ট্রাইব টিভি বাংলা ডিজিটাল: শুভাংশু শুক্লা (Modi interact with Shubhanshu Shukla) ৪১ বছরের মধ্যে দ্বিতীয় ভারতীয় যিনি মহাকাশে গেছেন এবং ১৯৮৪ সালে রাকেশ শর্মার আট দিনের অবস্থানের পর তিনিই প্রথম।
ইতিহাস গড়লেন শুভাংশু শুক্লা (Modi interact with Shubhanshu Shukla)
শনিবার প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী কথা বললেন ভারতীয় বায়ুসেনার গ্রুপ ক্যাপ্টেন শুভাংশু শুক্লার সঙ্গে (Modi interact with Shubhanshu Shukla)। সম্প্রতি তিনিই ইতিহাস তৈরি করে প্রথম ভারতীয় হিসেবে আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশনে (ISS) প্রবেশ করেছেন। প্রধানমন্ত্রী বলেন, “আজ আপনি মাতৃভূমি থেকে অনেক দূরে, কিন্তু সমস্ত ভারতবাসীর হৃদয়ের সবচেয়ে কাছের মানুষ আপনি… আপনার নামেই ‘শুভ’ রয়েছে এবং আপনার এই যাত্রা নতুন যুগের শুভারম্ভ।”
জবাবে শুক্লা বলেন, “এটা শুধু আমার ব্যক্তিগত যাত্রা নয়, এটা আমাদের দেশের যাত্রাও। আমি স্পঞ্জের মতো করে নতুন অভিজ্ঞতাগুলো শুষে নিচ্ছি।” শুভাংশু শুক্লা ৪১ বছর পর মহাকাশে যাওয়া দ্বিতীয় ভারতীয়। এর আগে ১৯৮৪ সালে রাকেশ শর্মা আটদিন মহাকাশে কাটিয়েছিলেন।
মহাকাশ থেকে ভারতের বিশালতা (Modi interact with Shubhanshu Shukla)
প্রধানমন্ত্রী জানতে চান, তিনি মহাকাশ থেকে কী দেখছেন (Modi interact with Shubhanshu Shukla)। শুক্লা জানান, “কিছুক্ষণ আগেই আমি জানালা দিয়ে বাইরে তাকিয়ে দেখছিলাম, আমরা তখন হাওয়াই দ্বীপপুঞ্জের ওপর দিয়ে উড়ছিলাম। আমরা দিনে ১৬ বার সূর্যোদয় ও সূর্যাস্ত দেখি। আমাদের দেশ খুব দ্রুত এগিয়ে চলেছে।”
আরও পড়ুন: Voting Via Mobile App in Bihar: বিহারে মোবাইল ফোনে ভোট দেওয়ার সুযোগ, দেশের প্রথম রাজ্য হতে চলেছে!
তিনি বলেন, “এখানে সবকিছুই আলাদা। আমরা এক বছর ধরে প্রশিক্ষণ নিয়েছি, বিভিন্ন সিস্টেম শিখেছি। কিন্তু এখানে এসে দেখছি সব বদলে গেছে। মহাকাশে ওজনবিহীন অবস্থা, তাই ছোটখাটো জিনিসও আলাদা। ঘুমানোও এখানে একটা চ্যালেঞ্জ। এই পরিবেশের সঙ্গে মানিয়ে নিতে সময় লাগে।”
“মহাকাশ থেকে পৃথিবীকে এক ও সম্পূর্ণ মনে হয়” (Modi interact with Shubhanshu Shukla)
প্রধানমন্ত্রী জানতে চান, মহাকাশে পৌঁছে তাঁর প্রথম অনুভূতি কী ছিল। শুক্লা বলেন, “প্রথম দৃশ্য ছিল পৃথিবীর। বাইরে থেকে পৃথিবীকে দেখে মনে হয়েছিল, পৃথিবী একটাই। কোনো সীমান্ত চোখে পড়ে না। প্রথমবার ভারতকে দেখার সময় মনে হয়েছিল, ভারত সত্যিই বিশাল, মানচিত্রে যা দেখি তার থেকেও অনেক বড়। বাইরে থেকে দেখলে মনে হয়, কোনো দেশ নেই, কোনো রাজ্য নেই, কোনো সীমা নেই। আমরা সবাই এক মানবজাতির অংশ, আর পৃথিবী আমাদের একটি মাত্র ঘর।”
