ট্রাইব টিভি বাংলা ডিজিটাল: হেমতাবাদে ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তে (India-Bangladesh Border), প্রাচীন মিলন মেলা বন্ধের (Ancient Meeting Fair Stop) নির্দেশ দিল উত্তর দিনাজপুর জেলা প্রশাসন (North Dinajpur District Administration)। চিন্ময় কৃষ্ণ প্রভুর (Chinmay Krishna Prabhu) গ্রেফতারী এবং হিন্দুদের ওপর অত্যাচারের ঘটনায় বাংলাদেশ জুড়ে অশান্ত পরিস্থিতি। যার প্রভাব পড়ল এপার বাংলাতেও।
মিলন মেলা বন্ধের নির্দেশ (Ancient Meeting Fair Stop)
বহু বছর ধরে ডিসেম্বর মাসের প্রথম সপ্তাহে উত্তর দিনাজপুর (North Dinajpur) জেলার হেমতাবাদ ব্লকের ১ নম্বর চৈনগর গ্রাম পঞ্চায়েতে, ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তে (India-Bangladesh Border) অনুষ্ঠিত হয় মিলন মেলা। সেখানে উপস্থিত হতেন দুই বাংলার মানুষরা। মেলার পর যে যার দেশে ফিরে যেতেন। কিন্তু এবছর ছবিটা অন্যরকম। বাংলাদেশের অশান্ত পরিস্থিতির কারণে এই মিলন মেলা বন্ধ (Ancient Meeting Fair Stop) রাখার সীদ্ধান্ত নিয়েছে বিএসএফ ও ব্লক প্রশাসন (BSF and Block Administration)।
পাথর কালিপূজো উপলক্ষ্যে মিলনমেলা (Pathar Kali Puja festival)
এক সময় অবিভক্ত বাংলায় দিনাজপুরের পীরগঞ্জে ওই অংশে পাথর কালিপূজোকে (Pathar Kali Puja festival) কেন্দ্র করে বসত মেলা (Fair)। বর্তমানে সেই পাথর কালিপূজো বাংলাদেশের পীরগঞ্জে হয়ে থাকে। এই স্মৃতি আঁকড়ে ধরে হেমতাবাদ ব্লকের ১ নম্বর চৈনগর পঞ্চায়েতে বাংলাদেশ সীমান্তে (Bangladesh border) বসতো মিলন মেলা। বাংলাদেশের শতাব্দী প্রাচীন কালীপুজোকে কেন্দ্র করে কাঁটাতার মাঝে রেখে মিলিত হতেন দু’দেশের মানুষ। এলাকায় মুলত কৃষিজীবী ও দিনমজুরদের বসবাস। বছরে এই একটা দিন কিছু সময়ের জন্য ওপারের আত্মীয় পরিজনেদের সাথে দেখা হওয়ার সুযোগ হত। রীতি ছিলো, সীমানার দুই প্রান্ত থেকে প্রিয়জনেদের উপহার ছুড়ে দেওয়ার। কিন্তু এবছর বন্ধ থাকছে সেই মিলন মেলা (Ancient Meeting Fair Stop)।
আরও পড়ুন: Calcutta High Court: বাংলাদেশে সংখ্যালঘু নির্যাতন! কলকাতায় প্রতিবাদ কর্মসূচিতে অনুমতি হাইকোর্টের
ভারাক্রান্ত এলাকাবাসীর মন
এবছর এই মেলা হওয়ার কথা ছিল ৬ ডিসেম্বর (6TH December)। কিন্তু বাংলাদেশে অস্থির পরিস্থিতির (Unstable Situation In Bangladesh) কারণে এই বছর মেলা নিষিদ্ধ করেছে প্রশাসন (The Administration Has Banned The Fair)। কিছুটা হলেও মন বিষাদগ্রস্ত সীমান্তের বাসিন্দাদের। কারণ, এবারে আর দেখা হবে না ওপাড়ের প্রিয়জনেদের সঙ্গে। তবে হিন্দু-মুসলিম নির্বিশেষে সকলেই চাইছেন দ্রুত স্বাভাবিক হোক বাংলাদেশের পরিস্থিতি, আবারো কাঁটাতারে মিলিত হোক দুই দেশ।

আরও পড়ুন: Potato price hike: আরও বাড়তে পারে আলুর দাম! লাগাতার ধর্মঘটে আলু ব্যবসায়ীরা
সীমান্তে আঁটোসাঁটো নিরাপত্তা (Tight Security At The Border)
প্রশাসন সুত্রে খবর, সীমান্তে বিএসএফের নজরদারি বৃদ্ধির (BSF Surveillance On The Border) পাশাপাশি কাঁটাতার সংলগ্ন এলাকায় টহল দেবে হেমতাবাদ থানার পুলিস (Hemtabad police station)। বিশেষত ৬ ই ডিসেম্বর মিলন মেলার দিন কড়া নজরদারী (Strict Surveillance) চালানো হবে বলে জানানো হয়েছে পুলিশের তরফে। এছাড়াও যে এলাকায় মেলা হতো সেখানে ১৪৪ ধারা জারির (Section 144 Issued) জন্য জেলা প্রশাসনের থেকে অনুমতি চেয়েছিল বিএসএফ। ইতিমধ্যে সেই অনুমতিও দেওয়া হয়েছে বলে সূত্রের খবর। এদিকে প্রশাসনের এই সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়ে এলাকায় মাইক যোগে মিলন মেলা বন্ধের বিষয়ে প্রচার চালানো হচ্ছে স্থানীয় গ্রাম পঞ্চায়েতের তরফে। এমনকি এলাকার জন প্রতিনিধিরাও বাড়ি বাড়ি গিয়ে সাধারণ মানুষদের সচেতন করছেন।
জমায়েত ঠেকাতে জারি ১৪৪ ধারা (Section 144 Issued To Prevent Gatherings)
এ বছর মিলনমেলা বন্ধ থাকায় মন ভারাক্রান্ত সীমান্ত পারের বাসিন্দাদের। কাঁটাতার সংলগ্ন এলাকায় জমায়েত ঠেকাতে চলছে মাইকে প্রচার (Campaign Is Going On To Stop The Gathering)। সীমান্তে যাওয়ার আগেই মোতায়েন করা হয়েছে বাড়তি পুলিস (Additional Police Have Been Deployed)। সীমান্তে আঁটোসাঁটো নিরাপত্তা, জারি থাকবে ১৪৪ ধারা (Section 144 Will Continue)।