ট্রাইব টিভি বাংলা ডিজিটাল: আমির খান বলেন (Aamir talks about Junaid Dyslexia) যে “তারে জমিন পার” এর গল্পটি তাঁর খুব মনের কাছের ছিল কারণ তিনি নিজেই এর মধ্য দিয়ে গেছেন।
ফ্যান মিটে জানালেন আমির খান (Aamir talks about Junaid Dyslexia)
সম্প্রতি ‘তারে জমিন পার’ ছবির একটি ফ্যান-মিট অনুষ্ঠানে বলিউড সুপারস্টার আমির খান জানান, তাঁর ছেলে জুনেইদ খান ডিসলেক্সিয়ায় ভুগছিল (Aamir talks about Junaid Dyslexia)। তিনি বলেন, এখন তিনি এই বিষয়ে খোলাখুলি কথা বলতে স্বচ্ছন্দ বোধ করেন, কারণ জুনেইদ নিজেই ইতিমধ্যে তা প্রকাশ্যে এনেছেন। আমির জানান, ২০০৭ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত এই ছবির গল্প তাঁর নিজের জীবনের সঙ্গে গভীরভাবে মিলে গিয়েছিল।
তিনি বলেন, শুরুতে তিনি বুঝতেই পারেননি যে জুনেইদের পড়া ও লেখার সমস্যা আসলে এক ধরনের শারীরিক অবস্থা। পরে তা ধরা পড়লে তিনি ছেলেকে পুরোপুরি সাপোর্ট করেন। দীর্ঘদিন ধরে এই বিষয়টি নিয়ে চুপ ছিলেন তিনি, কারণ তিনি জুনেইদের গোপনীয়তাকে সম্মান জানাতে চেয়েছিলেন। আমিরের মতে, এই অভিজ্ঞতা নিয়ে কথা বলার পূর্ণ অধিকার জুনেইদেরই ছিল।
“আজ প্রথমবার বলছি, জুনেইদ ডিসলেক্সিক” (Aamir talks about Junaid Dyslexia)
ফ্যান মিট-এ আমির খান বলেন, “আমি এর আগে কোনও দিন এই বিষয়টা নিয়ে কথা বলিনি। সম্ভবত আজ প্রথম বলছি। অনেক বছর পেরিয়ে গেছে (Aamir talks about Junaid Dyslexia)। আর দ্বিতীয়ত, যাকে নিয়ে বলছি, সে নিজেই এখন এই কথা প্রকাশ্যে বলেছে। তাই এখন আমি প্রকাশ্যে বলছি। আমি বলছি জুনেইদের কথা – আমার ছেলে জুনেইদ। এই ছবির রিলিজের ১৭-১৮ বছর কেটে গেছে। আর আমি আজ বলছি, জুনেইদ ডিসলেক্সিক।”
আরও পড়ুন: Dipika Kakar: দীপিকার জন্য প্রার্থনার অনুরোধ, কেমন আছেন অভিনেত্রী?
তিনি আরও বলেন, “আমি যখন প্রথম ‘তারে জমিন পার’ ছবির গল্প শুনি, তখন সেটি আমাকে খুব আঘাত করেছিল। কারণ আমি নিজেই ওই অভিজ্ঞতার মধ্য দিয়ে গিয়েছি। আমি নিজে যেন নন্দকিশোর আওয়স্তি ছিলাম (ছবির বাবার চরিত্র)। আমি জুনেইদকে বকতাম।”
“ওর হাতের লেখা এত খারাপ কেন?” — ছেলের শৈশবের অভিজ্ঞতা ভাগ করলেন আমির
আমির জানান, যখন জুনেইদ ছোট ছিল, ওর হাতের লেখা একদম পড়া যেত না। তিনি বলতেন, “জুনেইদ, এত খারাপ লেখা কেউ লেখে? কেউ তো পড়তেই পারবে না। এ কী লিখেছিস? একটা A পর্যন্ত ঠিকমতো লিখতে পারিস না?” তিনি সত্যিই অবাক হয়ে যেতেন।
তিনি আরও বলেন, “ও যখন পড়ত, তখন ‘for’ এর বদলে ‘from’ পড়ত। ও কোনও শব্দ দেখেই আন্দাজ করত—of, from, for—যেটা মনে হয় বলে দিত। ঠিকমতো পড়তে পারত না। আমি চেষ্টা করতাম ওকে বোঝাতে, কিন্তু আমিও কনফিউজড হয়ে যেতাম—এত সহজ জিনিস ও বুঝতে পারছে না কেন? পরে আমরা জানতে পারি, ও ডিসলেক্সিয়ায় ভুগছে। তখন থেকে আমরা ওকে সাহায্য করতে শুরু করি। কিন্তু যখন ছবিটার গল্প শুনি, মনে হয় আমারই গল্প শুনছি। এটা এতটাই কাছের একটা বিষয় ছিল।”
আরও পড়ুন: Salman Khan: নেই প্রাণের মায়া, রাস্তায় বেরিয়ে এলেন সলমন! অদ্ভুত কাণ্ড ভাইজানের
জুনেইদের নিজের বক্তব্য
চলতি বছরের জানুয়ারিতে জুনেইদ খান নিজেই তাঁর ডিসলেক্সিয়া নিয়ে কথা বলেন। তিনি জানান, তাঁর বাবা-মা—আমির খান ও রীনা দত্ত—‘তারে জমিন পার’ ছবির চিত্রনাট্য পড়ার সময় বুঝতে পারেন, ছবির শিশুটির অভিজ্ঞতা অনেকটা জুনেইদের মতো।
ভিকি লালওয়ানির সঙ্গে কথোপকথনে জুনেইদ বলেন, “আমার বাবা-মা কেউই আমার রেজাল্ট নিয়ে খুব কড়া ছিলেন না। আমি ছোটবেলাতেই ডিসলেক্সিয়া ধরা পড়েছিল। তাই ওঁরা সেটা মাথায় রেখেই স্কুলের বিষয়গুলো সামলাতেন।”
তারে জমিন পার-এর আবেগ এবার বাস্তব জীবনে। বাবা-ছেলের অকপট স্বীকারোক্তি মন ছুঁয়ে গেল সকলের।