ট্রাইব টিভি বাংলা ডিজিটাল: রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের অবসান নিয়ে আন্তর্জাতিক স্তরে একের পর এক কূটনৈতিক আলোচনার মধ্যে নতুন মোড় নিল পরিস্থিতি (Russia Ukraine War)। একদিকে যখন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প (Donald J. Trump) ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জ়েলেনস্কির সঙ্গে ফোনে গুরুত্বপূর্ণ আলোচনা করলেন, অন্যদিকে কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই রাশিয়ার একটি গুরুত্বপূর্ণ বিমানঘাঁটিতে হামলা চালাল ইউক্রেনীয় বাহিনী।
ট্রাম্প-পুতিনের আলোচনায় আশাভঙ্গের শুরু (Russia Ukraine War)
বৃহস্পতিবার ট্রাম্প ফোনে কথা বলেন রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে(Russia Ukraine War)। আলোচনা হয়েছিল যুদ্ধবিরতির সম্ভাবনা নিয়ে। কিন্তু ট্রাম্প নিজেই পরে জানিয়েছেন, তিনি এই আলোচনায় হতাশ হয়েছেন। কোনো স্থায়ী সমাধান বা বিরতি নিয়ে প্রগতি হয়নি।
তার পরদিনই, রুশ বাহিনী পাল্টা কৌশল নেয়। ইউক্রেনের রাজধানী কিভ লক্ষ্য করে তারা ছোড়ে ৫০০-র বেশি ড্রোন ও ১১টি ক্ষেপণাস্ত্র। শহরের বহু বহুতল ক্ষতিগ্রস্ত হয়। বহু মানুষ রাত কাটান বাঙ্কার বা সাবওয়ে স্টেশনে।
ট্রাম্প-জেলেনস্কি আকাশ প্রতিরক্ষা (Russia Ukraine War)
শুক্রবার ট্রাম্প ফোনে কথা বলেন ইউক্রেন প্রেসিডেন্ট জ়েলেনস্কির সঙ্গে(Russia Ukraine War)। আলোচনায় মূলত ড্রোন প্রযুক্তি, আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার উন্নতি এবং সামরিক যুগ্ম প্রকল্প নিয়ে বিস্তর আলোচনা হয়। ৪ জুলাই আমেরিকার স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে ট্রাম্পকে শুভেচ্ছা জানান জ়েলেনস্কি। সেই শুভেচ্ছার আবহেই উঠে আসে সামরিক সহযোগিতা এবং প্রযুক্তি ভাগাভাগির প্রস্তাব।
জ়েলেনস্কির দফতর থেকে দেওয়া বিবৃতিতে বলা হয়, আলোচনা ‘অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এবং ফলপ্রসূ’। জল্পনা তৈরি হয়েছে— আমেরিকা কি ইউক্রেনকে প্রতিরক্ষা ‘শিল্ড’ দেবে? যদিও ট্রাম্প এর সরাসরি উত্তর দেননি। বরং সাংবাদিকদের প্রশ্নে বলেন, “আমার মনে হয়, আমাদের খুব ভাল কথা হয়েছে।” তবে যুদ্ধ থামবে কি না— এই প্রশ্নে ট্রাম্পের উত্তর ছিল অস্পষ্ট: “আমি জানি না। সেটা হবে কি না, বলতে পারব না।”

ট্রাম্প-আলোচনার পরেই ইউক্রেনের পদক্ষেপ (Russia Ukraine War)
ফোনালাপ শেষ হওয়ার কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই শনিবার রাশিয়ার ভরোনেজ় প্রদেশের বোরিসোগ্লেব্স্ক সামরিক বিমানঘাঁটিতে হামলা চালায় ইউক্রেন বাহিনী(Russia Ukraine War)। সেনাবাহিনীর দাবি, গ্লাইড বম্বের গুদাম এবং প্রশিক্ষণ বিমান লক্ষ করে বোমা ফেলা হয়। আরও কয়েকটি যুদ্ধবিমানও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
এই বিমানঘাঁটিই ইউক্রেনে হামলার মূল ঘাঁটি হিসেবে ব্যবহৃত হত, যেখানে ছিল এসইউ-৩৪, এসইউ-৩৫এস এবং এসইউ-৩০এসএম। ভরোনেজ়ের গভর্নর জানান, ইউক্রেনের ছোড়া ২৫টি ড্রোন ধ্বংস করেছে রুশ প্রতিরক্ষা বাহিনী। যদিও ঘাঁটির ক্ষতি নিয়ে সরকারি ভাবে কিছু জানানো হয়নি।

কূটনীতি বনাম কামান-গোলা (Russia Ukraine War)
যুদ্ধ থামাতে একদিকে জোর কূটনৈতিক তৎপরতা চলছে— ট্রাম্প নিজে দুই পক্ষের রাষ্ট্রপ্রধানের সঙ্গে কথা বলছেন(Russia Ukraine War)। কিন্তু বাস্তবে ময়দানে চলছে পাল্টা হামলা। এই বৈপরীত্যই বার্তা দিচ্ছে— যুদ্ধের পরিসমাপ্তি এখনও অনেক দূর। কূটনীতি হয়তো আলো দেখাচ্ছে, কিন্তু শেষ কথা বলছে বারুদের ধোঁয়া।