Last Updated on [modified_date_only] by Anustup Roy Barman
ট্রাইব টিভি বাংলা ডিজিটাল: এই ক্ষেপণাস্ত্রটি ৫ ম্যাক গতিতে চলতে পারে, যা প্রতি ঘন্টায় প্রায় ৬১১২ কিমি (Beyond Visual Range Missile)। এবং এর সবচেয়ে বড় ক্ষমতা হল এটি প্রায় ১,০০০ কিলোমিটার দূর থেকে বিশ্বের সবচেয়ে আধুনিক জেট যেমন F-35, F-22 Raptor, B-21 Raider-কে আঘাত করতে পারে।
অপারেশন সিঁদুরে ব্রহ্মোসের সাফল্য (Beyond Visual Range Missile)
অপারেশন সিঁদুর চলাকালীন ভারতীয় সেনার ব্রহ্মোস ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহারে পাকিস্তানে যে ধ্বংসযজ্ঞ ঘটেছিল, তা সারা বিশ্বকে কাঁপিয়ে দিয়েছিল। সেই হামলার ক্ষতচিহ্ন আজও পাকিস্তানের কিছু অংশে দেখা যায় (Beyond Visual Range Missile)। ব্রহ্মোস ভারতের শক্তির প্রতীক হয়ে উঠেছিল।
ব্রহ্মোসের চেয়েও শক্তিশালী ক্ষেপণাস্ত্র? (Beyond Visual Range Missile)
কিন্তু এখন এক নতুন ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবস্থার কথা সামনে এসেছে, যা ব্রহ্মোসের তুলনায় শিশুসম বলে মনে করা হচ্ছে (Beyond Visual Range Missile)। এই ক্ষেপণাস্ত্র-এর এমন এক শক্তি রয়েছে, যা বিশ্বের সামরিক ভারসাম্যকে মারাত্মকভাবে প্রভাবিত করতে পারে।
কোন ক্ষেপণাস্ত্র? (Beyond Visual Range Missile)
দক্ষিণ চায়না মর্নিং পোস্টের এক প্রতিবেদন অনুযায়ী, চিনের বিজ্ঞানীরা একটি ‘বিয়ন্ড ভিজ্যুয়াল রেঞ্জ’ (BVR) ক্ষেপণাস্ত্রের সফল পরীক্ষা করেছে। এটি একটি এয়ার-টু-এয়ার ক্ষেপণাস্ত্র যার পাল্লা ১০০০ কিলোমিটার।
এই ক্ষেপণাস্ত্রের বিশেষত্ব কী?
বিশ্বের অনেক দেশের কাছেই BVR প্রযুক্তি রয়েছে। কিন্তু চিনের এই ক্ষেপণাস্ত্রের গতি ম্যাক ৫, অর্থাৎ ঘণ্টায় প্রায় ৬১১২ কিমি। এর সবচেয়ে বিপজ্জনক দিক হল, এটি F-35, F-22 র্যাপ্টর, B-21 রেইডার-এর মতো অত্যাধুনিক পঞ্চম প্রজন্মের যুদ্ধবিমানকে দূর থেকে ধ্বংস করতে সক্ষম। ফলে, চতুর্থ বা ৪.৫ প্রজন্মের যুদ্ধবিমান যেমন রাফাল বা সুখোইয়ের বিরুদ্ধে এর কার্যকারিতা সহজেই অনুমেয়।
আরও পড়ুন: Operation Shivshakti : কাশ্মীরে ফের অভিযান, এবার ‘অপারেশন শিবশক্তি’! সেনার গুলিতে নিহত ২
মোতায়েন হতে পারে যুদ্ধপ্রবণ এলাকায়
প্রতিবেদন অনুসারে, চিন এই নতুন অস্ত্রটিকে তাইওয়ান প্রণালী এবং দক্ষিণ চিন সাগরের মতো সম্ভাব্য সংঘর্ষের এলাকায় মোতায়েন করতে পারে। এটি বর্তমানে বিশ্বের সবচেয়ে উন্নত যুদ্ধাস্ত্রগুলির একটি হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।
কেন এত গুরুত্বপূর্ণ এই ক্ষেপণাস্ত্র?
