ট্রাইব টিভি বাংলা ডিজিটাল: রাশিয়া-ইউক্রেন সংঘাত ফের এক নতুন মোড় নিল রবিবার। যুদ্ধের দুই বছর অতিক্রান্ত হলেও আগুন যেন নিভছে না এই পূর্ব ইউরোপের রণক্ষেত্রে (Russia Ukraine War)। এই বার ইউক্রেনের তরফে ফের ড্রোন হামলা চালানো হল রাশিয়ার অভ্যন্তরে—তাও কোনও সীমান্তবর্তী এলাকায় নয়, প্রায় ১,২০০ কিমি ভিতরে, তাতারস্তান অঞ্চলের ইয়েলাবুগায়। স্থানীয় সময় অনুযায়ী রবিবার ভোরে এই হামলা ঘটে। ইউক্রেনের পাঠানো একটি ড্রোন রাশিয়ার একটি যানবাহন তৈরির কারখানাকে লক্ষ্য করে আঘাত হানে। যদিও রুশ আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা ড্রোনটিকে মাঝ আকাশেই ধ্বংস করে দেয়, কিন্তু তার জ্বলন্ত ধ্বংসাবশেষ থেকে আগুন লেগে যায় আশপাশের এলাকায়। আগুনে পুড়ে মৃত্যু হয়েছে অন্তত এক জনের, আহত হয়েছেন আরও ১৩ জন।
ছয়টি ইউক্রেনীয় ড্রোন হামলা (Russia Ukraine War)
ঘটনাস্থলে পৌঁছে তাতারস্তানের গভর্নর রুস্তম মিন্নিখানভ বলেন, “ড্রোনটি সামরিক ঘাঁটিকে লক্ষ্য করে পাঠানো হয়নি। এটি একটি শিল্প কারখানায় আঘাত হানে(Russia Ukraine War)। প্রতিরক্ষা ব্যবস্থায় ধ্বংস হলেও সম্পূর্ণ বিপর্যয় রোধ করা যায়নি।”এদিকে রুশ প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের দাবি, শুধু তাতারস্তানে নয়, শেষ ২৪ ঘণ্টায় আরও ছয়টি ইউক্রেনীয় ড্রোন গুলি করে নামিয়েছে তারা। একই সঙ্গে ডনেৎস্ক অঞ্চলের মালিনিভকা গ্রাম দখলের কথাও ঘোষণা করেছে রুশ সেনাবাহিনী। তবে এই দাবির বিষয়ে ইউক্রেন কোনও প্রতিক্রিয়া দেয়নি।
ইউক্রেনের পাল্টা দাবি কী? (Russia Ukraine War)
অন্যদিকে ইউক্রেনীয় পক্ষও পাল্টা দাবি জানিয়েছে। কিয়েভের সামরিক সূত্র অনুযায়ী, রাশিয়া গত ২৪ ঘণ্টায় মোট ১৮৩টি ড্রোন এবং ১১টি ক্ষেপণাস্ত্র ছুঁড়েছে ইউক্রেনের বিভিন্ন অঞ্চলে(Russia Ukraine War)। ইউক্রেনের আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা এর মধ্যে ১১১টি ড্রোন এবং ৮টি ক্ষেপণাস্ত্র ধ্বংস করতে সক্ষম হয়েছে বলে জানানো হয়েছে।পোলতাভা অঞ্চলের প্রশাসনিক সূত্রে জানানো হয়েছে, ওই হামলায় কিছু কৃষিক্ষেত্র ক্ষতিগ্রস্ত হলেও কোনও হতাহতের ঘটনা ঘটেনি।

ট্রাম্প এবং পুতিনের টেলিফোনে কথোপকথন (Russia Ukraine War)
উল্লেখযোগ্য ভাবে, এক দিন আগেই মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প (Donald J. Trump) এবং রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের মধ্যে দীর্ঘ টেলিফোনে কথোপকথন হয়(Russia Ukraine War)। সেই আলোচনার পরে ট্রাম্প সাংবাদিকদের জানান, তিনি পুতিনকে যুদ্ধ বন্ধের জন্য চাপ দিয়েছেন।কিন্তু সেই ফোনালাপের ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই ফের হামলা-পাল্টা হামলায় রক্তাক্ত হল রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধক্ষেত্র। বিশ্লেষকদের মতে, এই পরিস্থিতিতে কোনো পক্ষই আপাতত আলোচনার টেবিলে বসতে আগ্রহী নয়। বরং লড়াই আরও গভীর ও ভয়াবহ হয়ে ওঠার আশঙ্কাই ক্রমশ জোরদার হচ্ছে। যুদ্ধ শেষ হওয়ার বদলে যেন প্রতিদিন নতুন অধ্যায় রচিত হচ্ছে এই সংঘর্ষে। আন্তর্জাতিক মহল এখন অপেক্ষায়, আগামী সপ্তাহে রাষ্ট্রপুঞ্জের যে জরুরি বৈঠক আহ্বান করা হয়েছে—সেখানে আদৌ কোনও স্থায়ী শান্তিপথের রূপরেখা উঠে আসে কি না।