ট্রাইব টিভি বাংলা ডিজিটাল: মার্কিন কংগ্রেসে কর ও ব্যয় সংকোচনের লক্ষ্যে পেশ হওয়া অর্থবিল, যেটিকে ডোনাল্ড ট্রাম্প ‘বড় সুন্দর বিল’ বলে উল্লেখ করেছেন, সেটিকে ঘিরে শুরু হয়েছে রাজনৈতিক দ্বন্দ্ব (Trump VS Musk)। বিলটির তীব্র বিরোধিতা করে টেসলা ও স্পেসএক্সের কর্ণধার ইলন মাস্ক সরাসরি ঘোষণা করেছেন, “বিলটি পাশ হলে পরের দিনই ‘আমেরিকা পার্টি’ গঠন করব।” এই ঘোষণায় আমেরিকার রাজনৈতিক অঙ্গনে আলোড়ন তৈরি হয়েছে।
মাস্কের অভিযোগ, বিলটি ‘খ্যাপাটে’, বাড়াবে ঋণের বোঝা (Trump VS Musk)
মাস্কের দাবি, এই বিল বাস্তবায়িত হলে একদিকে যেমন লক্ষাধিক মানুষের চাকরি হারানোর আশঙ্কা রয়েছে, অন্যদিকে আমেরিকার সরকারি ঋণের পরিমাণ পৌঁছাতে পারে রেকর্ড পাঁচ ট্রিলিয়ন ডলারে (Trump VS Musk)। তিনি বলেন, “ডেমোক্র্যাট এবং রিপাবলিকানদের বাইরে একটি তৃতীয় শক্তির প্রয়োজন যারা সাধারণ মানুষের কথা ভাববে।” এই বিল নিয়ে মাস্ক আগেও সমাজমাধ্যমে সরব হয়েছিলেন, কিন্তু এবার তাঁর সুর আরও কড়া। নতুন রাজনৈতিক দল গঠনের ঘোষণা দিয়েই তিনি বুঝিয়ে দিয়েছেন, তাঁর মতে এই বিল ‘রাজনৈতিক আত্মহত্যা’র সমান।
ট্রাম্পের পাল্টা,“ভর্তুকি ছাড়া মাস্ক কিছুই নয়” (Trump VS Musk)
মাস্কের এই ঘোষণার পরেই ট্রাম্প সরাসরি আক্রমণ করেন তাঁকে (Trump VS Musk)। সমাজমাধ্যমে এক পোস্টে ট্রাম্প লেখেন, “ইলন মাস্ক (Elon Musk) সরকারি ভর্তুকির টাকাতেই দাঁড়িয়ে আছে। এই সাহায্য না পেলে সে টেসলা চালাত না, রকেট ওড়াত না, বরং দক্ষিণ আফ্রিকায় ফিরে যেত।” ট্রাম্প আরও বলেন, “ইলেকট্রিক গাড়ি ঠিক আছে, কিন্তু আমেরিকানদের তা কিনতে বাধ্য করা উচিত নয়। এমন এক খরচসাপেক্ষ প্রযুক্তিকে সরকারি টাকায় পুষে রাখা দেশ ও জনগণের পক্ষে ক্ষতিকর।”

পুরনো সম্পর্কের ভাঙনেই আজকের সংঘাত? (Trump VS Musk)
প্রসঙ্গত, ট্রাম্প দ্বিতীয়বার প্রেসিডেন্ট হওয়ার পর মাস্ককে ‘ডিওজিই’ (Department of Government Efficiency)-এর প্রধান করেছিলেন (Trump VS Musk)। তখন তাঁদের মধ্যে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক থাকলেও, এই বিতর্কিত বিল এবং রাজনৈতিক অবস্থানকে কেন্দ্র করে দুই প্রভাবশালী ব্যক্তিত্বের সম্পর্কে চির ধরে। মাস্ক পরে পদত্যাগ করেন ডিওজিই থেকে। ২০২৩ সালে মাস্ক একটি অনলাইন ভোটাভুটির আয়োজন করেছিলেন, যেখানে প্রশ্ন রেখেছিলেন—“নতুন রাজনৈতিক দল গঠনের সময় এসেছে কি?” সেখানে প্রায় ৮০ শতাংশ মানুষ ‘হ্যাঁ’ ভোট দেন। সেই সময় থেকেই ‘আমেরিকা পার্টি’ নামটি নিয়ে জনমনে কৌতূহল তৈরি হয়।

নতুন রাজনৈতিক শক্তি গঠনের ইঙ্গিত?(Trump VS Musk)
যদিও এখনো মাস্ক সরাসরি কোনো রাজনৈতিক সংগঠন গঠনের ঘোষণা দেননি, তবে তাঁর সাম্প্রতিক পোস্ট এবং জনসমর্থনের জোয়ার এক নতুন রাজনৈতিক শক্তির উত্থানের ইঙ্গিত দিচ্ছে (Trump VS Musk)। ডেমোক্র্যাট ও রিপাবলিকানদের আধিপত্যে অভ্যস্ত আমেরিকার রাজনীতিতে এটি হতে পারে এক যুগান্তকারী পরিবর্তনের সূচনা।
এই দ্বন্দ্ব এখন আর কেবল ট্রাম্প-মাস্কের ব্যক্তিগত লড়াই নয়, বরং তা হয়ে উঠেছে আমেরিকার রাজনৈতিক চিন্তাধারার দিশা নির্ধারণের প্রশ্ন। ‘আমেরিকা পার্টি’ আদৌ তৈরি হবে কি না, তা সময় বলবে। তবে নিশ্চিতভাবে বলা যায়, এই বিতর্ক মার্কিন রাজনৈতিক মঞ্চে আরও বড় পরিবর্তনের বার্তা দিচ্ছে।