BVR প্রযুক্তি নতুন নয়, কিন্তু এত দীর্ঘ পাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র তৈরি করা এখনও বিশ্বের সেরা বিজ্ঞানী ও সামরিক ইঞ্জিনিয়ারদের কাছে বড় চ্যালেঞ্জ। বর্তমানে রাশিয়ার R-37M এবং আমেরিকার AIM-174B এর পাল্লা ৩৫০-৪০০ কিমি। ভারতেরও নিজস্ব অ্যাস্ট্রা ক্ষেপণাস্ত্র রয়েছে, যার MK-3 সংস্করণ এখনও পরীক্ষার পর্যায়ে। ভারতের লক্ষ্য সেটির পাল্লা ৩৫০-৪০০ কিমি পর্যন্ত বাড়ানো। যদি চিনের দাবি সত্যি হয়, তাহলে এটি শুধু আঞ্চলিক নয়, বিশ্ব শক্তির ভারসাম্য পাল্টে দিতে পারে।
কতটা বিপজ্জনক এই ক্ষেপণাস্ত্র?
বিশেষজ্ঞদের মতে, এই ক্ষেপণাস্ত্র এতটাই শক্তিশালী যে, আধুনিক পঞ্চম প্রজন্মের যুদ্ধবিমান, AWACS ও AEW&C-এর মতো প্রতিরক্ষা ব্যবস্থাকেও অকেজো করে দিতে পারে। শত্রু আক্রমণ শুরু করার আগেই এই ক্ষেপণাস্ত্র তাদের ধ্বংস করতে পারবে।
ভারতের জন্য কতটা বিপদ?
চিনের এই নতুন অস্ত্র ব্যবস্থার ফলে ভারতের পাশাপাশি জাপান, তাইওয়ান ও আমেরিকার প্রতিরক্ষা কৌশলে বড়সড় প্রভাব পড়তে পারে। ভারতের পক্ষে এই পরিস্থিতিতে তাদের BVR ক্ষেপণাস্ত্রের পাল্লা বাড়ানো অত্যন্ত জরুরি হয়ে পড়েছে। ভারত ইতিমধ্যেই অ্যাস্ট্রা-১ এবং অ্যাস্ট্রা-২ তৈরি করেছে। তবে হাইপারসনিক অ্যাস্ট্রা-৩ এখনো তৈরির পর্যায়ে রয়েছে। DRDO ও ISRO যৌথভাবে কাজ করছে। ২০০০ সাল থেকে অ্যাস্ট্রা সিরিজের উপর কাজ চলছে, কিন্তু অগ্রগতি খুব ধীর। বর্তমানে শুধুমাত্র MK-1 ব্যবহারে রয়েছে, যার পাল্লা মাত্র ৮০-১১০ কিমি। এতে কিছু খামতিও পাওয়া গেছে। ২০২২ সালে প্রতিরক্ষা মন্ত্রক প্রায় ৩০০০ কোটি টাকায় এই ক্ষেপণাস্ত্র কিনতে সম্মতি দেয়। কিছু সুখোই-৩০ এমকেআই বিমানে এটি স্থাপন করা হয়েছে। অ্যাস্ট্রা-২ এখন প্রায় প্রস্তুতির শেষ ধাপে রয়েছে।
BVR প্রযুক্তি কী?
BVR বা Beyond Visual Range প্রযুক্তি এমন একটি ব্যবস্থা, যার মাধ্যমে পাইলট শত্রু বিমানের চেহারা না দেখেই দূর থেকে আঘাত হানতে পারে। সাধারণত একজন পাইলট খালি চোখে প্রায় ৩৭ কিমি দূরত্ব পর্যন্ত দেখতে পান। এই প্রযুক্তিতে উন্নত রাডার, সেন্সর এবং ন্যাভিগেশন সিস্টেম থাকে, যা নিজেই শত্রু খুঁজে বের করে এবং ‘ফায়ার অ্যান্ড ফরগেট’ ক্ষমতা রাখে। ভারতের অ্যাস্ট্রা ক্ষেপণাস্ত্র এই প্রযুক্তির উপর ভিত্তি করেই তৈরি। চিনের এই নতুন BVR ক্ষেপণাস্ত্র সত্যিই যদি কার্যকর হয়, তবে ভবিষ্যতের যুদ্ধে এটি এক Game-Changer হয়ে উঠতে পারে।