ট্রাইব টিভি বাংলা ডিজিটাল: ভারত ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্যচুক্তি শীঘ্রই সম্পন্ন হতে চলেছে বলে জানালেন মার্কিন বাণিজ্যসচিব হোয়ার্ড লুটনিক (India US Trade Talks)। সম্প্রতি ওয়াশিংটনে অনুষ্ঠিত একটি উচ্চপর্যায়ের আলোচনাসভায় তিনি জানান, দুই দেশের মধ্যে একটি এমন জায়গায় পৌঁছানো গেছে, যেখান থেকে কার্যকর চুক্তি সম্পন্ন হওয়া এখন সময়ের অপেক্ষা মাত্র। লুটনিক স্পষ্ট করে বলেন, “আমার বিশ্বাস, আমরা এমন একটি জায়গা খুঁজে পেয়েছি, যা সত্যিই উভয় দেশের জন্যই কার্যকর। আগামী কয়েক সপ্তাহের মধ্যেই ভারত ও আমেরিকার মধ্যে একটি শক্তিশালী বাণিজ্যচুক্তি সম্পন্ন হতে পারে।”
মোদী ট্রাম্পের ব্যক্তিগত রসায়ন (India US Trade Talks)
বিশ্লেষকদের মতে, এই চুক্তি ভারত-মার্কিন সম্পর্কের এক নতুন দিগন্ত উন্মোচন করবে(India US Trade Talks)। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে দুই দেশের মধ্যে কূটনৈতিক ও বাণিজ্যিক সম্পর্ক ক্রমেই ঘনিষ্ঠ হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এবং প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের মধ্যে ব্যক্তিগত রসায়ন ও পারস্পরিক শ্রদ্ধার ভিত্তিতেই এই অগ্রগতি সম্ভব হয়েছে বলেই মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। ওই আলোচনাসভায় লুটনিক বলেন, “ট্রাম্পের (Donald J. Trump) ‘আমেরিকা প্রথম’ নীতি কোনওভাবেই ‘শুধু আমেরিকা’ বোঝায় না। বরং তিনি প্রথমে নিজের দেশের ভিত মজবুত করতে চান, তারপরেই বন্ধু রাষ্ট্রগুলোর দিকেও মনোযোগ দিতে চান। ভারত তার মধ্যে অন্যতম।”
ভারতবাসীর উচ্চাকাঙ্ক্ষা এবং উদ্যোগ (India US Trade Talks)
তিনি ভারতের প্রসঙ্গে বলেন, “ভারতবাসীর উচ্চাকাঙ্ক্ষা এবং উদ্যোগ ভারতের অর্থনীতিকে সব সময় ঊর্ধ্বমুখী রাখছে(India US Trade Talks)। ভারতের যা সক্ষমতা, তা অনেক দেশের পক্ষে সম্ভব নয়।” ভারতের সাধারণ মানুষের দৃঢ় সংকল্প এবং কর্মশক্তিকে দেশের অর্থনৈতিক বিকাশের প্রধান চালিকাশক্তি বলে বর্ণনা করেন তিনি। লুটনিকের বক্তব্যে উঠে এসেছে ভারতীয় উদ্যোগপতিদের প্রতিও গভীর শ্রদ্ধা। তিনি জানান, “ভারতীয়রা ব্যবসায়ী হিসেবে অসাধারণ। তাঁরা শুধু স্মার্ট নন, চিন্তাশীল ও বহু দিক থেকে শিক্ষিত। আজ আমেরিকার বহু বড় সংস্থার নেতৃত্বে রয়েছেন ভারতীয় বংশোদ্ভূত ব্যক্তিরা।”

ভারতের মাটিতে উৎপাদন সাদরে গ্রহণ আমেরিকার (India US Trade Talks)
ভারতে উৎপাদনের প্রসঙ্গেও তিনি বলেন, “আমেরিকা চায়, তার অভ্যন্তরীণ বাজারের জন্য আমেরিকাতেই জিনিস তৈরি হোক(India US Trade Talks)। তবে ভারতের মাটিতে উৎপাদন হলে আমেরিকা সেটা সাদরে গ্রহণ করবে।” একইসঙ্গে লুটনিক জানান, যে ধরনের চুক্তি সম্পন্ন হতে সাধারণত দুই থেকে তিন বছর সময় লাগে, সেই চুক্তিই এখন এক মাসের মধ্যে চূড়ান্ত করার চেষ্টা চলছে। তাঁর কথায়, “এই ধরনের দ্রুত অগ্রগতি সাধারণত দেখা যায় না। ভারত প্রথম দিককার দেশগুলোর মধ্যে থাকতে মরিয়া চেষ্টা করছে — এটি প্রশংসনীয়।”

ভারত-আমেরিকা সম্পর্ক (India US Trade Talks)
উল্লেখ্য, গত ফেব্রুয়ারিতে প্রধানমন্ত্রী মোদীর আমেরিকা সফরেই এই বাণিজ্যচুক্তির আলোচনা জোরদার হয়(India US Trade Talks)। তারপর থেকে একাধিক পর্যায়ের আলোচনায় অংশ নিয়েছে দুই দেশের প্রতিনিধিদল। সম্প্রতি ভারতের বাণিজ্যমন্ত্রী পীযূষ গোয়েল এবং মার্কিন প্রতিনিধিদের মধ্যেও বৈঠক হয়েছে। সবমিলিয়ে, ভারত-আমেরিকা সম্পর্কের ইতিহাসে এই বাণিজ্যচুক্তি এক গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক হতে চলেছে বলেই আন্তর্জাতিক মহলের অভিমত। দু’দেশের মধ্যে বাণিজ্যিক, কৌশলগত এবং প্রযুক্তিগত সহযোগিতা এই চুক্তির মাধ্যমে আরও মজবুত হবে — এমনই আশা উভয় পক্ষের।