ট্রাইব টিভি বাংলা ডিজিটাল: গত পাঁচ মাসের মধ্যে ভোটমুখি বিহার রাজ্যে পঞ্চমবারের মতো সফরে এসেছেন মোদি (Modi attack RJD-Congress in Bihar)। প্রধানমন্ত্রী মোদি জনসাধারণের কাছে আবেদন করেছেন যারা বিহারে ‘জঙ্গলরাজ’ এনেছে এবং রাজ্য লুট করেছে তাদের ভোট না দেওয়ার জন্য।
পরিবারতন্ত্র নিয়ে তোপ মোদির, সিওয়ানে ১০ হাজার কোটি টাকার প্রকল্প উদ্বোধন (Modi attack RJD-Congress in Bihar)
বিহারের সিওয়ানে এক নির্বাচনী সভায় পরিবারতন্ত্র নিয়ে তীব্র আক্রমণ শানালেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী (Modi attack RJD-Congress in Bihar)। তিনি বলেন, যারা শুধু ক্ষমতার জন্য লালায়িত, তারা নিজেদের পরিবার ছাড়া কিছুই দেখে না। আর বিজেপির সরকার কাজ করে সবার উন্নয়নের জন্য।
শুক্রবার সিওয়ানে এক জনসভা থেকে প্রধানমন্ত্রী প্রায় ১০ হাজার কোটি টাকার উন্নয়নমূলক প্রকল্প দেশের উদ্দেশে উৎসর্গ করেন। একইসঙ্গে বিহারের মানুষের কাছে আবেদন করেন, তারা যেন সেইসব দলকে ভোট না দেন যারা একসময় রাজ্যে ‘জঙ্গল রাজ’ কায়েম করেছিল এবং বিহারকে লুটে নিয়েছিল।
‘ওরা ভাবে পরিবার, আমরা ভাবি দেশ’ (Modi attack RJD-Congress in Bihar)
প্রধানমন্ত্রী বলেন, “আমরা বলি ‘সবকা সাথ, সবকা বিকাশ’ (Modi attack RJD-Congress in Bihar)। কিন্তু আরজেডি আর কংগ্রেস বলে ‘পরিবারের সাথ, পরিবারের বিকাশ’। কংগ্রেসের লাইসেন্স রাজ ভারতে দারিদ্র্যের প্রধান কারণ। নেতাদের পরিবার ধনী হয়েছে, কিন্তু সাধারণ মানুষ গরিবই থেকে গিয়েছে।”
তিনি বলেন, এর সবচেয়ে বেশি ভুক্তভোগী হয়েছে দলিত আর পিছিয়ে পড়া শ্রেণির মানুষ।
মোদীর এই মন্তব্যকে রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন, আরজেডি নেতা তেজস্বী যাদবের ‘নেপোটিজম’ সংক্রান্ত অভিযোগকে পাল্টা চ্যালেঞ্জ জানানো। তেজস্বী অভিযোগ করেছিলেন, বিহারে এনডিএ নেতাদের আত্মীয়স্বজনদের বিভিন্ন কমিশনে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।
৫ মাসে ৫ বার বিহারে মোদি
গত ৫ মাসে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর এটা পঞ্চম সফর বিহারে। বিজেপি-জেডিইউ জোট বিহারে ক্ষমতা ধরে রাখতে মরিয়া। আরজেডির নেতৃত্বাধীন মহাগঠবন্ধনের সঙ্গে এই লড়াইটা সম্মুখসমর। সিওয়ান, গোপালগঞ্জ, ছপরা — এই অঞ্চলগুলি আরজেডির শক্ত ঘাঁটি হিসেবেই পরিচিত।
‘বাবাসাহেবকে অপমানের ক্ষমা করবে না বিহার’
সম্প্রতি লালু প্রসাদ যাদবের বিরুদ্ধে সংবিধান প্রণেতা ডঃ বি আর আম্বেদকরের ছবিকে অপমানের অভিযোগ ওঠে। সেই প্রসঙ্গ টেনেই প্রধানমন্ত্রী বলেন, “আরজেডি বাবাসাহেব আম্বেদকরকে অপমান করেছে। বিহারের মানুষ এই অপমান ভুলবে না।” মোদীর এই বক্তব্যকে দলিত ভোট টানার কৌশল হিসেবেই দেখা হচ্ছে। বিহারে প্রায় ২০ শতাংশ জনসংখ্যা দলিত সম্প্রদায়ভুক্ত।
‘পালিয়ে যাওয়ার রাজ্য’ বানিয়েছে আরজেডি-কংগ্রেস
আরজেডি-কংগ্রেসকে ‘বিহারবিরোধী’ আর ‘বিনিয়োগবিরোধী’ বলে তোপ দাগেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, “এরা এত লুট করেছে, যে দারিদ্র্য হয়ে উঠেছে বিহারের দুর্ভাগ্য। ওরা যতবার উন্নয়নের কথা বলেছে, ততবার দোকানে তালা পড়েছে, ব্যবসা বন্ধ হয়েছে, কল-কারখানা উঠে গিয়েছে। এরা পরিকাঠামোর দুর্দশা, মাফিয়া রাজ, গুণ্ডা রাজ আর দুর্নীতির পৃষ্ঠপোষক।”
আরও পড়ুন: AIR INDIA Flight Cancelled: একাধিক উড়ান বাতিল করল এয়ার ইন্ডিয়া, নেপথ্যে কোন কারণ?
‘জঙ্গল রাজ’ ফিরিয়ে আনতে চায় ওরা — হুঁশিয়ারি মোদীর
বিহার থেকে দেশের মধ্যে সবচেয়ে বেশি মানুষ অন্য রাজ্যে কাজ করতে যায় — এই প্রসঙ্গও সভায় তোলেন মোদী। তাঁর দাবি, এর জন্য দায়ী আরজেডি-কংগ্রেসের আগের সরকারগুলো।
তিনি বলেন, “কংগ্রেস আর আরজেডিই দারিদ্র্য আর শ্রমিকদের ভিটে ছেড়ে বাইরে যাওয়ার জন্য দায়ী। ‘হাত’ আর ‘লণ্ঠন’ একসাথে বিহারের গর্বে আঘাত করেছে। যারা ‘জঙ্গল রাজ’ এনেছিল বিহারে, তারা আবার সেই দিন ফিরিয়ে আনতে চায়। আপনাদের সতর্ক থাকতে হবে, যাতে আপনার সন্তানের ভবিষ্যৎ অন্ধকারে না ডুবে যায়।”