ট্রাইব টিভি বাংলা ডিজিটাল: আরজি কর আন্দোলনের অন্যতম মুখ তথা জুনিয়র চিকিৎসক অনিকেত মাহাতোর বদলি সংক্রান্ত মামলায় রাজ্যের কাছে আগামী সোমবার হলফনামা চাইল কলকাতা হাইকোর্ট(Calcutta High Court)। বাকি দুই চিকিৎসক দেবাশিস হালদার ও আসফাকুল্লা নাইয়ার মামলাতেও আগামী সোমবারের মধ্যে রিপোর্ট দিতে হবে রাজ্যকে, নির্দেশ হাইকোর্টের। পাশাপাশি বিচারপতি বিশ্বজিৎ বসু রাজ্যকে মৌখিকভাবে পরামর্শ দিয়েছেন, চিকিৎসক অনিকেত মাহাতো যদি বদলি না নেন তাহলে আগামী এক সপ্তাহ তাঁর বিরুদ্ধে কোনও পদক্ষেপ করা যাবে না। এবং আরজি কর হাসপাতালে অ্যানাস্থেশিয়া বিভাগে যে একটি শূণ্যপদ অবশিষ্ট রয়েছে, সেখানে যেন আপাতত কোনও নিয়োগ করা না হয়(Calcutta High Court)।
রাজ্যের অ্যাডভোকেট জেনারেলের আশ্বাস (Calcutta High Court)
রাজ্যের অ্যাডভোকেট জেনারেল কিশোর দত্ত আদালতকে মৌখিকভাবে এই বিষয়ে আশ্বস্ত করেছেন(Calcutta High Court)। ‘মেধার ভিত্তিতে পোস্টিং হয় নাকি যেখানে পছন্দ হয় সেখানেই পাঠিয়ে দেওয়া হয়? তিন চিকিৎসককে পোস্টিংয়ের সিদ্ধান্ত কী ভাবে বা পোস্টিংয়ের পদ্ধতির ন্যায্যতা কী ভাবে প্রমাণ করবেন!’- রাজ্যের উদ্দেশ্যে প্রশ্ন বিচারপতি বিশ্বজিৎ বসুর। আগামী মঙ্গলবার এই মামলার পরবর্তী শুনানি।
কী অভিযোগ ছিল? (Calcutta High Court)
কাউন্সেলিং যে পোস্টিংয়ের কথা বলা হয়েছিল কিন্তু আরজি কর আন্দোলনের অন্যতম তিন মুখ তথা জুনিয়র চিকিৎসক অনিকেত মাহাতো, দেবাশিস হালদার এবং আসফাকুল্লা নাইয়ার পোস্টিং অন্যত্র দেওয়া হয়(Calcutta High Court)। অভিযোগ, বাকিদের ক্ষেত্রে কাউন্সিলিঙে যে পোস্টিংয়ের কথা বলা হয়েছিল সেখানেই পোস্টিং দেওয়া হলেও শুধুমাত্র এই তিনজনের ক্ষেত্রে তা হয়নি। স্বাস্থ্য দফতরের এই নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করে কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিলেন এই তিন জুনিয়র চিকিৎসক। দেবাশিস হালদার এবং আসফাকুল্লা নাইয়া আলাদা করে হাইকোর্টে মামলা দায়ের করেছিলেন। আবার অনিকেত মাহাতোও পোস্টিংয়ে সিদ্ধান্তকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন।

বিশ্বজিৎ বসুর এজলাসে মামলার শুনানি (Calcutta High Court)
সোমবার অনিকেত মাহাতোর আবেদনের মামলার শুনানি ছিল বিচারপতি বিশ্বজিৎ বসুর এজলাসে(Calcutta High Court)। অনিকেতের আইনজীবী আদালতে জানান, তাঁর মক্কেলের মামলা যেহেতু বিচারাধীন, তাই তাঁর জন্য আরজি কর হাসপাতালে একটি আসন এখন খালি রাখা হোক। অনিকেতের আইনজীবী আদালতে আরও জানান, আরজি কর হাসপাতালে অ্যানাস্থেশিয়া বিভাগে ৪টি শূন্যপদ আছে। তার মধ্যে ২টি শূন্যপদে ২৬ এবং ৩৪ র্যাঙ্ক করা দুই চিকিৎসককে নিয়োগ করা হয়েছে। অথচ অনিকেত নিয়োগ পাননি। পাশাপাশি অনিকেতের আইনজীবী এদিন আদালতে আবেদন করেন, যেন তাঁর মক্কেলের বিরুদ্ধে কোনও শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া না হয়। আর মামলা চলাকালীন যেন তাঁকে আরজি কর হাসপাতালেই কাজ করতে দেওয়া হয়(Calcutta High Court)।
আরও পড়ুন: Iran Israel Conflict : ইরান-ইজরায়েল সংঘাতের জেরে সঙ্কটে ১০ হাজার ভারতীয় পড়ুয়া, উদ্বেগে পরিবার
বিচারপতির পর্যবেক্ষণ (Calcutta High Court)
তার জবাবে রাজ্যের অ্যাডভোকেট জেনারেল পাল্টা সওয়াল করে বলেন, স্নাতকোত্তর পরীক্ষায় অনিকেত মাহাতোর র্যাঙ্ক ছিল ২৪। তাই মেধার ভিত্তিতে আরজি করেই তাঁকে পোস্টিং দিতে হবে এই দাবি তিনি কি করে করেন!’ অনিকেতের আইনজীবীর এই বক্তব্য শুনে বিচারপতি বিশ্বজিৎ বসু পোস্টিংয়ের পদ্ধতি কী এবং পোস্টিঙের পদ্ধতির ন্যায্যতা কিভাবে প্রমাণ হবে, সেই প্রশ্ন তোলেন। বিচারপতি বসু রাজ্যের উদ্দেশ্যে অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ পর্যবেক্ষণে বলেন, ‘মেধার ভিত্তিতে পোস্টিং হয় নাকি যেখানে পছন্দ হয় সেখানেই পাঠিয়ে দেওয়া হয়? তিন চিকিৎসককে পোস্টিংয়ের সিদ্ধান্ত বা পোস্টিংয়ের পদ্ধতির ন্যায্যতা কী ভাবে প্রমাণ করবেন?’
সোমবার হলফনামা জমা দেওয়ার নির্দেশ (Calcutta High Court)
বিচারপতি বিশ্বজিৎ বসু এদিন রাজ্যকে আগামী সোমবার এই বিষয়ে হলফনামা জমা দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন(Calcutta High Court)।পাশাপাশি দেবাশিস হালদার এবং আসফাকুল্লা নাইয়ার মামলাতেও রাজ্যকে আগামী সোমবার রিপোর্ট জমা দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে আদালত। পাশাপাশি রাজ্যকে বিচারপতি বিশ্বজিৎ বসু মৌখিকভাবে জানিয়েছেন, অনিকেত মাহাতো যদি এখনই বদলি না নেন তাহলে তাঁর বিরুদ্ধে কোনও কড়া পদক্ষেপ করা যাবে না। এবং আরজি কর হাসপাতালের অ্যানাস্থেশিয়া বিভাগের একটি শুন্যপদ খালি রাখতেও বলেছেন। সেখানে এখনই কোনও নিয়োগ না করার পরামর্শ দিয়েছেন। এ বিষয়ে এজি আদালতকে মৌখিকভাবে আশ্বস্তও করেছেন। আগামী মঙ্গলবার এই মামলার পরবর্তী শুনানি।