ট্রাইব টিভি বাংলা ডিজিটাল: ‘অপারেশন সিঁদুর’-এর মাধ্যমে বিশ্বের নজর কেড়েছে ভারতের প্রতিরক্ষা ক্ষমতা(Nuclear Warhead)। বিশেষ করে, এই অভিযানে ব্যবহৃত সুপারসনিক ক্রুজ ক্ষেপণাস্ত্র ‘ব্রহ্মস’ নিয়ে আন্তর্জাতিক পরিসরে একাধিক শোরগোল উঠেছে। রাশিয়ার সঙ্গে যৌথভাবে নির্মিত এই অত্যাধুনিক অস্ত্রকে ঘিরে এবার একটি নতুন পাঁচ দফা উন্নয়ন পরিকল্পনায় এগোচ্ছে ভারত ও রাশিয়া— যার প্রভাবে কাঁপতে পারে পাকিস্তান তো বটেই, চীনও।
ব্রহ্মস ও অপারেশন সিঁদুর (Nuclear Warhead)
‘অপারেশন সিঁদুর’ ছিল ভারতের প্রতিরক্ষা কৌশলের এক নিখুঁত রূপায়ণ(Nuclear Warhead)। এ অভিযানে ব্রহ্মস ক্ষেপণাস্ত্রের নিখুঁত টার্গেটিং ক্যাপাবিলিটি নজর কেড়ে নেয় গোটা বিশ্বের। এই অপারেশনের সময় থেকেই মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের শীর্ষ মহলে উদ্বেগ তৈরি হয়। ওয়াল স্ট্রিট জার্নালের সাম্প্রতিক এক প্রতিবেদন অনুযায়ী, তৎকালীন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প (Donald J. Trump) উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছিলেন, কারণ মার্কিন গোয়েন্দা রিপোর্টে দাবি করা হয়— ভারত তার ব্রহ্মস ক্ষেপণাস্ত্রে নাকি পরমাণু ওয়ারহেড যুক্ত করেছে।
রিপোর্টে আরও বলা হয়েছে, অপারেশন সিঁদুরের সময় ভারত এই পরমাণু-সক্ষম ব্রহ্মস পাকিস্তানের সীমান্তে মোতায়েন করে, এবং প্রয়োজনে তা ব্যবহারের কথাও ভাবা হয়। স্বাভাবিকভাবেই, বিষয়টি আন্তর্জাতিক কূটনৈতিক স্তরে স্পষ্ট উদ্বেগের সৃষ্টি করে।
ব্রহ্মস একটি যুগান্তকারী অস্ত্র (Nuclear Warhead)
ভারতের ‘ডিআরডিও’ (Defence Research and Development Organisation) এবং রাশিয়ার ‘NPO Mashinostroyenia’-র যৌথ উদ্যোগে তৈরি ব্রহ্মস ক্ষেপণাস্ত্র বিশ্বের অন্যতম দ্রুতগতিসম্পন্ন সুপারসনিক ক্রুজ মিসাইল(Nuclear Warhead)।
নামকরণ: ব্রহ্মপুত্র ও মস্কোভা নদীর সংযোগে তৈরি নাম ‘ব্রহ্মস’।
বর্তমান বৈশিষ্ট্য:
- গতি: শব্দের ৩ গুণ (Mach 3)
- পাল্লা: ২৯০ কিমি – ৪০০ কিমি পর্যন্ত
- মাধ্যম: স্থল, জল, বায়ু ও সাবমেরিন
- ওজন: বায়ুবাহিত সংস্করণ ~১২০০ কেজি, স্থলভিত্তিক ~৩০০০ কেজি
- ধ্বংসক্ষমতা: ৩০০ কেজি বিস্ফোরক, কনভেনশনাল এবং সম্ভাব্য নিউক্লিয়ার ওয়ারহেড সহ

নতুন পাঁচ দফা পরিকল্পনায় কী কী বদল আসছে? (Nuclear Warhead)
