ট্রাইব টিভি বাংলা ডিজিটাল: ইরান-ইজরায়েল চলমান সংঘর্ষের মাঝে যুদ্ধবিরতি নিয়ে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ঘোষণা ঘিরে তৈরি হল তীব্র বিভ্রান্তি(Iran Israel Ceasefire)। সোমবার গভীর রাতে এক সমাজমাধ্যম পোস্টে ট্রাম্প দাবি করেন, ইরান ও ইজরায়েল যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হয়েছে এবং আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে দুই দেশের মধ্যে টানা ১২ দিনের যুদ্ধের অবসান ঘটবে। তবে তাঁর এই দাবিকে দ্রুত উড়িয়ে দেয় তেহরান। ইরানের বিদেশমন্ত্রী আব্বাস আরাগচি (Seyed Abbas Araghchi) স্পষ্ট জানান, কোনও ধরনের যুদ্ধবিরতির সিদ্ধান্ত বা সমঝোতা হয়নি।
ট্রাম্পের মন্তব্য ঘিরে বিভ্রান্তি (Iran Israel Ceasefire)
এই প্রেক্ষিতে মঙ্গলবার সকালে ফের একটি পোস্টে ট্রাম্প বলেন, “ইরান ও ইজরায়েল প্রায় একসঙ্গেই আমার কাছে আসে। তারা শান্তি চায়(Iran Israel Ceasefire)। আমি জানতাম, এটাই সঠিক সময়। বিশ্ব এবং পশ্চিম এশিয়া এখন জয়ী। শান্তি ও সমৃদ্ধি আসবে দুই দেশেই।” তবে তাঁর বার্তায় ছিল সতর্কবার্তাও—“ধর্ম ও সত্যের পথ থেকে বিচ্যুত হলে তারা অনেক কিছু হারাতেও পারে।”তেহরান এই মন্তব্যকেও দ্ব্যর্থহীনভাবে প্রত্যাখ্যান করেছে। ইরানের বিদেশমন্ত্রী আরাগচি মঙ্গলবার সকালে (ভারতীয় সময় সকাল ৬টা ১৬ মিনিটে) তাঁর বক্তব্যে বলেন, “এই মুহূর্তে কোনও যুদ্ধবিরতি হয়নি। চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবে সামরিক বাহিনী। যদিও স্থানীয় সময় ভোর ৪টার পর থেকে ইজ়রায়েল হামলা বন্ধ রাখলে ইরানও পাল্টা হামলায় আগ্রহী নয়।”
যুদ্ধবিরতির ঘোষণা অস্বীকার ইরান বা ইজরায়েলের (Iran Israel Ceasefire)
ট্রাম্পের আগের পোস্ট অনুযায়ী, সোমবার গভীর রাতে তিনি যুদ্ধবিরতির ঘোষণা দেন, যেখানে বলা হয়েছিল, “ইরান প্রথমে যুদ্ধবিরতি শুরু করবে, তার ১২ ঘণ্টা পর ইজরায়েল অনুসরণ করবে(Iran Israel Ceasefire)। ২৪ ঘণ্টার মধ্যে সংঘর্ষ সম্পূর্ণ বন্ধ হবে।” যদিও এই ঘোষণার পর ইরান বা ইজরায়েল— কোনও পক্ষই তা স্বীকার করেনি বা আনুষ্ঠানিক বিবৃতি দেয়নি। ইরানি সংবাদমাধ্যমগুলি ট্রাম্পের দাবিকে “ভিত্তিহীন ও অসত্য” বলে দাবি করে। তাঁদের মতে, এমন কোনো বৈঠক বা সমঝোতা হয়নি, যেখানে যুদ্ধবিরতির বিষয়ে দুই পক্ষ সম্মত হয়েছে। বরং এই ঘোষণাকে “রাজনৈতিক চমক” বলেই মনে করছে তেহরান।

কৌশলগত চাপ তৈরির চেষ্টা (Iran Israel Ceasefire)
পরিস্থিতি আরও জটিল হয় ট্রাম্পের পরবর্তী মন্তব্যে, যেখানে তিনি দুই দেশের “শান্তির আকাঙ্ক্ষা” এবং “ধর্ম ও সত্য” প্রসঙ্গে মন্তব্য করেন(Iran Israel Ceasefire)। এই পোস্টকে পর্যবেক্ষকরা দেখছেন কৌশলগত চাপ তৈরির চেষ্টা হিসেবে, বিশেষ করে এমন সময়ে যখন পশ্চিম এশিয়া উত্তপ্ত এবং আন্তর্জাতিক মহল যুদ্ধবিরতির জন্য চাপ বাড়াচ্ছে।

বিশ্লেষকদের মতে, যদিও ট্রাম্প শান্তির কথা বলছেন, বাস্তব চিত্র বলছে ভিন্ন কথা। কারণ সংঘর্ষের অবসান নিয়ে কোনও পক্ষই আনুষ্ঠানিকভাবে এখনও সম্মত হয়নি। তেহরান কৌশলগতভাবে ইঙ্গিত দিলেও, যুদ্ধের বাস্তব রূপরেখা নির্ভর করছে সামরিক সিদ্ধান্তের উপর।সব মিলিয়ে, ট্রাম্পের ঘোষণায় কিছুটা ‘ডিপ্লোম্যাটিক থিয়েটার’ থাকলেও, তাতে বাস্তব যুদ্ধক্ষেত্রের পরিস্থিতি এখনই বদলাচ্ছে না। পশ্চিম এশিয়া আপাতত এক অনিশ্চিত যুদ্ধবিরতির আশায় অপেক্ষা করছে।