ট্রাইব টিভি বাংলা ডিজিটাল: বিশ্বের সামনে (Afghanistan Water Crisis) এক ভয়াবহ বাস্তবতা দিন দিন স্পষ্ট হয়ে উঠছে জল সংকট। আর এই সংকটের প্রাথমিক বলি হতে চলেছে আফগানিস্তানের রাজধানী কাবুল। আন্তর্জাতিক গবেষণা ও পরিবেশ সংস্থাগুলির মতে, ২০৩০ সালের মধ্যেই কাবুল সম্পূর্ণভাবে জলশূন্য হয়ে পড়তে পারে। তখন এটি বিশ্বের প্রথম জলহীন আধুনিক শহরের তকমা পেতে পারে।
ভূগর্ভস্থ জলের স্তর বিগত দশকে ভয়াবহ হারে কমেছে (Afghanistan Water Crisis)
সংস্থা Mercy Corps-এর সাম্প্রতিক প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে, কাবুলের ভূগর্ভস্থ (Afghanistan Water Crisis) জলের স্তর বিগত দশকে ভয়াবহ হারে কমেছে। অবৈজ্ঞানিক এবং অনিয়ন্ত্রিতভাবে অতিরিক্ত জল উত্তোলনের ফলে ভূগর্ভস্থ জলস্তর ২৫ থেকে ৩০ মিটার নিচে নেমে গিয়েছে, যা এককথায় বিপজ্জনক।
পুনরায় মজুত হওয়ার কোনও সুযোগই পাচ্ছে না (Afghanistan Water Crisis)
এই শহরের পানীয় জলের মূল (Afghanistan Water Crisis) উৎস কুয়ো। কিন্তু আজকের দিনে শহরের প্রায় অর্ধেক কুয়ো একেবারে শুকিয়ে গিয়েছে। UNICEF-এর রিপোর্ট বলছে, প্রাকৃতিক ভাবে যে পরিমাণ জল মজুত হওয়ার কথা, তার চেয়ে বহু গুণ বেশি জল প্রতি বছর উত্তোলন করা হচ্ছে—যার পরিমাণ প্রায় ৪.৪ কোটি ঘনমিটার। এর ফলেই ভূগর্ভস্থ জল পুনরায় মজুত হওয়ার কোনও সুযোগই পাচ্ছে না।
ঋণের বোঝায় জর্জরিত
এছাড়াও, শহরের অধিকাংশ মানুষকে তাদের মাসিক আয়ের বিশাল একটি অংশ, কখনও কখনও ৩০ শতাংশ পর্যন্ত, খরচ করতে হচ্ছে শুধুমাত্র জল কেনার জন্য। যার ফলে বহু পরিবার ঋণের বোঝায় জর্জরিত হয়ে পড়ছে। শুধু জলস্বল্পতা নয়, কাবুলের সামনে আরও একটি বড় সমস্যা জলদূষণ। শহরের ৮০ শতাংশের বেশি ভূগর্ভস্থ জল এখন আর পানযোগ্য নয়। এই জলে মিশছে নর্দমার গন্ধ, আর্সেনিক এবং লবণাক্ততা যা জনস্বাস্থ্যের উপর মারাত্মক প্রভাব ফেলছে।
সুসংহত নীতির অভাব প্রকট
সমস্যার অন্যতম মূল কারণ হল তথ্যের ঘাটতি, সঠিক পরিকল্পনার অভাব এবং আন্তঃসংস্থাগত সমন্বয়ের দুর্বলতা। শহরে জল সংরক্ষণ বা বিতরণ নিয়ে দীর্ঘমেয়াদী কোনও সুসংহত নীতির অভাব প্রকট। ২০০১ সালে কাবুলের জনসংখ্যা ছিল মাত্র ১০ লক্ষের কম, যা এখন বেড়ে দাঁড়িয়েছে প্রায় ৬০ লক্ষে। যুদ্ধ, অভ্যন্তরীণ বাস্তুচ্যুতি এবং উন্নয়নের অভাবে শহরটির পরিকাঠামো এত দ্রুত জনসংখ্যা বৃদ্ধির সঙ্গে মানিয়ে নিতে পারেনি।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এখনই যদি সরকার, বেসরকারি সংস্থা ও আন্তর্জাতিক সংগঠনগুলি একসঙ্গে পদক্ষেপ না নেয়, তবে কাবুলের ভবিষ্যৎ অন্ধকার। ভূগর্ভস্থ জল সংরক্ষণ, জল ব্যবস্থাপনায় প্রযুক্তি নির্ভরতা এবং সামাজিক সচেতনতা ছাড়া এই শহরকে রক্ষা করা সম্ভব নয়।