ট্রাইব টিভি বাংলা ডিজিটাল: মথুরার শাহী ইদগাহ মসজিদকে ‘বিতর্কিত সৌধ’ হিসাবে গণ্য করা হবে না। হিন্দু পক্ষের আবেদন খারিজ করে জানিয়ে দিয়েছে ইলাহাবাদ হাইকোর্ট(Mathura’s Shahi Idgah)।ফলে মথুরার শ্রীকৃষ্ণ জন্মভূমি এবং শাহী ইদগাহ বিবাদ মামলায় একটি বড়সড় ধাক্কা খেল হিন্দু পক্ষ।
শাহী ইদগাহ মসজিদ ঘিরে বিতর্ক (Mathura’s Shahi Idgah)
মথুরার শাহী ইদগাহ মসজিদ ঘিরে বিতর্ক দীর্ঘদিন ধরে চলছে(Mathura’s Shahi Idgah)। এই সংক্রান্ত একাধিক মামলা চলছে ইলাহাবাদ হাইকোর্টে।বিচারপতি রাম মনোহর নারায়ণ মিশ্রের একক বেঞ্চ এই মামলার শুনানি করছিল। তাঁর পক্ষ থেকে পরবর্তী শুনানির তারিখ দেওয়া হয়েছে। পরবর্তী শুনানি হবে ২ আগস্ট। ইলাহাবাদ হাইকোর্ট জানিয়েছে যে উপলব্ধ তথ্য এবং আবেদনের ভিত্তিতে, মথুরার শাহী ইদগাহকে এখনও বিতর্কিত কাঠামো হিসাবে ঘোষণা করা হয়নি। তবে ভবিষ্যতে করা যেতে পারে। অন্যদিকে, হিন্দু পক্ষ দাবি করেছে যে ইদগাহটি শ্রীকৃষ্ণের প্রাচীন জন্মস্থানে নির্মিত হয়েছিল। মন্দির ভেঙে এটি তৈরি য়েছিল। আপাতত, সকলের নজর পরবর্তী শুনানির দিকে।

হিন্দু পক্ষের আবেদন (Mathura’s Shahi Idgah)
হিন্দু পক্ষের আইনজীবী মহেন্দ্র প্রতাপ সিং জানিয়েছেন, চলতি বছরের ৫ মার্চ হাইকোর্টে মথুরার শাহী ইদগাহ মসজিদটিকে বিতর্কিত ঘোষণা করার দাবিতে একটি আবেদন করা হয়(Mathura’s Shahi Idgah)। ২৩ মে আদালতে এই বিষয়ে বিতর্ক সম্পন্ন হয় এবং আদালত নিজের রায় স্থির করে। সেই রায় শুক্রবার ঘোষণা করা হয়েছে।হিন্দু পক্ষের বক্তব্য, ‘আমরা হাইকোর্টকে বলেছিলাম যে আগে এখানে একটি মন্দির ছিল। অতীত দিনে যে যে এখানে মসজিদ ছিল সেই প্রমাণ আজ পর্যন্ত পাওয়া যায়নি। ইদগাহ মসজিদের পক্ষ আদালতে সেই প্রমাণ উপস্থাপন করতে পারেনি। এমন পরিস্থিতিতে কেন এটিকে মসজিদ বলা হবে? বরং এটিকে বিতর্কিত কাঠামো ঘোষণা করা উচিত। যেমন অযোধ্যা মামলার রায় দেওয়ার আগে, বাবরি মসজিদকে বিতর্কিত কাঠামো ঘোষণা করা হয়েছিল আদালতের পক্ষ থেকে। একইভাবে শাহী ইদগাহ মসজিদকেও বিতর্কিত ঘোষণা করা উচিত।’
আরও পড়ুন-Brutal Murder: রক্তে ভেসে যাচ্ছে বাড়ি! জোড়া হত্যাকাণ্ডে হুলুস্থল দিল্লি, তারপর…
মুসলিম পক্ষের আপত্তি (Mathura’s Shahi Idgah)
পাল্টা লিখিতভাবে আপত্তি জানায় মুসলিম পক্ষ(Mathura’s Shahi Idgah)। তাদের বক্তব্য, ওই জায়গাটিতে এই মুহূর্তে মসজিদই রয়েছে। তাতে কারও সংশয় নেই। তাই কোনওভাবেই সৌধটির সরকারি স্বীকৃতিতে কোনওরকম বদল করা যাবে না। ইলাহাবাদ হাইকোর্টের বিচারপতি রাম মনোহর নারায়ণ মিশ্রের বেঞ্চ ওই মামলায় হিন্দু পক্ষের আবেদন খারিজ করে দিয়েছে। মুসলিমদের আপত্তিকে গুরুত্ব দিয়ে ওই মসজিদকে ‘বিতর্কিত সৌধ’ হিসাবে চিহ্নিত করতে আপত্তি জানাল ইলাহাবাদ হাইকোর্ট।

আরও পড়ুন-SEBI: ভারতের বাজারে ৪৮৪৩ কোটি টাকার অপশন জালিয়াতি; সেবির কোপে মার্কিন ট্রেডিং ফার্ম
ইতিহাসবিদদের দাবি (Mathura’s Shahi Idgah)
এই বিরোধটি মথুরার কাটরা কেশব দেব এলাকার ১৩.৩৭ একর জমি নিয়ে (Mathura’s Shahi Idgah)। সেখানে মন্দির এবং মসজিদ উভয়ই নির্মিত। তথ্য অনুযায়ী, মোট জমির মধ্যে ১১ একর শ্রী কৃষ্ণ জন্মভূমি, বাকি জমিটি ইদগাহ বলে দাবি করা হচ্ছে। হিন্দু পক্ষ সমগ্র জমিটিকে শ্রীকৃষ্ণ জন্মভূমি বলে দাবি করেছে। হিন্দু পক্ষের মতে, ১৬৭০ সালে ঔরঙ্গজেব শ্রীকৃষ্ণ জন্মভূমিতে নির্মিত মন্দিরটি ভেঙে শাহী ঈদগাহ মসজিদ নির্মাণ করেছিলেন।ইতিহাসবিদদের একাংশের দাবি, ১৯৩৫ সালে ওই মন্দির চত্বরের মালিকানা মথুরার রাজার হাতে সঁপে দেওয়া হয়। পর্যায়ক্রমে সেই সত্ব বর্তায় বিশ্ব হিন্দু পরিষদের ঘনিষ্ঠ শ্রী কৃষ্ণভূমি ট্রাস্টের হাতে। ফলে স্বাভাবিকভাবেই দুই পক্ষের মধ্যে তৈরি হয় সংঘাত। অবশেষে ১৯৬৮ সালে এক চুক্তির মাধ্যমে জমির মালিকানা হিন্দু পক্ষের হাতে থাকলেও মসজিদটির রক্ষণাবেক্ষণ করার অধিকার পায় মুসলিম পক্ষ।
