Last Updated on [modified_date_only] by Debu Das
ট্রাইব টিভি বাংলা ডিজিটাল : বেজিঙে আয়োজিত দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের অবসান ও জাপানের বিরুদ্ধে চিনের যুদ্ধজয়ের স্মরণে সামরিক কুচকাওয়াজ ঘিরে আন্তর্জাতিক মহলে চর্চা তুঙ্গে (V Day Parade In China)। বুধবারের ওই অনুষ্ঠানে একই মঞ্চে উপস্থিত ছিলেন চিনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং, রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন এবং উত্তর কোরিয়ার নেতা কিম জং উন। এই এক ফ্রেমেই ধরা পড়েছে বিশ্বের অন্যতম প্রভাবশালী তিন রাষ্ট্রনেতা। আর তা নিয়েই পশ্চিমি দুনিয়ায় তৈরি হয়েছে বিতর্ক।
সৌহার্দ্য না পশ্চিমবিরোধী ঐক্য? (V Day Parade In China)
জিনপিংয়ের সঙ্গে পুতিন ও কিমের পাশাপাশি হাঁটার দৃশ্যকে একাংশ শুধুমাত্র সৌহার্দ্যের বার্তা হিসেবে দেখলেও, অন্যদের মতে এ এক স্পষ্ট বার্তা পশ্চিমকে(V Day Parade In China)। আমেরিকা ও তার মিত্রদের বিরুদ্ধে নতুন এক ভূ-রাজনৈতিক জোট গঠনের ইঙ্গিত লুকিয়ে আছে এই ছবিতে।
ট্রাম্পের কটাক্ষ (V Day Parade In China)
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বিষয়টিকে হালকাভাবে নেননি(V Day Parade In China)। কটাক্ষের সুরে তিনি জিনপিংকে আমেরিকার বিরুদ্ধে ‘ষড়যন্ত্রকারী’ আখ্যা দেন। ট্রাম্প (Donald J. Trump) ব্যঙ্গ করে বলেন, জিনপিং যেন তাঁর পক্ষ থেকে পুতিন এবং কিমকে উষ্ণ অভ্যর্থনা জানান। একইসঙ্গে ক্ষোভ প্রকাশ করে তিনি মন্তব্য করেন, ‘‘চিনের বিজয় এবং গৌরব ফিরিয়ে আনতে অসংখ্য আমেরিকান প্রাণ দিয়েছেন। তাঁদের ত্যাগ যেন যথাযথ সম্মান পায়।’’
ইতিহাসের প্রেক্ষাপট (V Day Parade In China)
১৯৩০-৪০ দশকে চিন-জাপান যুদ্ধ রীতিমতো রক্তক্ষয়ী ছিল। লক্ষাধিক চিনা সেনার প্রাণহানি ঘটে(V Day Parade In China)। ১৯৪১ সালের ডিসেম্বর মাসে জাপানের পার্ল হারবারে বিমান হামলা দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধকে নতুন মোড় দেয়। মাত্র কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই মার্কিন নৌঘাঁটির একাধিক যুদ্ধজাহাজ ধ্বংস হয়, প্রাণ হারান ২,৪০০-রও বেশি মার্কিন সেনা। সেই ঘটনার প্রেক্ষিতেই ট্রাম্পের বক্তব্য উঠে এসেছে।

জিনপিংয়ের পাল্টা বার্তা (V Day Parade In China)
বিজয় উৎসবের মঞ্চ থেকে ট্রাম্পের নাম না করে আমেরিকাকে পাল্টা বার্তা দেন জিনপিং(V Day Parade In China)। তাঁর দাবি, ‘‘চিন কখনও কোনও গুন্ডামিতে ভয় পায় না, সর্বদা এগিয়ে যাবে।’’ চীনা প্রেসিডেন্ট স্পষ্টই জানান, শুল্কনীতি ও চাপ প্রয়োগের কূটনীতি দিয়ে বেজিংকে কোণঠাসা করা যাবে না।
মার্কিন-চিন টানাপোড়েন
ট্রাম্প প্রশাসনের নতুন শুল্কনীতির ফলে আমেরিকা ও চিনের সম্পর্ক গত কয়েক বছর ধরেই অবনতির দিকে। আমেরিকা একদিকে বাণিজ্যযুদ্ধে নামিয়েছে নতুন নিয়ম, অন্যদিকে চিনও পাল্টা কৌশল নিয়েছে ক্ষতিগ্রস্ত দেশগুলিকে পাশে টেনে।
আরও পড়ুন : Indian Navy Special Force : ভারতীয় নৌবাহিনীর স্পেশাল ফোর্স! জলসীমা রক্ষার দায়িত্বে ‘মেরিন কমান্ডো’
ভারতের ভূমিকা (V Day Parade In China)
সম্প্রতি এসসিও সম্মেলনের মঞ্চ ব্যবহার করে জিনপিং পশ্চিমবিরোধী ঐক্যের বার্তা জোরালো করতে চেয়েছেন বলে মনে করছে কূটনৈতিক মহল। সেখানেই ভারতকেও পাশে টানার চেষ্টা করেছে চিন। ফলে আন্তর্জাতিক কূটনীতির পরিমণ্ডলে ভারতকেও যে নতুন করে ভারসাম্যের খেলা খেলতে হবে, তা স্পষ্ট।
বেজিঙে পুতিন-কিম-জিনপিংয়ের এক মঞ্চে উপস্থিতি নিঃসন্দেহে বৈশ্বিক শক্তির নতুন সমীকরণের ইঙ্গিত দিচ্ছে। একদিকে আমেরিকার ক্ষোভ ও সতর্কবার্তা, অন্যদিকে চিনের অটল অবস্থান—সব মিলিয়ে ভূ-রাজনৈতিক অঙ্গনে তৈরি হচ্ছে নতুন কূটনৈতিক সমীকরণ, যার প্রভাব ভারত-সহ গোটা এশিয়া প্রশান্ত অঞ্চলে পড়তে বাধ্য।