ট্রাইব টিভি বাংলা ডিজিটাল : কাঁকুড়গাছিতে বিজেপি কর্মী অভিজিৎ সরকারের খুনে ভোট পরবর্তী হিংসার মামলায় সিবিআই-এর থেকে রিপোর্ট তলব করল কলকাতা হাইকোর্ট (Calcutta High Court)। আগামী চার দিনের মধ্যে দুই পুলিশ কর্মীকে গ্রেফতারের ঘটনার ব্যাখ্যা দিয়ে হাইকোর্টে রিপোর্ট জমা দিতে হবে সিবিআই-কে। আগামী শুক্রবার আবারও এই মামলার শুনানি।
‘রক্ষকই ভক্ষক হয়ে গেলে সমাজের কী হবে?’ (Calcutta High Court)
এই মামলায় সিবিআই-এর চার্জশিটে নাম থাকা নারকেলডাঙ্গা থানার তৎকালীন ওসি শুভজিৎ সেন, সাব-ইন্সপেক্টর রত্না সরকার এবং হোমগার্ড দীপঙ্কর দেবনাথকে তথ্য-প্রমাণে লোপাটের চেষ্টার অভিযোগে ৩১ জুলাই পর্যন্ত জেল হেফাজতের নির্দেশ দেয় নিম্ন আদালত।তাঁদের জেল হেফাজতে পাঠানোর নির্দেশ দিয়ে নিম্ন আদালতের (Calcutta High Court) বিচারক মন্তব্য করেছিল, ‘রক্ষকই ভক্ষক হয়ে গেলে সমাজের কী হবে?’
চারদিনের ডেডলাইন বেঁধে দিল হাইকোর্ট (Calcutta High Court)
গত সোমবার রত্না সরকার এবং দীপঙ্কর দেবনাথ জামিনের আবেদন করে কলকাতা হাইকোর্টের (Calcutta High Court) দ্বারস্থ হন। সেই মামলায় মঙ্গলবার রত্না সরকার এবং দীপঙ্কর দেবনাথের গ্রেফতারের ঘটনায় সিবিআই-এর থেকে রিপোর্ট তলব করলেন বিচারপতি শুভ্রা ঘোষ। বিচারপতি রিপোর্ট তলব করলে সিবিআই-এর আইনজীবী আদালতে ৭ দিন সময় চান। তখন তার তীব্র বিরোধিতা করেন রাজ্যের আইনজীবী কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি সওয়ালে বলেন, এই ঘটনায় চার বছর পর সিবিআই হঠাৎ অতিরিক্ত চার্জশিট দিয়েছে। পুলিশ কর্মীদের গ্রেফতার করা হয়েছে। এখন তাঁদের হেফাজতে রাখতে সময় চাওয়া হচ্ছে। সব পক্ষের বক্তব্য শুনে আদালত (Calcutta High Court) সিবিআই-কে চার দিনের মধ্যে রিপোর্ট জমা দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে। আগামী শুক্রবার আবারও এই মামলার শুনানি।
আরও পড়ুন : Weather Update: দক্ষিণবঙ্গে ফের ঘনিয়ে আসছে দুর্যোগ, বৃষ্টির পূর্বাভাস দিল হাওয়া অফিস
ভোট পরবর্তী হিংসার বলি হন অভিজিৎ সরকার
২০২১ সালের ২ মে বিধানসভা নির্বাচনের ফল প্রকাশের দিন ভোট পরবর্তী হিংসার বলি হন কাঁকুড়গাছির বিজেপি কর্মী অভিজিৎ সরকার। বাড়ি থেকেই তাঁর দেহ উদ্ধার হয়। মারধর করে এবং গলায় তার পেঁচিয়ে তাঁকে খুন করা হয়েছে বলে অভিযোগ ওঠে। তার কিছুক্ষণ আগেই সমাজ মাধ্যমে লাইভ করে অভিজিৎ সরকার জানিয়েছিলেন, তাঁর বাড়িতে আক্রমণ চালানো হচ্ছে এবং তাঁর পোষ্যদের আক্রমণ করা হচ্ছে। তার কিছুক্ষণ পরই তার দেহ উদ্ধার হয়।
ঘটনার তদন্ত শুরু করে নারকেলডাঙ্গা থানা। কিন্তু পুলিশের তদন্তে অসন্তোষ প্রকাশ করে কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন অভিজিতের পরিবার।
মামলার তদন্তভার গ্রহণ করে সিবিআই
কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশে এই মামলার তদন্তভার গ্রহণ করে সিবিআই। ঘটনার চার বছর পর হঠাৎ করেই সম্প্রতি অতিরিক্ত চার্জশিট জমা দেয় সিবিআই। সেই চার্জশিটে বেলেঘাটার বিধায়ক পরেশ পাল, কলকাতা কর্পোরেশনের মেয়র পারিষদ স্বপন সমাদ্দার এবং কাউন্সিলর পাপিয়া ঘোষের নাম ছিল। সেই সঙ্গে সিবিআই এর চার্জশিটে নারকেলডাঙ্গা থানার তৎকালীন ওসি শুভজিৎ সেন, সাব-ইন্সপেক্টর রত্না সরকার এবং হোমগার্ড দীপঙ্কর দেবনাথের বিরুদ্ধে তথ্য প্রমাণ নষ্টের অভিযোগ করা হয়। তারপরই গত ১৮ জুলাই নিম্ন আদালত তিনজনকে ৩১ জুলাই পর্যন্ত জেল হেফাজতের নির্দেশ দেয়। বর্তমানে তাঁরা জেলেই রয়েছেন। গত সোমবার জামিনের আবেদন করে কলকাতা হাইকোর্টে দারস্থ হন সাব-ইন্সপেক্টর রত্না সরকার এবং হোমগার্ড দীপঙ্কর দেবনাথ। সেই মামলাতেই মঙ্গলবার সিবিআই-এর থেকে চার দিনের মধ্যে রিপোর্ট তলব করলেন কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি শুভ্রা ঘোষ।