ট্রাইব টিভি বাংলা ডিজিটাল: ট্রাইব টিভিতে আনকাট অর্কদীপ মিশ্র। এই মুহূর্তে দর্শক থেকে শ্রোতারা মুগ্ধ খাদানের ‘রাধারাণী’ গানে। প্রশংসার বন্যা বইছে গায়ক অর্কদীপকে নিয়ে (Arkadeep Mishra Interview)। গানটি কম্পোজ করেছেন রথীজিৎ ভট্টাচার্য। এই গান নিয়ে কীভাবে কাজ চলেছে? খাদানের মতো এত বড় একটা সিনেমায় গান গাওয়ার সুযোগ, অর্কদীপ কীভাবে পেলেন? সরাসরি জানালেন ট্রাইব টিভিকে।
‘রাধারাণী’ এখন শুধু তুমুল হিট নয়, বরং অনেকের প্লে লিস্টের প্রথম দিকে রয়েছে। বিষয়টা কেমন লাগছে? (Arkadeep Mishra Interview)
অর্কদীপ: খুবই ভালো লাগছে। একটা রিয়েলিটি শো থেকে আমার পরিচিতি (Arkadeep Mishra Interview)। মানুষ আমাকে চিনেছে। কিন্তু রাধারানীর ক্ষেত্রে বলব, প্রথমত ‘খাদান’ সিনেমাটা এই মুহূর্তে দাঁড়িয়ে বাংলা এবং বাংলার বাইরে একটা বিরাট সাড়া ফেলেছে। এত বড় ছবিতে একটা ভালো কম্পোজিশন পাওয়া বড় ভাগ্যের ব্যাপার। এটা পুরোপুরি সম্ভব হয়েছে, একজনের জন্য, তিনি হলেন রথিজিৎ দা।
একটা রিয়েলিটি শো থেকে বেরিয়ে, নিজের নামে পরিচিতি গড়ে তোলা। এখানে লড়াই কতটা ছিল? (Arkadeep Mishra Interview)
অর্কদীপ: জি বাংলার সারেগামাপা যে মঞ্চটা আমাকে দিয়েছে, ভীষণ ভীষণ কৃতজ্ঞ তাদের কাছে। ওই মঞ্চটাও অনেকে পায়না। মারাত্মক রকম ভাবে মানুষের কাছে পৌঁছে যাওয়ার একটা মাধ্যম জি বাংলার সারেগামাপা (Arkadeep Mishra Interview)। যেটা কেউ অস্বীকার করতে পারবে না। আমার মনে হয়েছিল, সারেগামাপার পর ওই পরিচিতিটা তো অবশ্যই থাকবে। কিন্তু চাইছিলাম আলাদা কিছু করতে। ওই টুকুর মধ্যে না থেমে থেকে, কাজ করতে চেয়েছিলাম।
এর আগে আমি মিথ্যে প্রেমের গানে কাজ করেছি। বৌদি ক্যান্টিনে জয়দার সুরে আমি ইমনদি গান গেয়েছি। সীমান্ততে গেয়েছি। এরকম ছবির কাজ চলছিল। এছাড়াও অভিনয়ের কাজও চলছে। একটা ওয়েব সিরিজে অভিনয় করেছি। সম্প্রতি মুম্বাইতে একটা কাজ করছি। কিন্তু ‘খাদান’ আমার জীবনে একটা অন্যতম জায়গা। আমার গান, আমার খুব একটা পছন্দ হয় না।। কিন্তু খাদানের ‘রাধারাণী’ আমার জীবনের অন্যতম পছন্দের একটা গান। এটা আমার জন্য অনেক বড় পাওয়া।
আমাদের জন্য আরেকটা বড় পাওয়া আছে। এবার গান নয়, অভিনয় আসছে অর্কদীপ। কতগুলো ওয়েব সিরিজে কাজ হয়েছে? সেখানে কোন কোন ভূমিকায় অর্কদীপকে দেখা যাচ্ছে?
অর্কদীপ: অভিনয়টা গানের জন্যই হয়েছে। মুম্বাইয়ের একটা সিরিজে খুব ছোট্ট একটা পার্টে কিছুদিন আগে অভিনয় করেছি। করিশ্মা কাপুরের ‘ব্রাউন দ্যা ফার্স্ট কেস’। সেখানে গানের সিনে আমাদের এন্ট্রি। সেখানেই আমরা পারফর্ম করেছি। ওই একই সিনে আমাদের আবির দা রয়েছেন এবং করিশ্মা কাপুর রয়েছেন। আর একটা কাজ এখন চলছে। সেটাও হিন্দির। যেখানে গানের মাধ্যমে অভিনয়।
আরও পড়ুন: Oporichito Movie Review: কেমন হয়েছে ঋত্বিকের থ্রিলার মুভি অপরিচিত?
মুম্বাইতে কাজের অভিজ্ঞতা কেমন ?
