ট্রাইব টিভি বাংলা ডিজিটাল: নতুন প্রজন্মের জন্য মস্তিষ্কের (Child Brain Tumor) টিউমার এখন বড় উদ্বেগের বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। বিশেষ করে শিশু ও তরুণদের মধ্যে এই রোগের বৃদ্ধি নিয়ে চিকিৎসকমহল গভীরভাবে চিন্তিত। আচমকাই আচরণে পরিবর্তন, দৃষ্টিশক্তিতে দুর্বলতা, মাথাব্যথা বা ভারসাম্য হারানো—এই ধরনের উপসর্গগুলো প্রাথমিক পর্যায়ে অনেক সময় পাথর না দিয়ে অগোচরে থেকে যায়। অনেক বাবা-মায়ের মনেই আসে না যে, তাদের সন্তানের আচরণে হঠাৎ বদল আসা বা স্কুলে মনোযোগ কমে যাওয়া কোনো শারীরিক অসুবিধার ইঙ্গিত হতে পারে।
চিকিৎসা শুরু করাও কঠিন (Child Brain Tumor)
ন্যাশনাল ব্রেন টিউমার সোসাইটির সাম্প্রতিক সমীক্ষা (Child Brain Tumor) অনুযায়ী, দেশে শিশু ও কিশোরদের মধ্যে মস্তিষ্কের টিউমারের হার আশঙ্কাজনকভাবে বেড়েছে। এই টিউমার দুই ধরনের হতে পারে—একটি বিনাইন, অর্থাৎ ক্যানসার নয় এবং অন্যটি ম্যালিগন্যান্ট, অর্থাৎ ক্যানসার কোষের উপস্থিতি রয়েছে। সাধারণত টিউমারের প্রাথমিক লক্ষণগুলো সহজে ধরতে না পারায় অনেক সময় রোগ ধরা পড়ে দেরিতে। তখন চিকিৎসা শুরু করাও কঠিন হয়ে পড়ে।
টিউমারের বিভিন্ন ধরন (Child Brain Tumor)
শিশুদের মস্তিষ্কের টিউমারের বিভিন্ন ধরন (Child Brain Tumor) রয়েছে। গ্লিয়োমাস সবচেয়ে প্রচলিত, যা স্নায়ু কোষের অস্বাভাবিক বৃদ্ধি থেকে তৈরি হয়। এর মধ্যে অ্যাস্ট্রোসাইটোমাস বিশেষভাবে শিশুদের মধ্যে বেশি দেখা যায়। এই ধরনের টিউমার স্নায়ু এবং সুষুম্নাকাণ্ডের কাজের উপর মারাত্মক প্রভাব ফেলে। এর সবচেয়ে ভয়ঙ্কর রূপ হলো গ্লিয়োব্লাস্টোমা, যা খুব দ্রুত প্রাণঘাতী হয়ে ওঠে এবং রোগীর জীবনকাল সাধারণত খুবই সীমিত থাকে। এছাড়াও এমব্রায়োনাল টিউমার রয়েছে, যা জন্মের আগেই শিশুর মস্তিষ্কে গঠন পায়। জার্ম সেল টিউমার এবং সেরিব্রোস্পাইনাল ফ্লুইড থেকেও টিউমার হতে পারে।
সিটি স্ক্যান করানো উচিত
ব্রেন টিউমার সবসময় স্পষ্ট লক্ষণ দিয়ে শুরু হয় না। যেমন মাথাব্যথা, বমি ভাব, জ্ঞান হারানো, আচরণে হঠাৎ পরিবর্তন, মেজাজ খারাপ হওয়া, অস্থিরতা বা চোখে সমস্যা হতে পারে। এছাড়া শিশুদের মাঝে বারংবার খিঁচুনি ধরা পড়া বা ভুলে যাওয়া, সিদ্ধান্ত নিতে অক্ষম হওয়া ইত্যাদি লক্ষণও নজরদারিতে রাখতে হবে। এগুলো দেখেই অবিলম্বে এমআরআই বা সিটি স্ক্যান করানো উচিত, যা টিউমারের অস্তিত্ব নির্ধারণে সহায়ক।
৩০ শতাংশ রোগীর প্রাথমিক উপসর্গ থাকে না
ডাক্তারেরা বলছেন, মস্তিষ্কের টিউমার নিয়ে আতঙ্কিত হওয়ার দরকার নেই, তবে সময়মত সঠিক চিকিৎসা গ্রহণ অত্যন্ত জরুরি। কারণ, ৩০ শতাংশ রোগীর প্রাথমিক উপসর্গ থাকে না, তাই খুব সতর্ক থাকা দরকার। দীর্ঘদিন মাথা, ঘাড় বা পিঠে ব্যথা, হাত-পায় দুর্বলতা বা ভারসাম্যের সমস্যা থাকলে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত।
আরও পড়ুন: Green Chilly Recipe: কাঁচালঙ্কার বাহারি রেসিপি, চোখে জল মুখে স্বাদ!
আমাদের উচিত শিশুদের আচরণ ও শারীরিক পরিবর্তনগুলোকে অবহেলা না করে দ্রুত প্রয়োজনীয় পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা, যাতে সময়মতো সঠিক চিকিৎসা শুরু করা যায় এবং এই ভয়াবহ রোগের বিরুদ্ধে সফলভাবে লড়াই করা যায়।