ট্রাইব টিভি বাংলা ডিজিটাল: উত্তরপ্রদেশের কুশীনগরের পাকৌলি লালা গ্রামে(Bhojpuri Song In UP Wedding) এক মর্মান্তিক ঘটনা ঘটে গেল গত ১৯ ফেব্রুয়ারি। বিয়ের আসরে আনন্দের বদলে রক্তপাত। বিয়ে বাড়িতে ডিজে-তে ভোজপুরি গান বাজানো ঘিরে শুরু হয় তর্ক। শেষ পর্যন্ত কনের ভাইয়ের মৃত্যু পর্যন্ত গড়াল সেই সংঘর্ষ। বরযাত্রীর হাতে খুন হয়ে গেল কনের ভাই, গুরুতর আহত হয়েছে আর এক ভাই। বিয়ের মঞ্চে ঘটে যাওয়া এই নারকীয় কাণ্ডের পর থেকেই বেপাত্তা বর ও তাঁর পরিবারের একাধিক সদস্য।
ভোজপুরি গান ঘিরেই বিবাদ (Bhojpuri Song In UP Wedding)
পাকৌলি লালা গ্রামের বাসিন্দা লালমোহন পাসোয়ানের মেয়ে সঞ্জনার সঙ্গে দেওরিয়ার যোগিয়া রুদ্রপুর গ্রামের রাহুলের বিয়ে ঠিক হয়েছিল(Bhojpuri Song In UP Wedding)। ১৯ ফেব্রুয়ারি সন্ধ্যায় বরযাত্রী বরের সঙ্গে কনের বাড়িতে পৌঁছয়। সবকিছু ঠিকঠাকই চলছিল। ‘দ্বারপূজা’ ও ‘জয়মালা’-র মতো বিয়ের আচার-অনুষ্ঠানও হয়ে যায়। কিন্তু রাত ১০টা নাগাদ হঠাৎ পরিস্থিতি পরিবর্তন হয়ে যায়। ভোজপুরি গান ঘিরেই বিবাদ।
বরপক্ষের লোকজন মানেনি দাবি (Bhojpuri Song In UP Wedding)
বিয়ের আসরে ডিজে-তে ভোজপুরি গান(Bhojpuri Song In UP Wedding) বাজানো হচ্ছিল, যা কনের পরিবারের একাংশের পছন্দ হয়নি। তাঁরা চাইছিলেন গান বন্ধ হোক বা অন্তত অন্য ধরনের গান বাজানো হোক। কিন্তু বরপক্ষের লোকজন সে দাবি মানতে চাননি। উল্টে তাঁদের বক্তব্য ছিল, বরযাত্রীরা যা খুশি বাজাবেন, তাতে কনের পরিবার বাধা দিতে পারে না। এই নিয়ে দুই পক্ষের মধ্যে প্রথমে কথাকাটাকাটি এবং পরে মারামারি শুরু হয়।
ধারালো অস্ত্র দিয়ে কোপ
বিবাদ চরমে উঠলে কনের দুই ভাই অজয় পাসোয়ান, সত্যম পাসোয়ান এবং আত্মীয় রমা পাসোয়ানকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কোপ মারার অভিযোগ ওঠে(Bhojpuri Song In UP Wedding)। সঙ্গে সঙ্গে তিন জনকে স্থানীয় হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। সেখান থেকে তাদের গোরক্ষপুরের বড় হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। হাসপাতালে চিকিৎসা চলার সময় মৃত্যু হয় অজয়ের। সত্যমের অবস্থাও আশঙ্কাজনক বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকেরা।
আট জনকে আটক করেছে পুলিশ
ঘটনার পরই খবর দেওয়া হয় স্থানীয় থানায়। পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছলে দেখা যায়, বিয়ের আসর ফাঁকা। বর রাহুল এবং মূল অভিযুক্তরা পালিয়ে গিয়েছে। ইতিমধ্যেই আট জনকে আটক করেছে পুলিশ। তবে মূল অভিযুক্তদের এখনো খুঁজে পাওয়া যায়নি। বিয়ের আসরে এমন ভয়াবহ পরিস্থিতি তৈরি হল, তা ভেবে হতবাক গ্রামবাসীরা। পুলিশ জানিয়েছে, প্রাথমিক তদন্তে মনে করা হচ্ছে, বর ও কনের পরিবারের মধ্যে আগে থেকেই কিছু অসন্তোষ ছিল, যা বিয়ের দিন চরমে ওঠে।
আরও পড়ুন: Uttar Pradesh Budget 2025 : ‘ঐতিহাসিক’ বাজেট পেশ যোগী সরকারের, বাজেটে বরাদ্দ ৮.০৮ লক্ষ কোটি টাকা
আনন্দ মুহূর্তেই বদলে গেল কান্নায়
স্থানীয়দের বক্তব্য অনুযায়ী, রাহুল ও সঞ্জনার আসলে গত বছরই বিয়ে হয়েছিল। তবে রাহুলের বাবা প্রয়াত হওয়ায় সেবার বিয়ের বড় কোনো আয়োজন করা হয়নি। তাই এ বছর একসঙ্গে অনুষ্ঠান করে বিয়ের উৎসব পালন করছিল দুই পরিবার। কিন্তু সেই আনন্দ মুহূর্তেই বদলে গেল কান্নায়, শোকের ছায়ায়। পুলিশ আধিকারিকদের বক্তব্য, দ্রুত মূল অভিযুক্তদের গ্রেফতার করা হবে। পাশাপাশি, পুরো ঘটনার তদন্ত করে দেখা হচ্ছে, বিয়ের দিন কোনো আগ্নেয়াস্ত্র বা নিষিদ্ধ অস্ত্র ব্যবহার করা হয়েছিল কি না।