ট্রাইব টিভি বাংলা ডিজিটাল: ইরান এবং ইজরায়েলের লাগাতার সংঘাতে অশান্ত পশ্চিম এশিয়া(Iran-Israel conflict)। জেরুসালেম এবং তেল আভিভ লক্ষ্য করে পর পর ক্ষেপণাস্ত্র ছুড়ছে ইরান। পাল্টা ইজরায়েলও জবাব দিচ্ছে। শনিবার এবং রবিবারের মধ্যবর্তী রাতে দুই দেশের বিস্তীর্ণ অংশে ক্ষেপণাস্ত্র বর্ষিত হয়েছে। রবিবার সকালে ফের হামলার ঝাঁজ বাড়িয়েছে দুই দেশ। সূত্রের খবর, ইরানের প্রতিরক্ষামন্ত্রকের সদর দফতর এবং বেশ কয়েকটি পারমাণবিক ঘাঁটি লক্ষ্য করে হামলা চালায় ইজরায়েল। পাল্টা তেল আভিভ লক্ষ্য করে হামলা ইরানেরও। তেহরানের সঙ্গে হাত মিলিয়ে ইজরায়েলের উপর আঘাত হেনেছে হুথিরা। দুই দেশ মিলিয়ে অন্তত ৮৮ জনের মৃত্যু হয়েছে।
ইজরায়েলে পাল্টা হামলা ইরানের (Iran-Israel conflict)
ইজরায়েলের সামরিকবাহিনী জানিয়েছে, শনিবার রাত থেকে রবিবার ভোরের মধ্যে পর পর ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়া হয়েছে ইরান থেকে(Iran-Israel conflict)। তার কোনওটির লক্ষ্য ছিল তেল আভিভ, কোনওটির রাজধানী জেরুসালেম। দুই শহরেই রবিবার ভোর থেকে সাইরেন বাজছে অনবরত। সংবাদ সংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে, তেল আভিভের আকাশে বহু ক্ষেপণাস্ত্র দেখা গিয়েছে রাতভর, ভোরের দিকে যার পরিমাণ আরও বেড়ে যায়। তবে তেল আভিভ এবং জেরুসালেমে বিস্ফোরণের শব্দে কান পাতা দায়।প্রতিরোধ সত্ত্বেও বেশ কিছু ইরানি ক্ষেপণাস্ত্র ইজরায়েলের মাটিতে পড়েছে। একাধিক বাড়ি ভেঙে পড়েছে ক্ষেপণাস্ত্রের আঘাতে। ভেঙে পড়া বাড়ির ধ্বংসস্তূপ সরিয়ে উদ্ধারকাজ চলছে। রাত আড়াইটে নাগাদ (স্থানীয় সময়) ইজরায়েলের সেনার তরফে জনগণকে সতর্ক করে দ্রুত আশ্রয়ে (শেল্টারে) যাওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়। রাতভর হামলায় মৃতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে। মধ্য ইজরায়েলে রাতেই ভেঙে পড়েছে একটি ১০তলা বাড়ি।

ইরানে আক্রমণ ইজরায়েলের (Iran-Israel conflict)
ইজরায়েলি গোলা রাতে গিয়ে পড়েছে ইরানেও(Iran-Israel conflict)। রাজধানী তেহরানের শাহরান তৈলভান্ডার লক্ষ্য করে ক্ষেপণাস্ত্র ছুড়েছিল ইজরায়েল। ছবিতে দেখা গিয়েছে, তেলের ভান্ডার জ্বলছে। কালো ধোঁয়ায় ঢেকেছে রাতের আকাশ। যদিও ইরান জানিয়েছে, শাহরানে ইজরায়েলের ক্ষেপণাস্ত্র পড়লেও পরিস্থিতি আপাতত নিয়ন্ত্রণে। এছাড়া, তেহরানে ইরানের প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের ভবনে একটি ক্ষেপণাস্ত্র এসে পড়ে। তাতেও সামান্য কিছু ক্ষতি হয়েছে বলে দাবি। ইরানের সংবাদ সংস্থা তাসনিম রবিবার এই তথ্য জানিয়েছে।ইরানের রেভলিউশনারি গার্ডের তরফে জানানো হয়েছে, রাতে ক্ষেপণাস্ত্র এবং ড্রোনের মাধ্যমে নিশানা করা হয়েছিল ইজরায়েলের যুদ্ধবিমানের জ্বালানি উৎপাদনকেন্দ্র এবং বিভিন্ন বিদ্যুৎ পরিকাঠামোকে। আগামী দিনে আরও শক্তিশালী হামলার হুঁশিয়ারিও দিয়েছে ইরানের বাহিনী।