স্পেস স্টেশনে পৌঁছে আনুষ্ঠানিক স্বাগত (Modi interact with Shubhanshu Shukla)
বৃহস্পতিবার, পৃথিবীকে ঘিরে ২৮ ঘণ্টার যাত্রার পর শুভাংশু শুক্লা ও তিন জন আন্তর্জাতিক সহযাত্রী আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশনে পৌঁছান। তাঁরা মহাকাশযানে প্রবেশের পর আলিঙ্গন ও করমর্দনের মাধ্যমে তাদের স্বাগত জানানো হয়। “আপনাদের ভালোবাসা ও আশীর্বাদে আমি আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশনে পৌঁছেছি। এখানে দাঁড়ানো সহজ মনে হলেও, মাথা একটু ভার লাগছে, কিছুটা অসুবিধাও হচ্ছে, তবে সেগুলো তুচ্ছ বিষয়,” ISS-এ দেওয়া এক সংক্ষিপ্ত বক্তব্যে বলেন শুক্লা।
Dragon মহাকাশযানের যাত্রা
নাসার ভিডিও লাইভে দেখা গেছে, ‘গ্রেস’ নামের ড্রাগন মহাকাশযান থেকে চারজন ক্রু সদস্য বেরিয়ে আসছেন। বৃহস্পতিবার ভারতীয় সময় বিকেল ৪টা ১৫ মিনিটে ডকিং সম্পূর্ণ হয়। নাসার কেনেডি স্পেস সেন্টার থেকে বুধবার দুপুর ১২টা ১ মিনিটে স্পেসএক্স-এর ফ্যালকন রকেট এই মহাকাশযানটি উৎক্ষেপণ করে।
Expedition 73-র অন্তর্ভুক্ত সাত সদস্যের ISS ক্রু এই চার নতুন অতিথিকে স্বাগত জানান। অ্যাক্সিয়ম-৪ মিশনের কমান্ডার পেগি হুইটসন, প্রবীণ মহাকাশচারী হিসেবে প্রথম প্রবেশ করেন। এরপর প্রবেশ করেন শুভাংশু শুক্লা, পোল্যান্ডের ইঞ্জিনিয়ার ও ইউরোপিয়ান স্পেস এজেন্সির মহাকাশচারী স্লাভোস উজানস্কি-উইসনিয়েস্কি এবং হাঙ্গেরির যান্ত্রিক ইঞ্জিনিয়ার টিবর কাপু।
পেগি হুইটসন তিনজন নতুন মহাকাশচারীকে স্পেশাল অ্যাস্ট্রোনট পিন দিয়ে সম্মান জানান। শুক্লা বলেন, “আমি অ্যাস্ট্রোনট ৬৩৪। এখানে আসতে পেরে আমি গর্বিত।”
মহাকাশে বৈজ্ঞানিক গবেষণা ও পৃথিবীর সঙ্গে যোগাযোগ
শুভাংশু শুক্লা জানান, আগামী ১৪ দিন তিনি ও তাঁর সহযাত্রীরা বিভিন্ন বৈজ্ঞানিক পরীক্ষা চালাবেন এবং পৃথিবীর সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রাখবেন। তিনি বলেন, “এটিও ভারতের মহাকাশযাত্রার একটি ধাপ। আমি আপনাদের সঙ্গে কথা বলে যাব। চলুন সবাই মিলে এই যাত্রাকে রোমাঞ্চকর করে তুলি। আমি তিরঙ্গা নিয়ে এসেছি এবং আপনাদের সবাইকেই আমার সঙ্গে নিয়ে এসেছি। পরবর্তী ১৪ দিন হবে দারুণ উত্তেজনাপূর্ণ।”
মহাকাশযাত্রার সময় শুক্লা ভিডিওলিঙ্কে জানান, তিনি এখন শিশুদের মতো করে শিখছেন কীভাবে মাইক্রোগ্র্যাভিটিতে বাস করতে হয়। শূন্যতার মধ্যে ভেসে থাকার অভিজ্ঞতা তাঁর কাছে অসাধারণ।