ট্রাইব টিভি বাংলা ডিজিটাল: বাংলাদেশের (Bangladesh) অস্থির পরিস্থিততে সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তার জন্য বাংলাদেশে জাতিপুঞ্জের শান্তি সেনা বাহিনীর কথা বিধানসভায় তুলেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেই প্রসঙ্গ একেবারে সংসদে তুলেছিলেন তৃণমূল সাংসদ সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়।
বাংলাদেশে রয়েছে উত্তেজনা (Bangladesh)
বাংলাদেশে (Bangladesh) চলছে চরম উত্তেজনার পরিস্থিতি। ভাঙ্গা হচ্ছে মন্দির ও অন্যান্য ধর্মস্থল। চলছে সংখ্যালঘুদের উপর আক্রমণ। এমনকি ইসকনের উপরেও হামলা করছে মৌলবাদীরা। এমনকি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের শান্তি বাহিনী পাঠানোর বিষয়ের প্রতিক্রিয়া দিয়েছে বাংলাদেশের বিদেশ উপদেষ্টা মোহাম্মদ তৌহিদ হোসেন।
কখন পাঠানো যায় এই বাহিনী? (Bangladesh)
কিন্তু ঠিক কোন কোন পরিস্থিতিতে নামানো যায় শান্তি বাহিনী? এবিষয়ে রয়েছে সম্মিলিত জাতিপুঞ্জের বেশ লম্বা নিয়মাবলী (Bangladesh)। তাতেই সমস্ত বর্ণনা দেওয়া রয়েছে, কোন পরিস্থিতে শান্তি বাহিনী যেতে পারবে আর কোন কোন বিষয়ে হস্তক্ষেপ করতে পারবে জাতি পুঞ্জের শান্তি বাহিনী।
কবে হয়েছে তৈরি?
১৯৪৫ সালে সম্মিলিত জাতিপুঞ্জ স্থাপনের পর পরই গঠন করা হয়েছিল ইউনাইটেড নেশনের একটি নিরাপত্তা বাহিনী ‘পিস কিপিং ফোর্স’। ইউনাইটেড নেশনের সৃষ্টিই হয়েছিল গোটা বিশ্বে শান্তি নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করার জন্য। আর সেই লক্ষ্যে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ ছিল এই ‘পিস কিপিং ফোর্স’। গোটা বিশ্বের মোট ১২৪ টি দেশ থেকে ট্রুপ, পুলিশ এবং ইচ্ছুক নাগরিকদের নিয়ে গঠন করা হয়েছে এই ‘পিস কিপিং ফোর্স’। এই বাহিনিতে রয়েছে প্রায় ৯৩ হাজার শান্তি সেনা। যাদের বিশ্বের বিভিন্ন স্থানে যুদ্ধ পরবর্তী উত্তেজনা কমাতে ও মানবাধিকার রক্ষা করতে নামানো হয়।
কার সম্মতি প্রয়োজন?
সম্মিলিত জাতিপুঞ্জের ‘পিস কিপিং ফোর্স’ ব্যবহারের জন্য সম্মিলিত জাতিপুঞ্জের নিরাপত্তা পরিষদের সম্মতি প্রয়োজন। এছাড়া এই বাহিনী তখনই কোনও এলাকায় মোতায়েন করা যায় যেখানে যুদ্ধ বিরতি ঘোষণা করা হয়েছে। মুলত সীজ ফায়ার মনিটরিং, যুদ্ধের পরিস্থিতিতে সাধারণ নাগরিকদের নিরাপত্তা, যুদ্ধের পর নাগরিকদের আবার স্বাভাবিক জীবনে ফিরিয়ে আনার ক্ষেত্রে কাজ করে এই ‘পিস কিপিং ফোর্স’। এছাড়াও যুদ্ধের পর আবারও শান্তিপূর্ণ উপায়ে গণভোটের আয়োজন করে শান্তি স্থাপন করা। এছাড়াও বিভিন্ন স্থানে শান্তি স্থাপনের জন্য সেনা অভিযানও করতে পারে এই শান্তি বাহিনী।
আরও পড়ুন: No Confidence in France: সংসদে পাশ অনাস্থা প্রস্তাব! পদত্যাগ করছেন প্রধানমন্ত্রী
মূল নীতি
তবে এই শান্তি সেনা মোতায়েনের ক্ষেত্রে তিনটি ঘোষিত নীতি রয়েছে। প্রথমত, কোনও দেশে শান্তি সেনা পাঠানোর আগে সংঘর্ষে জড়িত দুই পক্ষেরই অনুমতি প্রয়োজন হয়। এবং শান্তি সেনাকে স্বাধীনভাবে কাজ করতে দিতে হবে। দ্বিতীয়ত, শান্তিসেনাকে নিরপেক্ষ ভাবে কাজ করতে দিতে হবে। যুদ্ধের সময় দুই পক্ষের সঙ্গেই সমান দূরত্ব বজায় রাখাই শান্তি সেনার কাজ। তৃতীয়ত, রাষ্ট্রপুঞ্জের নেওয়া সিদ্ধান্ত কার্যকর এবং নিজেদের প্রতিরক্ষা ছাড়া অন্য কোনও প্রয়োজনে বাহিনীকে ব্যবহার করা যায় না। এমনই অনেকগুলো শান্তি নিরাপত্তা মিশন ইতিমধ্যেই করেছে এই ‘পিস কিপিং ফোর্স’।
কোথায় কবে শান্তি সেনা?
১৯৪৮ সালে প্রথম মধ্য প্রাচ্যে শান্তি সেনা পাঠিয়েছিল ইউনাইটেড নেশন। ১৯৪৯ সালে ভারত-পাকিস্থানের সীমান্তে লাইন অব কন্ট্রোল (LOC)-এ শান্তি সেনা মোতায়েন করা হয়েছিল জাতিপুঞ্জের তরফে। ২০০৪ থেকে ২০১৭ সালের মধ্যে ১৩ বছর হাইতি-তে রাজনৈতিক ও প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের সময়ে সেখানে পাঠানো হয়েছিল শান্তি বাহিনী। এছাড়াও ২০১১ সাল থেকে দক্ষিন সুদানে মোতায়েন করা রয়েছে জাতিপুঞ্জের শান্তি সেনা। এই প্রত্যেকটি ক্ষেত্রে যে দেশে শান্তি সেনা মোতায়েন করা হয়েছে তার সমর্থন নেওয়া হয়েছে। সুতরাং, বাংলাদেশের পরিস্থিতিতে শান্তি সেনা পাঠানোর ক্ষেত্রে বাংলাদেশের তরফেও সমর্থন থাকতে হবে। তবে সেক্ষত্রেও বাংলাদেশের পরিস্থিতিতে জাতিপুঞ্জের ‘পিস কিপিং ফোর্স’ মোতায়েন করার জন্য শেষ সিদ্ধান্ত নেবে জাতিপুঞ্জের নিরাপত্তা পরিষদ।