আরও পড়ুন-Shubhanshu Shukla: শুভাংশু শুক্লার মহাকাশযাত্রার নতুন দিন ঘোষণা
সংঘাতের সূত্রপাত (Iran-Israel conflict)
আমেরিকার সঙ্গে পরমাণু চুক্তি নিয়ে সমঝোতা না করায় ইরানে হামলা চালিয়েছিল ইজরায়েল(Iran-Israel conflict)। শুক্রবার ইরানের সামরিক ঘাঁটি এবং পারমাণবিক অস্ত্রভাণ্ডার লক্ষ্য করে আকাশপথে হামলা চালায় ইজরায়েল। তার জেরে মৃত্যু হয়েছে ইরান সেনার চিফ অফ স্টাফ মহম্মদ বাঘেরি, রেভোলিউশনারি গার্ডসের কমান্ডার হোসেন সালামি, ইরানের এমার্জেন্সি কমান্ডের কমান্ডার এবং দুই শীর্ষ সেনা আধিকারিকের। এরপরেই পাল্টা হামলা শুরু করে তেহরানও।মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প জানিয়েছেন, ইরানে ইজরায়েলের হামলার বিষয়ে তিনি আগে থেকেই জানতেন এবং এই হামলায় তাঁর সমর্থন রয়েছে। পরমাণু চুক্তি নিয়ে রবিবার ইরানের সঙ্গে আমেরিকার প্রতিনিধির যে বৈঠক হওয়ার কথা ছিল, ইজরায়েলের হামলার পর ইরান তা বাতিল করে দিয়েছে। এরপর থেকে সংঘাত আরও বেড়েছে দুই দেশের মধ্যে।হামলার পর রাষ্ট্রসংঘে ইরানের প্রতিনিধি জানান, অন্তত ৭৮ জনের মৃত্যু হয়েছে ইজরায়েলি হামলায়। আহত তিনশো জনেরও বেশি।

আরও পড়ুন-Plane Crashes: ভিন্ন বিমান দুর্ঘটনা! ২৭ বছরের ব্যবধানে দু’জনের অদ্ভুত বেঁচে ফেরার গল্প
ইজরায়েলি হানার নিন্দা (Iran-Israel conflict)
ইরানের উপর ইজরায়েলি হানার নিন্দা জানিয়ে বিবৃতি দিয়েছে ৯ দেশের মিলিত মঞ্চ সাংহাই কোঅপারেশন অর্গানাইজেশন (এসসিও)। এই আন্তর্জাতিক মঞ্চের সদস্য রাষ্ট্রগুলির মধ্যে ভারত এবং ইরান উভয়েই রয়েছে(Iran-Israel conflict)। তবে এসসিও-র বিবৃতির থেকে দূরত্ব রেখে পৃথক ভাবে একটি বিবৃতি প্রকাশ করেছে নয়াদিল্লি। ভারতীয় বিদেশ মন্ত্রক জানিয়ে দিয়েছে, এসসিও-র বিবৃতি নিয়ে কোনও আলোচনায় ভারত যোগ দেয়নি। বস্তুত, ভারতের সাত বাক্যের ওই বিবৃতিতে ইজরায়েলি হানার নিন্দা করে কোনও মন্তব্য করা হয়নি। এসসিও-র সদস্য রাষ্ট্রগুলির মধ্যে ভারত, ইরান ছাড়াও রয়েছে চিন, কাজাস্তান, কিরগিজস্তান, রাশিয়া, পাকিস্তান, তাজিকিস্তান এবং উজবেকিস্তান।
