ট্রাইব টিভি বাংলা ডিজিটাল: বন্যা বিধ্বস্ত হিমাচল প্রদেশের নিজের লোকসভা এলাকায় গিয়ে বিতর্কে জড়ালেন সাংসদ-অভিনেত্রী কঙ্গনা রানাওয়াত(Kangana Ranaut)। রবিবার বানভাসি মান্ডি জেলা পরিদর্শনে যান তিনি। গিয়ে সবদিক খতিয়ে দেখে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হন। ত্রাণ নিয়ে প্রশ্নের উত্তরে জানিয়ে দেন, তিনি মন্ত্রী নন, তাই কোনও ত্রাণ তহবিল তাঁর হাতে নেই। তিনি শুধু এলাকার কথা সংসদে গিয়ে বলতে পারেন মাত্র। আর তাঁর এই মন্তব্যের জেরে শুরু হয়েছে নতুন বিতর্ক। কঙ্গনাকে তীব্র কটাক্ষ করেছে কংগ্রেস।
বন্যায় বিধ্বস্ত মান্ডিতে অভিনেত্রী (Kangana Ranaut)
একটানা বৃষ্টি, ভূমিধস এবং বন্যায় বিধ্বস্ত হিমাচলের একাংশ। লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে মৃতের সংখ্যা(Kangana Ranaut)। রাজ্য বিপর্যয় মোকাবিলা কেন্দ্র জানিয়েছে, শুধুমাত্র মান্ডি জেলায় এখনও পর্যন্ত মৃত্যু হয়েছে ১৭ জনের, নিখোঁজ ৩১। ক্ষতিগ্রস্ত ১৫০-টিরও বেশি বাড়ি, ১০৬টি গবাদি পশুর ঘর, ৩১টি গাড়ি, ১৪টি সেতু ও বহু রাস্তা। প্রায় ২০০টি রাস্তা বন্ধ, ২৭৮টি জল সরবরাহ প্রকল্প ও ২৩৬টি ট্রান্সফর্মার বিকল।এই পরিস্থিতিতে রবিবার বন্যা বিধ্বস্ত মান্ডি পরিদর্শনে যান সেখানকার সাংসদ কঙ্গনা রানাওয়াত।পাশাপাশি পরিস্থিতি মোকাবিলা করতে না পারায় কটাক্ষ করেন রাজ্যের কংগ্রেস সরকারকে। তাঁর অভিযোগ, ‘যারা দায়ী, তারা মুখ লুকাচ্ছে। ওরা দুর্নীতি করতে ব্যস্ত। কেন্দ্রের তহবিল তাদের কাছে আসবে। আমার বা জয়রাম ঠাকুরের কাছে নয়। সিদ্ধান্ত নিতে আমার হয়তো কিছু ক্ষমতা থাকতে পারে, কিন্তু রাজ্য বা পঞ্চায়েত স্তরে ক্ষমতা খুব কম।’

বিতর্কে কঙ্গনা রানাওয়াত (Kangana Ranaut)
তাঁকে প্রশ্ন করা হয় যে নিজের কেন্দ্রের মানুষদের জন্য কী করেছেন, সেখানে কঙ্গনা দেন অদ্ভুত যুক্তি(Kangana Ranaut)। তিনি বলেন, ‘বিপর্যয় মোকাবিলার জন্য আমার কোনও ফান্ড নেই। না আমার আছে ক্যাবিনেট পোস্ট। সাংসদদের কাজ সংসদেই সীমাবদ্ধ। আমরা খুবই ক্ষুদ্র। তবে আমি কেন্দ্র থেকে বিপর্যয় মোকাবিলা ফান্ড পাইয়ে দিতে সাহায্য করতে পারি।’ তিনি কড়া ভাষায় বলেন, ‘এই সরকার রাজ্য চালাতে পারছে না। প্রতি বর্ষাতেই হিমাচলে প্রাকৃতিক বিপর্যয় হচ্ছে। আমি নিশ্চিত, আগামী ২০ বছরেও কংগ্রেস আর ক্ষমতায় ফিরবে না।’ অভিনেত্রী বলেন, ‘আমি সাধারণ মানুষের নাগালে আছি। স্থানীয় স্তরে আমরা ত্রাণসামগ্রী বিতরণ করেছি। প্রধানমন্ত্রী বিদেশ সফরে থাকলেও তিনি এখানকার পরিস্থিতি সম্পর্কে অবগত। কেন্দ্রীয় সরকার দ্রুত সেনা পাঠিয়েছে। আমার দায়িত্ব, এখানে কী ঘটছে তা কেন্দ্রকে জানানো এবং তহবিল আনার জন্য চেষ্টা করা।’
কংগ্রেসের কটাক্ষ (Kangana Ranaut)
নিজের বক্তব্যের যতই সাফাই দিক কঙ্গনা, এনিয়ে তীব্র বিতর্ক শুরু হয়েছে বিভিন্ন মহলে(Kangana Ranaut)।এক্স হ্যান্ডেলে কঙ্গনা কটাক্ষ করে লেখে, ‘হিমাচল প্রদেশের মান্ডিতে মেঘভাঙা বৃষ্টির ফলে ব্যাপক ধ্বংসযজ্ঞ হয়েছে। মানুষ দুর্দশাগ্রস্ত, তাদের পুরো পৃথিবী ধ্বংস হয়ে গেছে। মান্ডির সাংসদ কঙ্গনা বেশ কয়েকদিন পর সেখানে এসে হেসে বললেন-‘আমি কী করতে পারি, আমার মন্ত্রিসভায় কোনও পদ নেই।’ দয়া করে কিছুটা সংবেদনশীলতা দেখান কঙ্গনা।’ অন্যদিকে সোশ্যাল মিডিয়াতে কংগ্রেস নেত্রী ঋতু চৌধুরী লেখেন, ‘হিমাচল প্রদেশের মান্ডিতে মেঘ ভাঙা বৃষ্টিতে অনেক ক্ষতি হয়েছে। মানুষ তাঁদের প্রিয়জনদের হারিয়েছেন। সেখানকার ঘরবাড়ি ধ্বংস হয়েছে। আর, পাঁচ দিন পরে কঙ্গনা রানাওয়াত সেখানে এসে হাসতে হাসতে বলছেন আমি কী করতে পারি, আমি মন্ত্রিসভার সদস্যও নই। তাহলে আপনি কেন ভোটে দাঁড়ালেন?’

আরও পড়ুন-Himachal Pradesh: বন্যায় লন্ডভন্ড হিমাচল প্রদেশে! মৃত্যু বাড়ছে, উত্তরাখণ্ডে সতর্কতা
সোশ্যাল মিডিয়ায় সমালোচনা (Kangana Ranaut)
হিমাচল প্রদেশ পরিদর্শনের পরেও কটাক্ষ পিছু ছাড়ে না কঙ্গনার(Kangana Ranaut)। নেটিজেনরা তাঁকে খোঁচা দিতে ব্যস্ত। যেখানে মানুষ প্রায় সব হারিয়ে ফেলেছেন, সেখানে তারকা সাংসদ গিয়েছেন ঠিকই। তবে যতটা সাজগোজ করে গিয়েছেন তা উচিত কিনা সে প্রশ্ন করেছেন অনেকেই। ক্ষতিগ্রস্ত জায়গা পরিদর্শনের সময় কঙ্গনার চোখে ছিল সানগ্লাস। তাই কারও কারও প্রশ্ন, ‘কালো চশমায় চোখ ঢেকে সত্যি কি ক্ষতি দেখা সম্ভব?’ বলে রাখা ভালো, রাজনীতিতে তারকাদের উপস্থিতিতে অবশ্য নতুন নয়। সাধারণ মানুষের ভোটে জিতে আসা সেই তারকা রাজনীতিকরা সাধারণ মানুষের জন্য ঠিক কতটা কাজ করেন, তা নিয়ে তর্কের কোনও শেষ নেই। কঙ্গনার ক্ষেত্রে সে প্রশ্নই ওঠে বারবার।
