ট্রাইব টিভি বাংলা ডিজিটাল: ভরা জনসভায় বেলগাভির অতিরিক্ত পুলিশ সুপার এনভি বারামনিকে চড় মারতে উদ্যত হয়েছিলেন কর্ণাটকের মুখ্যমন্ত্রী সিদ্দারামাইয়া(Karnataka Chief Minister)। কিন্তু সেই অপমান হজম করতে পারেননি তিনি। জনসমক্ষে সিদ্দারামাইয়ার এই অপমান সহ্য করতে না পেরে গত ১৪ জুন স্বরাষ্ট্র দফতরে তাঁর পদত্যাগপত্র জমা দেন বারামনি। আত্মমর্যাদা রক্ষায় এই পুলিশকর্তার পদক্ষেপ নিয়ে চর্চা শুরু হয়েছে গোটা দেশে।কর্ণাটকের মুখ্যমন্ত্রীর বিরুদ্ধে সরব হয়েছে বিজেপি।
ঘটনার সূত্রপাত (Karnataka Chief Minister)
গত ২৮ এপ্রিল মাসে সোশ্যাল মিডিয়া ভাইরাল হওয়া একটি ভিডিওতে দেখা যায়, কংগ্রেসের একটি অনুষ্ঠান মঞ্চে উপস্থিত রয়েছেন কর্ণাটকের মুখ্যমন্ত্রী সিদ্দারামাইয়া(Karnataka Chief Minister)। চারপাশে রয়েছে নিরাপত্তার বেষ্টনী। সেই নিরাপত্তার দায়িত্বে ছিলেন ধাওয়ার জেলার এএসপি বারামনি। অনুষ্ঠান চলাকালীন, বিজেপির মহিলা কর্মীরা মঞ্চের খুব কাছে বিক্ষোভ দেখান। যা দেখে ক্ষুব্ধ হন মুখ্যমন্ত্রী সিদ্দারামাইয়া। তিনি এএসপিকে ডাকেন এবং তাঁকে চড় মারতে উদ্যত হন। সঙ্গে প্রশ্ন করেন, ‘তুমি যেই হও না কেন, এখানে এসো, তুমি কী করছিলে?’ গোটা ঘটনায় অপমানিত বোধ করে পদত্যাগপত্র পাঠিয়েছেন ওই পুলিশকর্তা। তবে ইস্তফাপত্র গ্রহণ করা হবে কিনা, তা নিয়ে এখনও চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হয়নি।

পুলিশকর্তার ইস্তফা (Karnataka Chief Minister)
বারামনি জানান, মুখ্যমন্ত্রীর ওই ধরনের ব্যবহারের পর মানসিকভাবে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছিলেন তিনি(Karnataka Chief Minister)। তাঁর দাবি, ‘মঞ্চ থেকেই তাঁকে উদ্দেশ্য করে মুখ্যমন্ত্রী চিৎকার করে জানতে চান, এখানকার পুলিশ সুপার কে? বেরিয়ে যান এখান থেকে। তারপরই তিনি চড় মারতে উদ্যত হন।’ এএসপির কথায়, ‘চড় গালে লাগেনি ঠিকই, কিন্তু জনসমক্ষে এই অপমান দু’দিন ধরে টেলিভিশনে সম্প্রচারিত হয়েছে। গোটা রাজ্য সেই দৃশ্য প্রত্যক্ষ করেছে।’ এএসপি আরও বলেন, ‘রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর একটা সম্মান আছে। সেই সময় তাঁর মর্যাদা ও পুলিশের মর্যাদা রাখতে চুপ ছিলাম। নীরবে মঞ্চ থেকে নেমে আসি।কিন্তু এই অপমান মন থেকে মেনে নিতে পারিনি। মুখ্যমন্ত্রীর আমার সঙ্গে এই ধরনের আচরণে সেদিনে মঞ্চে থাকা অনেকেই হতবাক হয়ে যান। সবাই চুপ হয়ে যান। আমি নিজে মানসিকভাবে বিপর্যস্ত হয়ে পড়ি। আমার স্ত্রী ও সন্তানেরাও ভেঙে পড়েছে।’
আরও পড়ুন-Dalai Lama: ‘উত্তরসূরি নির্বাচনের অধিকার একমাত্র দলাই লামারই!’ চিনকে কড়া বার্তা ভারতের
মেজাজ হারালেন মুখ্যমন্ত্রী (Karnataka Chief Minister)
রমানি আরও জানিয়েছেন, সে দিনের ঘটনার পর তাঁর দফতরের শীর্ষকর্তারা দেখা করেন(Karnataka Chief Minister)। তাঁর কথায়, ‘’৩১ বছর ধরে নিষ্ঠার সঙ্গে কর্ণাটক পুলিশে কাজ করছি। এই উর্দির সঙ্গে আমার আত্মার সম্পর্ক। মাকে যেমন শ্রদ্ধা করি, উর্দিকেও তেমনভাবে শ্রদ্ধা করি।’ অন্যদিকে ঘটনার কথা তুলে ধরে সিদ্দারামাইয়া চোয়াল শক্ত করে সাংবাদিককে বলেন, ‘আপনি কী বিজেপি থেকে?’ এরপরই মুখ্যমন্ত্রীর সংযোজন, ‘যখন এই বিষয়ে সকলেই চুপ রয়েছে তখন আপনি এসব প্রশ্ন কেন তুলছেন?’ এদিকে, বৃহস্পতিবার কর্ণাটকের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী জি পরমেশ্বর জানিয়েছেন যে, পুলিশকর্তা বারামনির পদত্যাগ গুরুত্বহীন। তিনি আগেই স্পষ্ট ইঙ্গিত দিয়েছিলেন যে, পুলিশকর্তা এনভি বারামনির ইস্তফা গৃহীত হবে না।

আরও পড়ুন-PM Modi: ‘আমি গর্বিত!’ ঘানার সর্বোচ্চ সম্মানে ভূষিত প্রধানমন্ত্রী মোদী
সরব বিজেপি (Karnataka Chief Minister)
এই ঘটনায় অতিরিক্ত পুলিশ সুপার এনভি বারামনির কাছে মুখ্যমন্ত্রীর ক্ষমা চাওয়ার দাবি তুলেছে বিজেপি(Karnataka Chief Minister)।বিজেপির আইটি সেলের প্রধান অমিত মালব্য বলেন, ‘আমাদের দাবি, সিদ্দারামাইয়া তাঁর অহংকারকে দূরে সরিয়ে রেখে বারামনির কাছে প্রকাশ্যে ক্ষমা চান এবং অফিসারকে তার সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনা করার জন্য অনুরোধ করুন। শুধু বিজেপি নয়, এই ঘটনার তীব্র নিন্দা করেছে এনডিএ-র জোট সঙ্গী জেডিএসও।
