ট্রাইব টিভি বাংলা ডিজিটাল: যুদ্ধ থেকে দেশাত্মবোধ ও হিন্দুত্বের ফয়দা তুলতে চাইছে বিজেপি? কলকাতায় বিজেপির তেরাঙ্গা যাত্রা নিয়ে সার্কুলার জারি দলের। কলকাতা সহ রাজ্যের প্রতিটি জেলা ও ব্লকে ১৭-২৩ মে পর্যন্ত এই মিছিল হবে। ছাব্বিশের বিধানসভা ভোটের প্রাক্কালে বিজেপির এই যাত্রা জনমানসে বিস্তার প্রভাব ফেলবে বলেই মত রাজনৈতিক মহলের।
মিছিলের রূপরেখা (BJP Tiranga Yatra)
দলের তরফে জারি করা সার্কুলারে স্পষ্ট জানানো হয়েছে—মিছিলে (BJP Tiranga Yatra) বিজেপির কোনও প্রতীক বা পতাকা থাকবে না। এর পরিবর্তে থাকবে লম্বা জাতীয় পতাকা, দেশাত্মবোধক গান, সেনা-অভিযানের প্রতীক এবং প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির ছবি। স্লোগান থাকবে, “আমরা অপারেশন সিঁদুর-এর সাথে”। এই যাত্রায় অংশগ্রহণ করবেন প্রাক্তন সেনা ও তাঁদের পরিবার, কলেজ-স্কুলের ছাত্রছাত্রী এবং হিন্দু ধর্মীয় সাধু-সন্তরাও। এই বহুমাত্রিক উপস্থাপন একটি বিস্তৃত সামাজিক আবেগকে স্পর্শ করতে চাইছে, তা বলাই বাহুল্য।
আরও পড়ুন: John Barla joined TMC: ছাব্বিশের নির্বাচনের আগে বড় ধাক্কা পদ্ম শিবিরে, তৃণমূলে যোগ জন বার্লা
দেশপ্রেমে মোড়ানো রাজনৈতিক প্রচার? (BJP Tiranga Yatra)
বিশ্লেষকদের মতে, এটি নিছক দেশপ্রেমের বহিঃপ্রকাশ নয়, বরং একটি সুশৃঙ্খল রাজনৈতিক বার্তা। বিজেপি অতীতে বারবার দেশাত্মবোধকে তাদের প্রচারের অন্যতম হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করেছে—বালাকোট এয়ার স্ট্রাইক হোক বা সার্জিকাল স্ট্রাইক। এবারেও ‘অপারেশন সিঁদুর’-এর আবেগকে ব্যবহার করে জাতীয় নিরাপত্তা ও মোদী সরকারের কৃতিত্ব তুলে ধরা হচ্ছে।
সাধু-সন্তের অন্তর্ভুক্তি কি কৌশলগত বার্তা? (BJP Tiranga Yatra)
যদিও ‘তেরঙ্গা যাত্রা’-তে দলীয় প্রতীক বাদ রাখা হয়েছে, তবুও সাধু-সন্তদের মিছিলে টেনে আনা একটি স্পষ্ট হিন্দুত্ববাদী বার্তা বহন করে। বিজেপির দীর্ঘদিনের আদর্শ—‘হিন্দু জাতীয়তাবাদ’—এই ধরনের অভিযানে লুকিয়ে থাকা থাকে। এতে ‘দেশপ্রেম’ ও ‘ধর্মীয় আবেগ’ একসঙ্গে মিশে গিয়ে একটি শক্তিশালী জনমত গঠনের চেষ্টা চলছে বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহল।

ভোট কৌশলের মুখোশ? (BJP Tiranga Yatra)
বিজেপির এই তেরঙ্গা যাত্রা একদিকে জাতীয়তাবাদ, অন্যদিকে হিন্দুত্ববাদ—দুটিকেই কৌশলে ব্যবহার করছে বলে ধারণা। যুদ্ধ ও সেনাবাহিনীর প্রতি মানুষের আবেগকে হাতিয়ার করে একটি সুশৃঙ্খল ‘অরাজনৈতিক আবরণে মোড়া রাজনৈতিক বার্তা’ ছড়িয়ে দিতে চাইছে দল। ভোটের আগের মুহূর্তে এই প্রচার ঠিক কতটা প্রভাব ফেলবে, তা সময় বলবে। তবে বর্তমানে রাজ্য রাজনীতিতে এর প্রভাব অস্বীকার করা যাচ্ছে না।