ট্রাইব টিভি বাংলা ডিজিটাল: ইজরায়েলের সঙ্গে যুদ্ধে শীর্ষ সামরিক নেতৃত্ব হারানোর পর নতুন করে গোয়েন্দা পরিকাঠামো সাজাতে উদ্যোগী হল ইরান (Iran Israel Conflict)। নিহত গোয়েন্দাপ্রধান মহম্মদ কাজেমির জায়গায় দেশের নতুন গোয়েন্দা প্রধান হিসাবে নিযুক্ত হলেন ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মাজিদ খাদেমি। জাতীয় নিরাপত্তা ও তথ্য সুরক্ষায় বহু বছরের অভিজ্ঞতা সম্পন্ন মাজিদ খাদেমিকে এই অগ্নিপরীক্ষার সময় নেতৃত্বে আনা হয়েছে বলে মনে করছে আন্তর্জাতিক কূটনৈতিক মহল।
এক ঝটকায় নেতৃত্বহীন হয়ে পড়ে ইরান (Iran Israel Conflict)
গত ১৫ জুন ইজরায়েলের লক্ষ্যভেদী ক্ষেপণাস্ত্র হানায় মৃত্যু হয় ইরানের চারজন শীর্ষ সামরিক অফিসারের— গোয়েন্দাপ্রধান মহম্মদ কাজেমি, আইআরজিসি-র প্রধান জেনারেল মহম্মদ হোসেন বাগেরি, প্রধান কমান্ডার জেনারেল হোসেন সালামি ও ডেপুটি কমান্ডার জেনারেল গোলাম আলি রশিদের। এই ঘটনার পর গোটা দেশের সামরিক এবং গোয়েন্দা নেতৃত্বে এক বড় ধাক্কা লাগে।
কে এই মাজিদ খাদেমি? (Iran Israel Conflict)
ইরান ইন্টারন্যাশনালের প্রতিবেদন অনুযায়ী, ব্রিগেডিয়ার মাজিদ খাদেমি দেশের প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের গোয়েন্দা সুরক্ষা সংস্থার প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। ২০১৮-২০২২ পর্যন্ত তিনি তথ্য সুরক্ষা বিভাগের প্রধান ছিলেন (Iran Israel Conflict)। তাঁর বিশেষত্ব হল ‘সিস্টেমিক গোয়েন্দা পুনর্গঠন ও সাইবার সিকিউরিটি’। ফলে, এই সংকটময় সময়ে তাঁকে সামনে আনা ইরানের একটি কৌশলগত পদক্ষেপ বলেই মনে করছে বিশেষজ্ঞরা।

যুদ্ধের অষ্টম দিনে আরও রক্তপাত (Iran Israel Conflict)
শুক্রবার যুদ্ধ অষ্টম দিনে প্রবেশ করেছে। ইজরায়েলের তরফে লাগাতার ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় একাধিক ইরানি তেল ভাণ্ডার, সেনাঘাঁটি ধ্বংস হয়েছে (Iran Israel Conflict)। বহু উচ্চপদস্থ সেনা-কর্তাও প্রাণ হারিয়েছেন। পাল্টা হামলায় ইরানও ড্রোন ও ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র দিয়ে ইজরায়েলের বিভিন্ন স্ট্র্যাটেজিক স্থাপনায় আঘাত হানছে। ‘আয়রন ড্রোম’ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থাকে অনেক জায়গায় অতিক্রম করতেও সক্ষম হয়েছে ইরানি অস্ত্র।
কূটনীতিতে সক্রিয় ইউরোপীয় ইউনিয়ন (Iran Israel Conflict)
এই ক্রমবর্ধমান উত্তেজনার মধ্যেই শুক্রবার জেনেভায় গুরুত্বপূর্ণ বৈঠকে বসতে চলেছেন ইউরোপীয় ইউনিয়নের শীর্ষ কূটনীতিক কাজা কাল্লাস এবং ব্রিটেন, ফ্রান্স, জার্মানির প্রতিনিধি দল(Iran Israel Conflict)। তাঁদের সঙ্গে ইরানের বিদেশমন্ত্রী সৈয়দ আব্বাস আরাগচির (Seyed Abbas Araghchi) আলোচনার সম্ভাবনা রয়েছে। এই বৈঠককে ঘিরে আন্তর্জাতিক কূটনীতিক মহলের নজর, কারণ এটিই হতে পারে ইরানকে যুদ্ধবিরতির আলোচনায় টানার প্রথম বাস্তব প্রয়াস। ইউরোপীয় ইউনিয়ন চাইছে যুদ্ধবিরতি ও পরমাণু কর্মসূচি নিয়ে নতুন আলোচনার মাধ্যমে উত্তেজনা কমাতে।

ট্রাম্পের হুঁশিয়ারি ও আমেরিকার সম্ভাব্য যোগ (Iran Israel Conflict)
আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প আগেই হুঁশিয়ারি দিয়েছেন, “ইরান যদি যুদ্ধ চালিয়ে যায়, তবে ভয়াবহ পরিণামের জন্য প্রস্তুত থাকুক(Iran Israel Conflict)।” মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থার রিপোর্ট অনুযায়ী, আমেরিকা পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছে এবং প্রয়োজন হলে সামরিকভাবে সরাসরি হস্তক্ষেপ করতে পারে। যদিও এখনও পর্যন্ত সরাসরি যুদ্ধে জড়ায়নি ওয়াশিংটন।
যুদ্ধ না কূটনীতি, কোন পথে ইরান? (Iran Israel Conflict)
ইরানের গোয়েন্দা নেতৃত্বে পরিবর্তন, সামরিক শক্তি পুনর্গঠন এবং একই সঙ্গে কূটনৈতিক বৈঠকে অংশগ্রহণের ইঙ্গিত—সব মিলিয়ে দুই সম্ভাবনা খোলা রয়েছে: যুদ্ধ আরও ভয়াবহ রূপ নিতে পারে, আবার এটাই হতে পারে আলোচনার মাধ্যমে সংকট সমাধানের সূচনা। বিশ্বজুড়ে নজর এখন জেনেভায়—ইউরোপীয় কূটনীতি কি শান্তির সম্ভাবনা জাগাতে পারবে, না কি এই যুদ্ধে আরও বিস্তৃত ভূ-রাজনৈতিক আগুন ছড়িয়ে পড়বে? উত্তর দেবে পরবর্তী কয়েকটি দিন।