ট্রাইব টিভি বাংলা ডিজিটাল: শুধু আকাশপথে নয়, জলপথেও ইরানে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছে আমেরিকা(US)। জলের ভিতরে সাবমেরিন থেকে ছোড়া হয়েছে ক্ষেপণাস্ত্র। এমনটাই দাবি করছে মার্কিন সংবাদমাধ্যম নিউ ইয়র্ক টাইম্স। নাম প্রকাশ্যে অনিচ্ছুক সরকারি কর্তাদের উদ্ধৃতও করা হচ্ছে। দাবি, ইরানের তিনটি পরমাণুকেন্দ্রের অন্তত দু’টিতে সমুদ্র থেকে হামলা চালিয়েছে আমেরিকার নৌবাহিনী। এছাড়া ফরডোর মতো পরমাণুকেন্দ্রে বি২ বম্বারের সাহায্যে ফেলা হয়েছে বাঙ্কার বাস্টার বোমা।
জলপথে ইরানে হামলা আমেরিকার (US)
মার্কিন সরকারি আধিকারিককে উদ্ধৃত করে আমেরিকার সংবাদমাধ্যম নিউ ইয়র্ক টাইম্স জানিয়েছে, ছ’টি বি২ বম্বার থেকে অন্তত এক ডজন বাঙ্কার বাস্টার বোমা ফেলা হয়েছে ইরানের ফরডো পরমাণুকেন্দ্রে(US)। মোট ৩০ হাজার পাউন্ডের বাঙ্কার বাস্টার পড়েছে ফরডোয়। এছাড়া, মার্কিন নৌসেনার সাবমেরিন থেকে নাতান্জ এবং ইসফাহান পরমাণুকেন্দ্র লক্ষ্য করে ছোড়া হয়েছে ৩০টি ক্রুজ মিসাইল। নাতান্জে আকাশ থেকেও বোমা পড়েছে বলে দাবি। বলা হচ্ছে, নাতানজের পরমাণুঘাঁটিতে বি২ বম্বার ব্যবহার করে মোট দু’টি বাঙ্কার বাস্টার বোমা ফেলা হয়েছে। এরপরেই মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প জানিয়েছেন, ‘ফরডো নিশ্চিহ্ন।’ কিন্তু কতটা ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে, ইরান তা স্পষ্ট করেনি।

ইরানে আকাশপথে হামলা (US)
শনিবার (স্থানীয় সময়) রাতে ইরানের অন্তত তিনটি পারমাণবিক কেন্দ্রে হামলা চালায় আমেরিকা। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প জানিয়েছেন, আমেরিকার সেনাবাহিনী ইরানের ফরডো, নাতানজ ও ইসফাহানে অবস্থিত তিনটি পারমাণবিক কেন্দ্রে ‘সফল ভাবে’ হামলা চালিয়েছে(US)। আন্তর্জাতিক আইনের তোয়াক্কা না করে ইরানে আঘাত হানার পর মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বললেন, ‘এবার শান্তির সময়।’ সেই সঙ্গে ইরানের উদ্দেশে তাঁর প্রচ্ছন্ন হুঁশিয়ারি, ‘এবার শান্তির পথে না ফিরলে হামলা আরও প্রাণঘাতী হবে।’ইরানের উদ্দেশে ট্রাম্পের বার্তা, ‘এবার ইরানকে দ্রুত শান্তিস্থাপন করতে হবে, নাহলে বিপর্যয় ঘটবে। গত কয়েক দিনে যে বিপর্যয় বিশ্ব দেখেছে, সেটার চেয়ে অনেক বেশি ভয়ংকর হবে ওই বিপর্যয়।’
আরও পড়ুন-Iran: প্রত্যাখ্যাত শুরু! আমেরিকার হামলার পরেই ইজরায়েলে ক্ষেপণাস্ত্র বর্ষণ ইরানের
ইরানের পরমাণুকেন্দ্রে তৎপরতা (US)
আমেরিকার হামলার ঠিক আগেই কিছু তৎপরতা লক্ষ করা গিয়েছিল ইরানের ফোরডোর ওই পরমাণুকেন্দ্রে(US)। প্রকাশ্যে এসেছে তারই উপগ্রহচিত্র।স্যাটেলাইট সংস্থা ‘ম্যাকসার’-এর এক বিশেষজ্ঞকে উদ্ধৃত করে ‘দ্য ওয়াশিংটন পোস্ট’ জানিয়েছে, আমেরিকার হামলার দু’দিন আগেই কিছু অস্বাভাবিক তৎপরতা লক্ষ করা গিয়েছিল ফোরডোর পরমাণুকেন্দ্রে। পরমাণুকেন্দ্রটির যে জায়গায় সামরিক ঘাঁটি রয়েছে, সেই রাস্তায় ১৬টি মালবাহী ট্রাক দেখা গিয়েছিল গত ১৯ জুন।পরের দিনের উপগ্রহচিত্রে দেখা যাচ্ছে, বেশ কয়েকটি ট্রাক উত্তর-পশ্চিম দিকে আরও এক কিলোমিটার মতো সরে গিয়েছে। এর সঙ্গে আরও কয়েকটি ট্রাক এবং বুলডোজার দেখা গিয়েছে পরমাণুকেন্দ্রে ঢোকার মুখে।আর উপগ্রহচিত্র প্রকাশ্যে আসার পরেই জল্পনা তৈরি হয়েছে, আমেরিকা হামলা চালাতে পারে ভেবেই কি পরমাণু প্রকল্পের জন্য জরুরি সরঞ্জাম সরানোর প্রস্তুতি নিচ্ছিল ইরান?

আরও পড়ুন-British Airways: আমেরিকার হামলায় বন্ধ ইরানের আকাশসীমা; চেন্নাইয়ে ফিরল ব্রিটিশ এয়ারওয়েজের বিমান
রাষ্ট্রসংঘের কঠোর প্রতিক্রিয়া (US)
ইরানে মার্কিন হামলার পরই উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন রাষ্ট্রসংঘের মহাসচিব অ্যান্তোনিও গুতেরেস। রাষ্ট্রসংঘের সমস্ত সদস্যকেই উত্তেজনা প্রশমন করে শান্তির পক্ষে বার্তা দিয়েছেন তিনি(US)।এক্স হ্যান্ডলে তিনি লিখেছেন, ‘আজ ইরানের বিরুদ্ধে মার্কিন বলপ্রয়োগে আমি গভীরভাবে উদ্বিগ্ন। ইতিমধ্যেই প্রান্তিক অবস্থানে থাকা এক অঞ্চল, যা আন্তর্জাতিক শান্তি এবং নিরাপত্তার জন্য বিপজ্জনক হয়ে আছে, সেখানে সরাসরি ভয়াবহ উত্তেজনা সৃষ্টি করা হল। এবার আশঙ্কা হচ্ছে, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাবে।’ সেই সঙ্গেই শান্তির বার্তা দিয়ে তাঁর দাবি, ‘এই বিপজ্জনক সময়ে, বিশৃঙ্খলার ঘূর্ণিঝড় এড়ানো অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। যুদ্ধ কোনও সমাধান নয়। সামনের দিকে এগিয়ে যাওয়ার একমাত্র পথ হল কূটনীতি। একমাত্র আশা হল শান্তি।’
