ট্রাইব টিভি বাংলা ডিজিটাল: পড়শি দেশ বাংলাদেশে ফের সংখ্যালঘু (Bhabesh Chandra Roy) হিন্দুদের উপর বর্বর হামলার ঘটনা সামনে এল। দিনাজপুর জেলার বাসুদেবপুর গ্রামে অপহরণ করে নৃশংসভাবে হত্যা করা হল হিন্দু সম্প্রদায়ের নেতা ভবেশচন্দ্র রায়কে। ঘটনায় বাংলাদেশ-ভারত কূটনৈতিক সম্পর্কে নতুন করে উত্তেজনা দেখা দিয়েছে।
জোর করে বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে যায় (Bhabesh Chandra Roy)
৫৮ বছর বয়সি ভবেশ ছিলেন বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদের বিরল ইউনিটের ভাইস (Bhabesh Chandra Roy) প্রেসিডেন্ট। স্থানীয় হিন্দুদের মধ্যে তিনি ছিলেন এক পরিচিত, জনপ্রিয় মুখ। তাঁর স্ত্রী শান্তনার অভিযোগ, বৃহস্পতিবার বিকেল ৪টা ৩০ মিনিটে এক অজ্ঞাত নম্বর থেকে তাঁদের বাড়িতে ফোন আসে। ওই ফোনেই ভবেশ বাড়িতে আছেন কি না, তা জানতে চাওয়া হয়। আধ ঘণ্টার মধ্যেই চারজন দুষ্কৃতী মোটরসাইকেলে এসে ভবেশকে জোর করে বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে যায়।
ভয়াবহ মারধর করা হয় (Bhabesh Chandra Roy)
স্থানীয় সংবাদমাধ্যম The Daily Star-এ শান্তনা জানান, অপহরণের পর ভবেশকে ন্যাড়াবাড়ি (Bhabesh Chandra Roy) এলাকায় নিয়ে গিয়ে ভয়াবহ মারধর করা হয়। এরপর তিনি অচৈতন্য হয়ে পড়লে তাঁকে একটি ভ্যানে করে বাড়িতে ফেরত পাঠানো হয়। পরিবারের সদস্যরা দ্রুত তাঁকে বিরল উপজেলা স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিয়ে যান, পরে তাঁকে দিনাজপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হলেও চিকিৎসকরা তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন।
দেহ ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে
পুলিশ সূত্রে খবর, ভবেশের দেহ ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে এবং মামলার প্রস্তুতি শুরু হয়েছে। বিরল থানার অফিসার ইনচার্জ আব্দুস সাবুর জানিয়েছেন, ঘটনার তদন্ত চলছে, এবং সন্দেহভাজনদের শনাক্ত করে গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে। শান্তনা জানিয়েছেন, তিনি দুই সন্দেহভাজনকে চিনতে পেরেছেন। তবে কী কারণে এই বর্বর খুন, তা এখনও স্পষ্ট নয়।

সংখ্যালঘু নির্যাতনের প্রশ্ন
এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে নতুন করে সংখ্যালঘু নির্যাতনের প্রশ্ন উঠেছে বাংলাদেশে। আগে থেকেই বিভিন্ন সময় হিন্দুদের উপর হামলা, মন্দিরে ভাঙচুর, জবরদখল, নিপীড়নের অভিযোগ উঠেছে। এবার সরাসরি একজন হিন্দু নেতাকে পিটিয়ে খুনের ঘটনায় উদ্বেগ বেড়েছে আন্তর্জাতিক মহলেও।
এর মধ্যে কূটনৈতিক স্তরেও চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। কিছুদিন আগেই বাংলাদেশ সরকার ভারতের মুর্শিদাবাদে ওয়াকফ বিরোধী অশান্তি নিয়ে প্রশ্ন তোলে। কিন্তু ভারতের বিদেশমন্ত্রকের মুখপাত্র রণধীর জয়সওয়াল সাফ জানিয়ে দেন, বাংলাদেশ নিজেই সংখ্যালঘুদের উপর অত্যাচার রুখতে ব্যর্থ। বরং ভবেশ রায়ের মতো ঘটনার পরে ভারতের দিকে আঙুল তুলে ঢাকা সরকার নজর ঘোরানোর চেষ্টা করছে।
দিল্লি ইতিমধ্যেই এই ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছে এবং বাংলাদেশ সরকারের কাছে দোষীদের কঠোর শাস্তি ও সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার দাবি জানিয়েছে। এই ঘটনায় বাংলাদেশে সংখ্যালঘু হিন্দুদের নিরাপত্তা আবার বড় প্রশ্নচিহ্নের মুখে।