ট্রাইব টিভি বাংলা ডিজিটাল: এবার বিতর্কিত মন্তব্য করে বিপাকে দক্ষিণের সুপারস্টার চিরঞ্জীবী (Chiranjeevi)। কিন্তু কী বলেছেন তিনি যার জন্য প্রতিক্রিয়ার ঝড় উঠেছে সামাজিক মাধ্যমে?
একটি মন্তব্য, অনেক প্রতিক্রিয়া (Chiranjeevi)
দক্ষিণের মেগাস্টার চিরঞ্জীবীর (Chiranjeevi) সাম্প্রতিক মন্তব্য ঘিরে বিতর্ক তৈরি হয়েছে। তিনি নাতির আকাঙ্ক্ষা প্রকাশ করে এমন কিছু কথা বলেছেন, যা অনেকেই লিঙ্গবৈষম্যমূলক (sexist) বলে মনে করছেন।
সম্প্রতি ব্রহ্ম আনন্দম ছবির প্রি-রিলিজ ইভেন্টে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন চিরঞ্জীবী (Chiranjeevi)। সেখানে তিনি মজার ছলে বলেন, “আমার বাড়িটা যেন একেবারে লেডিস হোস্টেল, আমি যেন ওয়ার্ডেন। চারপাশে শুধু মেয়েরাই আছে।”
এরপর তিনি বলেন, “আমি চাই আমাদের বংশ পরম্পরা এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য নাতি হোক। আমি রাম চরণকে বলি, অন্তত এবার যেন একটা ছেলে হয়। কিন্তু ওর মেয়েই এখন ওর চোখের মণি…”
আরও পড়ুন: Shah Rukh Khan: হলিউডে শাহরুখ খানের ধামাকাদার এন্ট্রি, দেখা যাবে অ্যাভেঞ্জার দলে!
কেন বিতর্ক তৈরি হল? (Chiranjeevi)
চিরঞ্জীবীর এই মন্তব্য সাধারণভাবে মজার হলেও, কিছু মানুষ এতে পুরুষ সন্তানকে বিশেষ গুরুত্ব দেওয়ার প্রবণতা (male child preference) দেখতে পান। তিনি আরও বলেন, “আমার ভয় হয়, যদি আবার মেয়ে হয়!”
উল্লেখ্য, রাম চরণ এবং তার স্ত্রী উপাসনা ২০২৩ সালের জুন মাসে একটি কন্যাসন্তানের (ক্লিন কারা) জন্ম দেন।
চিরঞ্জীবীর আরও দুই মেয়ে আছেন। তাঁরা হলেন শ্রীজা কোনিদেলা ও সুস্মিতা কোনিদেলা। শ্রীজার নবীক্ষা ও নিব্রতি নামে দুই কন্যাসন্তান রয়েছে, এবং সুস্মিতার দুই মেয়ে সমারা ও সম্মিতা।
ইন্টারনেটে সমালোচনার ঝড়
চিরঞ্জীবীর মন্তব্য অনেকের মনঃপূত হয়নি। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখা গেছে। একজন ব্যবহারকারী X (আগের টুইটার)-এ লেখেন, “এটা ২০২৫ সাল, অথচ এখনো এই ধরনের মানসিকতা প্রচলিত! এত বড় একজন তারকা হয়ে তিনি যদি এই ধরনের লিঙ্গবৈষম্যমূলক ধারণা প্রচার করেন, তবে তা অত্যন্ত হতাশাজনক।”
অন্য একজন লেখেন, “চিরঞ্জীবী যদি তার প্রভাব ব্যবহার করে লিঙ্গ সমতার বার্তা দেন, তাহলে সমাজে ইতিবাচক পরিবর্তন আসবে। কিন্তু আমরা এখনও তার ‘আবার মেয়ে হলে ভয় পাচ্ছি’ মন্তব্য নিয়ে কথা বলছি। সময় এসেছে বদলানোর, ছেলে-মেয়ে নির্বিশেষে প্রত্যেকটি সন্তানই আশীর্বাদ।”
আরও পড়ুন: Rajkummar Rao Love Story: বাড়িতে বাসন মাজেন রাজকুমার, ভালোবাসা দিবসের আগেই প্রকাশ্যে বড় সত্যি
আরেকজন বলেন, “এ ধরনের সেলিব্রিটিদের উচিত জনসমক্ষে কথা বলার সময় আরও সতর্ক হওয়া।”
এক ব্যবহারকারী আরও কড়া ভাষায় লেখেন, “তার নাতনিরাও তার উত্তরাধিকার এগিয়ে নিতে পারে! তাকে শুধু আশেপাশের সফল মহিলাদের দিকে তাকাতে হবে – যেমন উপাসনা ও তার ভাই-বোনেরা অ্যাপোলো হাসপাতালকে কীভাবে সামলাচ্ছে, বা অশ্বিনী দত্তের মেয়েরা কীভাবে ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রিতে নিজেদের জায়গা করে নিয়েছে!”
বিতর্কের বাইরে চিরঞ্জীবী
১৯৮০ সালে সুরেখা-কে বিয়ে করেন চিরঞ্জীবী। তার পরিবার চলচ্চিত্র জগতে অত্যন্ত পরিচিত এবং সম্মানিত। তবে এই বিতর্ক তার ভাবমূর্তির উপর কী প্রভাব ফেলবে, তা এখনও স্পষ্ট নয়।
এই ঘটনাকে ঘিরে চলতে থাকা আলোচনায় সমাজের লিঙ্গবৈষম্যমূলক চিন্তাধারা ও মানসিকতার পরিবর্তনের প্রয়োজনীয়তা আরও একবার সামনে এসেছে।