ট্রাইব টিভি বাংলা ডিজিটাল: স্বামীকে পাকিস্তানের বন্দিদশা থেকে মুক্ত (BSF Jawan) করার তাগিদে অন্তঃসত্ত্বা শরীর নিয়েই পঠানকোটের পথে রওনা দিলেন হুগলির রিষড়ার রজনী সাউ। বিএসএফ জওয়ান পূর্ণম কুমার সাউয়ের স্ত্রী রজনী এবার নিজের হাতে স্বামীর খোঁজ নিতে চান। সঙ্গে রয়েছেন তাঁদের আট বছরের ছেলে আরব, যিনি সোমবার সকালে মায়ের সঙ্গে চণ্ডীগড়ের উদ্দেশে রওনা দেন। গলায় রুদ্রাক্ষের মালা, কপালে গেরুয়া টিপ আর পছন্দের সাইকেল হাতে আরব বলে ওঠে, “বাবাকে আনতে যাচ্ছি। পাকিস্তান বাবাকে ছেড়ে দিক, আর কিছু চাই না।”
সূত্রের খবর (BSF Jawan)
পূর্ণম কুমার সাউ বিএসএফের ২৪ নম্বর ব্যাটেলিয়নের (BSF Jawan) কনস্টেবল। পঠানকোটের ফিরোজপুর সীমান্তে কর্তব্যরত অবস্থায় গত বুধবার পাকিস্তানের পাঞ্জাব প্রদেশে অনিচ্ছাকৃতভাবে প্রবেশ করেন। সূত্রের খবর, একটি গাছের তলায় বিশ্রাম নেওয়ার সময় পাকিস্তানি রেঞ্জার্স তাঁকে আটক করে। তারপর থেকেই সাউ পরিবার উৎকণ্ঠায় দিন কাটাচ্ছে। ছ’দিন কেটে গেলেও সরকারি স্তরে সন্তোষজনক কোনও তথ্য মেলেনি বলে অভিযোগ রজনীর।
প্রয়োজনে দিল্লি যাব (BSF Jawan)
রবিবার সকালে কলকাতা বিমানবন্দরের পথে রওনা (BSF Jawan) হওয়ার আগে রজনী বলেন, “১৭ বছরের অভিজ্ঞ বিএসএফ জওয়ান ভুল করে সীমান্ত পার করল, এটা বিশ্বাসযোগ্য নয়। কিছু না কিছু লুকোনো হচ্ছে বলেই মনে হচ্ছে। আমি পঠানকোটে গিয়ে অফিসারদের সঙ্গে সরাসরি কথা বলব, প্রয়োজনে দিল্লি যাব।”
সঙ্গে দুই বোন ও ভাই
অন্তঃসত্ত্বা অবস্থায় এমন কঠিন যাত্রায় রওনা দিলেও রজনী বলেন, “যখন স্বামী শত্রু দেশে বন্দি, তখন ঘরে বসে থাকার সময় নয়। কেউ নিশ্চিন্তে থাকতে পারবে না এমন অবস্থায়। তাই বাধ্য হয়েই পথে নামতে হয়েছে।” সঙ্গে রয়েছেন তাঁর দুই বোন ও ভাই।

মুক্তির সম্ভাবনা নিয়েই মূল আলোচনা
সোমবার দুপুরে তাঁরা কলকাতা থেকে বিমানে চণ্ডীগড় রওনা হন। সেখান থেকে সড়কপথে পৌঁছন পঠানকোটে, যেখানে ২৪ নম্বর ব্যাটেলিয়নের কর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করবেন তাঁরা। স্বামীর বর্তমান অবস্থান ও মুক্তির সম্ভাবনা নিয়েই হবে মূল আলোচনা। এদিকে পূর্ণমের রিষড়ার বাড়িতে ক্রমাগত ভিড় করছেন রাজনৈতিক নেতারা ও প্রতিবেশীরা। আশ্বাস মিলছে প্রশাসনের তরফ থেকেও, বিএসএফ জানিয়েছে—পূর্ণমের মুক্তির জন্য কূটনৈতিক স্তরে চেষ্টা চালানো হচ্ছে। তা সত্ত্বেও পরিবারের উদ্বেগ কিছুতেই কাটছে না।
আরও পড়ুন: Youtube Channel Banned: পাক ইউটিউব চ্যানেলের উপর ভারতের নিষেধাজ্ঞা!
একদিকে প্রশাসনিক প্রক্রিয়া, অন্যদিকে এক স্ত্রীর অকুণ্ঠ সাহসিকতা ও এক শিশুর আবেগমথিত আকুতি—এই ঘটনায় যেন সম্পূর্ণ এক মানবিক ছবিই ফুটে উঠছে। রজনীর আশা, তাঁর যাত্রা সফল হবে এবং পূর্ণম শীঘ্রই ফিরে আসবেন নিজের পরিবারের কাছে।