ট্রাইব টিভি বাংলা ডিজিটাল: পাকিস্তানের অশান্ত বালোচিস্তান প্রদেশে ফের প্রাণঘাতী হামলা (Balochistan Blast)। মঙ্গলবার সকালে মাস্তাং শহরে এক ভয়াবহ বিস্ফোরণে মৃত্যু হয়েছে অন্তত তিন পুলিশকর্মীর, আহত হয়েছেন আরও অন্তত ১৬ জন। প্রাদেশিক রাজধানী কোয়েটা থেকে প্রায় ৫০ কিলোমিটার দূরে এই বিস্ফোরণের ঘটনায় গোটা এলাকায় নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে।
কীভাবে হামলা? (Balochistan Blast)
বালোচিস্তান সরকারের মুখপাত্র শাহিদ রিন্দ জানিয়েছেন, পুলিশের একটি গাড়িকে লক্ষ্য করে ‘ইমপ্রোভাইজ়ড এক্সপ্লোসিভ ডিভাইস’ (আইইডি) ব্যবহার করে এই হামলা চালানো হয়েছে(Balochistan Blast)। হামলার সময় গাড়িটিতে থাকা পুলিশকর্মীরা একটি টহলদারির দায়িত্বে ছিলেন। বিস্ফোরণের তীব্রতায় গাড়িটি চুরমার হয়ে যায় এবং ঘটনাস্থলে অন্তত তিন জন পুলিশ সদস্য প্রাণ হারান। আহতদের মধ্যে দু’জনের অবস্থা আশঙ্কাজনক বলে জানা গিয়েছে।
ঘটনাস্থলে উদ্ধারকারী দল (Balochistan Blast)
ডেপুটি পুলিশ সুপার ইউনূস মাগসির দাবি, বিস্ফোরণে অন্তত ১৮ জন পুলিশকর্মী আহত হয়েছেন (Balochistan Blast)। বিস্ফোরণের তীব্রতায় আশপাশের দোকানপাট ও সাধারণ নাগরিকদেরও ক্ষতি হয়েছে কি না, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। ঘটনাস্থলে উদ্ধারকারী দল ও বম্ব স্কোয়াড পৌঁছেছে এবং এলাকা ঘিরে ফেলা হয়েছে।

আরও পড়ুন:US Iran Nuclear Talks : পরমাণু অস্ত্র তৈরি থেকে পিছু না হটলে সামরিক পদক্ষেপ, হুঁশিয়ারি ট্রাম্পের!
হামলার দায় স্বীকার করেনি কেউ (Balochistan Blast)
এই হামলার দায় এখনও পর্যন্ত কোনো জঙ্গি গোষ্ঠী স্বীকার করেনি। তবে বালোচিস্তানে সক্রিয় বালোচ বিদ্রোহীদের ভূমিকা নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করছে প্রশাসন। সম্প্রতি প্রদেশজুড়ে একাধিক হামলার জন্য বালোচিস্তান লিবারেশন আর্মি (BLA)-কে দায়ী করা হয়েছে।
‘জাফর এক্সপ্রেস’ অপহরণ (Balochistan Blast)
মাত্র মাসখানেক আগেই বোলান জেলার মাশকাফ সুড়ঙ্গে ‘জাফর এক্সপ্রেস’ ট্রেন অপহরণ করে বালোচ বিদ্রোহীরা। সেই ঘটনায় প্রায় ৩০ ঘণ্টা ধরে সেনা অভিযান চালিয়ে যাত্রীদের উদ্ধার করা হয়। পাক সেনা দাবি করে, অভিযানে সব বিদ্রোহী নিহত হয়েছে। কিন্তু বালোচ গোষ্ঠীর পাল্টা দাবি, সংঘর্ষে পাক সেনার অন্তত ৩০ জন নিহত হয়েছে। ওই ঘটনার পর বিদ্রোহীরা হুমকি দেয়, “পাক সেনা যদি আমাদের দমন করতে চায়, তাহলে ইসলামাবাদ হবে আমাদের পরবর্তী টার্গেট।”

ধারাবাহিক সেনা ও পুলিশের উপর হামলা (Balochistan Blast)
এরপর থেকেই বালোচিস্তানের বিভিন্ন অঞ্চলে ধারাবাহিক ভাবে সেনা (pak-army) ও পুলিশের উপর হামলা বেড়েছে। তুরবত শহরে সেনার কনভয়ে আইইডি হামলা, গ্বদর থেকে করাচিগামী বাস থামিয়ে পাঁচ যাত্রীকে হত্যা—এই সব ঘটনা স্পষ্ট করে দিচ্ছে, পরিস্থিতি ক্রমেই জটিল হয়ে উঠছে।
বঞ্চনার অভিযোগ (Balochistan Blast)
বিশ্লেষকদের মতে, দীর্ঘদিন ধরে বঞ্চনার অভিযোগ তুলে বালোচিস্তানে সক্রিয় বিদ্রোহী গোষ্ঠীগুলির কার্যকলাপ এখন আরও সংগঠিত ও আগ্রাসী হয়ে উঠছে। প্রাকৃতিক সম্পদে সমৃদ্ধ এই প্রদেশে দীর্ঘ সময় ধরে চলা দমন-পীড়ন এবং উন্নয়নের অভাব থেকেই এই বিদ্রোহের জন্ম।
বাড়ানো হচ্ছে নিরাপত্তা (Balochistan Blast)
সরকারি সূত্রে জানা গিয়েছে, এ ধরনের হামলা ঠেকাতে বালোচিস্তানে নিরাপত্তা বাহিনীর উপস্থিতি আরও বাড়ানো হচ্ছে এবং গোয়েন্দা তৎপরতা জোরদার করা হয়েছে। তবে স্থানীয় মানুষের মধ্যে নিরাপত্তাহীনতার যে অনুভূতি, তা কমছে না বলেই মত স্থানীয় প্রশাসনের।