ট্রাইব টিভি বাংলা ডিজিটাল: আর্কটিক মহাসাগরের ইতিহাস পরিবর্তন হতে চলেছে বলে জানা যাচ্ছে (Arctic Ice Melting Rapidly)। আর্কটিক মহাসাগর একটি ঐতিহাসিক মাইলফলকের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। এক নতুন গবেষণায় বলা হয়েছে, ২০৩০ সালের মধ্যে আর্কটিক মহাসাগরের প্রথম বরফমুক্ত দিন আসতে পারে, যা আগের অনেক বিশেষজ্ঞের অনুমানের চেয়ে দ্রুত ঘটবে।
গবেষণার ফলাফল (Arctic Ice Melting Rapidly)
এই গবেষণাটি Nature Communications জার্নালে প্রকাশিত হয়েছে, যা আর্কটিক সমুদ্রের বরফের দ্রুত হ্রাস নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে (Arctic Ice Melting Rapidly)। বিজ্ঞানীরা ১১টি জলবায়ু মডেল বিশ্লেষণ করেছেন এবং ৩৬৬টি সিমুলেশন চালিয়েছেন। এসব সিমুলেশন আর্কটিক বরফের অবস্থান ২০২৩ থেকে ২১ শতকের শেষ পর্যন্ত পর্যবেক্ষণ করেছে। গবেষণার ফলাফল অনুযায়ী, আগামী তিন বছরের মধ্যে আর্কটিক মহাসাগর বরফমুক্ত হতে পারে। তবে এই পরিস্থিতি সৃষ্টি হতে হলে বিশেষ কিছু আবহাওয়া পরিস্থিতি মিলতে হবে, যেমন উষ্ণ ঋতু এবং ঝড়ের কারণে বরফ দ্রুত গলে যেতে পারে।
বরফ হ্রাসের বর্তমান হার (Arctic Ice Melting Rapidly)
বিজ্ঞানীরা রিপোর্ট করছেন, আর্কটিক মহাসাগর গত কয়েক দশক ধরে বরফ হারাচ্ছে (Arctic Ice Melting Rapidly)। প্রতি দশকে বরফের পরিমাণ ১২.৬ শতাংশ কমে গেছে, যা ১,৫০০ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ হ্রাসের হার।
আরও পড়ুন: Dog Cry: কুকুরের কান্নাই কী আসলে কুকুরের ডাক! মাঝরাতেই তারা টের পায় অশরীরী আত্মার?
বিশ্ব জলবায়ু এবং প্রকৃতির উপর প্রভাব
আর্কটিকের বরফ হারানো global climate পরিবর্তনের জন্য বড় চ্যালেঞ্জ তৈরি করবে। আলবিডো প্রভাবের মাধ্যমে এই সমস্যাটি ব্যাখ্যা করা হয়েছে। বরফ সূর্যের আলো প্রতিফলিত করে, যা আর্কটিক অঞ্চলের তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে। বরফ না থাকলে, আর্কটিক জল আরও তাপ শোষণ করবে, যা বিশ্বের গরমকে বাড়িয়ে দেবে।
এছাড়া, সমুদ্রের উচ্চতা বৃদ্ধি একটি বড় উদ্বেগের বিষয়। বর্তমানে সমুদ্র স্তরের উচ্চতা প্রতি বছর ৩.৬ মিমি বাড়ছে। গ্রিনল্যান্ডের বরফের চাদর গলে গেলে, সমুদ্রের স্তর ৬ মিটার পর্যন্ত বাড়তে পারে। উপকূলবর্তী এলাকাগুলির জন্য এটি এক মারাত্মক হুমকি।
আর্কটিক প্রাণীজগতের উপর প্রভাব
আর্কটিকের বন্যপ্রাণীও এই বরফ হ্রাসের কারণে বিপদের মুখে পড়ছে। বিশেষত, পোলার বিয়ার, ওয়ালরাস এবং আর্কটিক ফক্সের মতো প্রাণীরা অত্যন্ত বিপদগ্রস্ত। সামুদ্রিক প্রাণীরা উত্তর দিকে চলে যাচ্ছে, ঠান্ডা জল খুঁজতে। তাছাড়া, গলিত পারমাফ্রস্ট আরও বেশি বাস্তুতন্ত্রের ক্ষতি করছে।
আরও পড়ুন: Money Plant: বাড়িতে মানি প্ল্যান্ট রেখেছেন! পরখ করে নিয়েছেন তো!
গ্রীনহাউস গ্যাস নির্গমন কমানোর প্রয়োজনীয়তা
বিশেষজ্ঞরা গ্রীনহাউস গ্যাস নির্গমন কমানোর প্রতি গুরুত্ব আরোপ করছেন। গবেষণাটি মানব ক্রিয়াকলাপ থেকে বাড়তে থাকা গ্যাস নির্গমন সম্পর্কে সতর্ক করেছে। ২০২৩ সালে, বিশ্বের CO2 এবং মিথেনের স্তর নতুন উচ্চতায় পৌঁছেছে। তাই আর্কটিক বরফমুক্ত হওয়ার দিন বিলম্বিত করতে দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়া জরুরি।
আবশ্যক পদক্ষেপ
ব্রিটিশ অ্যান্টার্কটিক সার্ভে-র জলবায়ু বিজ্ঞানী এল্লা গিলবার্ট বলেছেন, “আর্কটিক বিশ্বের অন্য অংশের তুলনায় চার গুণ দ্রুত গরম হচ্ছে।” এই দ্রুত পরিবর্তন বাস্তুতন্ত্র, পরিকাঠামো এবং আর্কটিক অঞ্চলের জীবিকা জন্য মারাত্মক হুমকি।
গবেষকরা সতর্ক করেছেন যে, আর্কটিকের জন্য সময় নষ্ট হচ্ছে। এই পরিবর্তনগুলির মোকাবিলা করতে শক্ত পদক্ষেপ নেওয়া প্রয়োজন।