১. পাল্লা বৃদ্ধি:
ব্রহ্মসের পাল্লা বাড়িয়ে ৮০০ কিমি করা হচ্ছে। ফলে ভারতের প্রতিপক্ষ রাষ্ট্রগুলির গভীরে ঢুকে হামলা চালানো সম্ভব হবে(Nuclear Warhead)।
- গতিবেগ বৃদ্ধি:
সুপারসনিক থেকে হাইপারসনিক স্তরে (Mach 5+) উন্নীত করার পরিকল্পনা চলছে। এর ফলে প্রতিপক্ষের রাডার বা প্রতিরক্ষা ব্যবস্থাকে ফাঁকি দিয়ে হানা দেওয়ার ক্ষমতা বহুগুণে বাড়বে। - নতুন হালকা সংস্করণ:
নতুন ভার্সনে ব্রহ্মসের ওজন ১০০০ কেজিরও কম হবে। এর ফলে তেজস, রাফাল-এর মতো হালকা যুদ্ধবিমান থেকেও একে উৎক্ষেপণ করা যাবে। - বিস্ফোরকের ক্ষমতা বৃদ্ধি:
নতুন সংস্করণে আরও শক্তিশালী বিস্ফোরক বসানোর পরিকল্পনা রয়েছে। এর ফলে একটি ক্ষেপণাস্ত্রই অনেক বেশি এলাকা ধ্বংস করতে সক্ষম হবে। - সাবমেরিন সংস্করণের উন্নয়ন:
P-751 সাবমেরিন প্রকল্পের অধীনে ডুবোজাহাজ থেকে উৎক্ষেপণযোগ্য ব্রহ্মসকে আরও নিখুঁত ও ভয়ঙ্কর করে তোলা হবে।
আন্তর্জাতিক প্রতিক্রিয়া ও শঙ্কা (Nuclear Warhead)
ওয়াল স্ট্রিট জার্নাল যে রিপোর্ট প্রকাশ করেছে, তাতে ট্রাম্প প্রশাসনের উদ্বেগ স্পষ্ট(Nuclear Warhead)। পরমাণু ওয়ারহেড যুক্ত ব্রহ্মস যদি সত্যিই বাস্তবায়িত হয়, তবে তা ভারতের কৌশলগত প্রতিরক্ষা নীতির বড় এক পরিবর্তনকে নির্দেশ করে। যদিও নয়াদিল্লি বা মস্কো— কোনও পক্ষই এখনও পর্যন্ত ব্রহ্মসে পারমাণবিক ওয়ারহেড যুক্ত করার কথা স্বীকার করেনি।

আরও পড়ুন: Bangladesh Election : ফ্রেব্রুয়ারি তে সাধারণ নির্বাচন বাংলাদেশে! নির্বাচন কমিশনকে চিঠি দিল ইউনূস
প্রতিবেশী চীন-পাকিস্তান উদ্বেগে ভুগছে (Nuclear Warhead)
ব্রহ্মসের নতুন সংস্করণ ভারতীয় সেনার হাতে এলে তা পাকিস্তানের সব সামরিক ঘাঁটি এবং চীনের বহু গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা অনায়াসেই ধ্বংস করতে পারবে। এমনকি চীনের দক্ষিণ তিব্বতের রণাঙ্গনও ভারতীয় ব্রহ্মসের আওতায় চলে আসবে(Nuclear Warhead)।
‘অপারেশন সিঁদুর’-এর মতো সফল কৌশলের মাধ্যমে ভারত শুধু নিজের প্রতিরক্ষা ক্ষমতাকেই দৃঢ় করেনি, বরং আন্তর্জাতিক পরিসরেও তার কূটনৈতিক অবস্থান দৃঢ়তর করেছে। ব্রহ্মসকে কেন্দ্র করে ভারতের এই নতুন কর্মপরিকল্পনা ভবিষ্যতের যুদ্ধনীতি, কৌশল এবং প্রতিরক্ষা প্রযুক্তির ক্ষেত্রে এক যুগান্তকারী দৃষ্টান্ত হয়ে উঠতে চলেছে।