অর্কদীপ: এর আগে মুম্বাইতে একটা রিয়েলিটি শো করেছিলাম। তারপর সেভাবে মুম্বাইতে থেকে কাজ করা হয়নি। সম্প্রতি মুম্বাইতে যাওয়া আসা শুরু করেছি। গিয়ে মাঝেমধ্যে থাকছি। সেভাবে গেঁড়ে বসতে পারিনি। কিন্তু যাওয়া আসা চলছে। তবে টুকটাক কাজ আসছে। এখান থেকে করে পাঠাচ্ছি। আবার ওখানে গিয়েও করছি। চেষ্টা করছি যাতে ওখানে কোনও ভাবে টিকে যাওয়া যায়।
মুম্বাইতে গিয়ে কাজের ইচ্ছা কেন? কলকাতায় কি সেই কাজের মান নেই? নাকি আপনাকে বোঝার লোক নেই ?
অর্কদীপ: না না, ব্যাপারটা একেবারেই তা নয়। মুম্বাইয়ের লোকজন আমাকে বারংবার বলেছে, ওখানে থেকে যেতে। কিন্তু আমি তাদের বোঝাই, আমার কাজ এবং যা কিছু রুজি রোজগার সবটাই বাংলায়। পুরোটাই কলকাতায়। কলকাতার ওই জিনিসটা ছেড়ে আমি কখনই মুম্বাইতে যেতে পারব না। তার কারণ আমি রুটকে প্রচন্ড ভালোবাসি। আমি কলকাতাকে ভীষণ ভালোবাসি। পাতি ভাষায় বলতে গেলে, কলকাতা আমাকে ভাত দেয়। আমি অবশ্যই মুম্বাই যাব। কিন্তু যাওয়া আসার মধ্যে থাকব।
মুম্বাইতে অনেক বড় বড় শিল্পী রয়েছেন। তাদের সঙ্গে কি কাজ করার সুযোগ সুবিধা হয়েছে ?
অর্কদীপ: আমি সম্প্রতি নীরজ পাণ্ডের একটা ছবির কাজ করছি। যেখানে সলিল চৌধুরীর ছেলে সঞ্জয় চৌধুরী মিউজিক ডিরেক্টর। ওনার স্টুডিওতেই যাচ্ছি।
খাদানে সাফল্যের পর অর্কদীপের এক্সপেক্টেশন কতটা বেড়েছে?
অর্কদীপ: হ্যাঁ। অবশ্যই এক্সপেক্টেশন বেড়েছে। আমার অনেকদিন ধরেই ইচ্ছে ছিল, আমার নিজের একটা গান করব এবং তার কাজ চলছিল। নিজেই লিখব, নিজেই কম্পোজ করব। সে ক্ষেত্রে আমিও গাইতে পারি, নাও গাইতে পারি। আমার অসুবিধা নেই। যেখানে গান আমি লিখব, সুর আমি দেব। সে ক্ষেত্রে আমি চেষ্টা করছি এবং সাড়া পাচ্ছি।
আরও পড়ুন: Ritwick Chakraborty: মেডিকেল রিপ্রেজেন্টেটিভ থেকে গুণী অভিনেতা, নিজেকে ভাগ্যবান বললেন ঋত্বিক
বাংলা তরফ থেকে কোনও সুযোগ আছে কি?
অর্কদীপ: একটা ছবিতে কাজ করছি। এখনও রিলিজ হয়নি। আমি কি এখনই সব বলে দেব? (একটু হেসে)
কোন পরিচালকের ছবি?
অর্কদীপ: সেটা আমি জানি না। (হেসে) এছাড়া জয়দার সঙ্গে বেশ অনেকগুলো কাজ করেছি। নবারুণদার সঙ্গে কাজ করেছি । সব কাজ তো সবসময় মানুষের সামনে আসে না। অনেক কাজের কথা হয়। অনেক কাজ হয় না। তবে রথিজিৎদার বিষয়ে আমি একটু দুর্বল। আমাকে কোনও কিছুতে ডাকলে আমাকে ভাবতে হয় না। আমার অন্য কাজে কোনও ব্যস্ততা থাকলেও, আমি চেষ্টা করি সেই কাজটা চেঞ্জ করার।
আমি জানতামই না, দাদা আমাকে খাদানের গানের জন্য ডেকেছে। প্রথমে কম্পোজিশন শুনে বলেছিলাম, দাদা আমি পারবো না । চাপ হয়ে যাবে। সেদিন গলা একটু খারাপ ছিল। দাদা বলেছিল, তুই বিশ্রাম নে। পরের দিন গান কর। দুদিন দাদার বাড়িতে থেকেছি। অন্য কেউ হলে হয়ত আমাকে এত সময় নাও দিতে পারত। শুধু আমাকে বলে নয়, আমাদের জেনারেশনকে রথীদা অনেকটা সাপোর্ট করে। ভরসা দেয়। বিশ্বাস করে এবং সাহায্য করে। সেটা আমাদের কাছে একটা বিরাট বড় পাওয়া।
বাড়ির লোকের অনুভূতি কী?
অর্কদীপ: খুব ভালো লাগছে। রাস্তা দিয়ে যাচ্ছি, আমার গান চলছে। কানে আসলে, তখন খুব ভালো লাগছে। আমার বাড়ির সামনে আমার গান চলছে দেখলাম। বাড়ির লোকের অনুভূতি খুবই ভালো। বাড়ির লোকেদের সাথে ‘খাদান’ সিনেমাটা একদিন দেখতেও গেছিলাম। সবাই খুব মজা পেয়েছে। দেবদার সেই প্রথম সময়ের মুভির মতো।