটি বিশেষ স্থান অধিকার করে আছে। প্রতি বছর জৈষ্ঠ্য মাসের শুক্লপক্ষের ষষ্ঠী তিথিতে জামাইষষ্ঠীর উৎসব পালন করা হয়। এই বছর অর্থাৎ ২০২৫ সালের ১ জুন জামাইষষ্ঠী পালিত হলো। কিছু অঞ্চলে এই উৎসবকে ‘অরণ্য ষষ্ঠী’ নামেও ডাকা হয়।
বিশেষ আচার-অনুষ্ঠান (Jamai Sasthi 2025)
জামাইষষ্ঠীর দিনে বাংলার গৃহস্থালি পরিবেশে বিশেষ আচার-অনুষ্ঠান (Jamai Sasthi 2025) চলে। শাশুড়িরা তাদের জামাইকে ধান ও দুর্বা দিয়ে আশীর্বাদ করেন। শাশুড়িরা নানা প্রকার রান্না তৈরি করে জামাইকে খাওয়ান। সাথে বিভিন্ন ধরনের ফলও তুলে ধরা হয়। এছাড়া জামাইরাও শাশুড়ির জন্য নানা ধরনের উপহার নিয়ে যান। এই উৎসব মূলত শাশুড়ি ও জামাইয়ের সম্পর্ককে মধুর ও ঘনিষ্ঠ করার দিন।
প্রাচীন পৌরাণিক কাহিনি (Jamai Sasthi 2025)
জামাইষ্ঠীর সঙ্গে জড়িত একটি প্রাচীন পৌরাণিক কাহিনি (Jamai Sasthi 2025) রয়েছে। জানা যায়, একবার এক মহিলা প্রতিদিন বাড়িতে রান্না হওয়া খাবার গোপনে আগে খেয়ে ফেলতেন। তার সঙ্গে একটি বিড়ালের নাম জড়িয়ে ছিল, যাকে তিনি মিথ্যা অপবাদ দিতেন। মা ষষ্ঠী, যিনি দুর্গার এক রূপ, এই অপবাদের জন্য খুব রুষ্ট হন। মা ষষ্ঠীর অভিশাপের কারণে ওই মহিলার জন্ম নেওয়া সন্তানরা একে একে মারা যায়।
মা ষষ্ঠীর পূজার নিয়মকানুন
পরে ওই মহিলা নিজের ভুল বুঝতে পারেন এবং মা ষষ্ঠীর পূজা নিয়মকানুন মেনে শুরু করেন। মা ষষ্ঠীর করুণা পেয়ে তার মৃত সন্তানদের জীবন ফিরে আসে। কিন্তু শাশুড়ি যখন বিষয়টি জানতে পারেন, তখন তিনি ওই মহিলাকে বাপের বাড়ি যাওয়ার অনুমতি বন্ধ করে দেন। তার বাবা-মা অনেকদিন মেয়েকে দেখতে না পেয়ে দুশ্চিন্তায় ভুগতে থাকেন। পরে তারা জৈষ্ঠ মাসের শুক্লপক্ষের ষষ্ঠীতে জামাইকে বাড়িতে আমন্ত্রণ জানান এবং সবাই মিলে আনন্দ ভোজ করেন। এই ঘটনা থেকেই জামাইষ্ঠীর উৎসবের শুরু হয়।
আরও পড়ুন: Shani Sade Sati: বিপদের উপর বাড়বে বিপদ, শনির সাড়ে সাতি চলাকালীন করবেন না এসব কাজ!
প্রতিটি পরিবারের ঘরে জামাই আগমন
জামাইষ্ঠীর দিন বাংলার প্রতিটি পরিবারের ঘরে জামাই আগমন উপলক্ষে আনন্দ ও ভোজনের বিশেষ আয়োজন থাকে। শাশুড়ি-জামাইয়ের মধ্যে উপহার বিনিময়ও হয়ে থাকে, যা সম্পর্ককে আরও দৃঢ় করে। এই বছর জামাইষ্ঠী ১ জুন পালিত হয়েছে। ৩১ মে রাত ১২টা ৩৪ মিনিট থেকে ১ জুন রাত ১২টা ৮ মিনিট পর্যন্ত ষষ্ঠী তিথি চলবে। এই সময়ে বাংলার ঘরে ঘরে আনন্দ, খাওয়া-দাওয়ার আয়োজন থাকে।