ট্রাইব টিভি বাংলা ডিজিটাল: বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম অর্থনীতিকে রক্ষা করতে এবার জন্মহার বৃদ্ধির কৌশল নিচ্ছে চিন(China Economy)। জনসংখ্যা হ্রাসের প্রবণতা থামাতে সন্তান জন্মের পর পরিবারকে নগদ টাকা দেওয়ার পরিকল্পনা করছে শি জিনপিং সরকার। সরকারি সূত্রে খবর, জন্মানো প্রতি সন্তানের জন্য বছরে ৩৬০০ ইউয়ান (ভারতীয় মুদ্রায় প্রায় ₹৪৫,০০০) পর্যন্ত ভর্তুকি দেওয়া হতে পারে। এই আর্থিক সহায়তা মিলবে টানা তিন বছর ধরে।
জনসংখ্যা বৃদ্ধি এক সময় চিনের অন্যতম বড় সমস্যা হলেও, বর্তমানে বিপরীত সমস্যা দেখা দিয়েছে। বহু দশক ধরে জারি থাকা “এক সন্তান নীতি” ২০১৬ সালে উঠিয়ে নেওয়া হয়। তখন আশা করা হয়েছিল, বহু দম্পতি আরও সন্তান নেবেন। কিন্তু বাস্তবে তার উল্টো ছবি দেখা যায়। ২০১৬ সালে চিনে জন্ম হয়েছিল ১ কোটি ৮৮ লক্ষ শিশুর। ২০২৪ সালে তা কমে দাঁড়িয়েছে প্রায় ৯৫ লক্ষে। জন্মহার প্রায় অর্ধেক কমে যাওয়ার ঘটনায় প্রশাসনিক মহলে উদ্বেগ ছড়িয়েছে(China Economy)।
চিনে কর্মক্ষম জনসংখ্যা কমছে (China Economy)
বিশেষজ্ঞদের মতে, চিনে (Xi Jinping) কর্মক্ষম জনগোষ্ঠীর সংখ্যা মারাত্মক হারে কমে আসছে(China Economy)। অর্থাৎ, ২০-৫০ বছর বয়সিদের সংখ্যা হ্রাস পাওয়ায় কর্মসংস্থান, উৎপাদন এবং সামগ্রিক অর্থনৈতিক গতি স্তিমিত হচ্ছে। অন্যদিকে, বয়স্ক মানুষের সংখ্যা ক্রমেই বেড়ে চলেছে, যাঁদের জন্য বাড়ছে সরকারি ভাতা ও স্বাস্থ্য খাতে ব্যয়। ফলে অর্থনীতির উপর বাড়তি চাপ পড়ছে।
এই প্রেক্ষাপটে চিন সরকার ভাবছে সন্তান জন্মালে তার পরিবারের জন্য আর্থিক ভর্তুকি চালু করার। পরিকল্পনা অনুযায়ী, ২০২৪ সালের ১ জানুয়ারি বা তার পরে জন্মানো প্রতিটি সন্তানের জন্য বছরে ৩৬০০ ইউয়ান করে পরিবারকে দেওয়া হতে পারে, যা তিন বছরের জন্য প্রযোজ্য হবে। যদিও আনুষ্ঠানিকভাবে এই ঘোষণাটি এখনো প্রকাশ্যে আসেনি, কিন্তু বেজিংয়ে নীতি নির্ধারকদের মধ্যে বিষয়টি নিয়ে জোর আলোচনা চলছে(China Economy)।

জনসংখ্যাগত ভারসাম্য (China Economy)
বিশ্ব রাজনীতিতে এবং অর্থনীতিতে চিনের প্রভাব অপরিসীম(China Economy)। কিন্তু জনসংখ্যাগত ভারসাম্য ভেঙে পড়লে সেই অবস্থান ধরে রাখা কঠিন হয়ে পড়বে। ২০২৩ সালেই ভারত চিনকে টপকে বিশ্বের জনবহুলতম দেশে পরিণত হয়। রাষ্ট্রপুঞ্জের হিসাব অনুযায়ী, এই ধারা অব্যাহত থাকলে ২০৫০ সালের মধ্যে চিনের জনসংখ্যা কমে ১৩০ কোটিতে নেমে আসবে এবং ২১০০ সালের মধ্যে তা আরও কমে দাঁড়াতে পারে ৮০ কোটিতে।
অনেক চিনা দম্পতিই সন্তান পালনের ব্যয়ভার, কর্মজীবন ও ভবিষ্যতের নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বিগ্ন। ফলে তাঁরা সন্তান নেওয়া এড়িয়ে চলছেন। শহরাঞ্চলে এই প্রবণতা আরও বেশি। সেখানেই জন্মহার সবচেয়ে কম। ভর্তুকি চালুর মাধ্যমে সরকার চায় এই মানসিকতা কিছুটা বদলাতে।

সন্তানপ্রতি ভর্তুকি চিনে (China Economy)
সন্তানপ্রতি ভর্তুকি চিনের অর্থনীতিকে কতটা চাঙ্গা করতে পারে, তা ভবিষ্যৎ বলবে(China Economy)। কিন্তু জনসংখ্যাগত চ্যালেঞ্জ সামলাতে এই পদক্ষেপ নিঃসন্দেহে একটি দৃষ্টান্তমূলক প্রয়াস। শি জিনপিংয়ের সরকার যদি দ্রুত এই নীতি কার্যকর করতে পারে, তবে তা হয়তো দেশের ভবিষ্যৎ অর্থনৈতিক কাঠামোয় বড় পরিবর্তন আনতে পারে।