ট্রাইব টিভি বাংলা ডিজিটাল: এক সময় (Cholera Spread) পর্যন্ত কলেরা মানেই ছিল মৃত্যু-আতঙ্ক। গ্রামে কারও পেট খারাপের খবর শুনলেই ভয় ধরত-যদি সেটা ‘কলেরা’ হয়! একসময় যেটি ছিল নিশ্চিত মৃত্যুর নামান্তর, আজও তার ভয় কিন্তু একেবারে যায়নি। কারণ, ঠিক মতো চিকিৎসা না হলে এই রোগের পরিণতি এখনও ভয়াবহ হতে পারে। তারই ইঙ্গিত মিলল ওড়িশায়, যেখানে ফের মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে কলেরা।
ওড়িশা সরকারের রিপোর্ট (Cholera Spread)
ওড়িশা সরকারের রিপোর্ট অনুযায়ী, রাজ্যের বিভিন্ন জেলায় (Cholera Spread) ইতিমধ্যেই ২০০০-এর বেশি মানুষ এই জলে-জন্মানো রোগে আক্রান্ত হয়েছেন। এখনও পর্যন্ত ১১ জনের মৃত্যুও হয়েছে। সবচেয়ে বেশি প্রভাব পড়েছে উপকূলবর্তী ও জঙ্গলঘেরা এলাকায়। সরকারি সূত্রের খবর, আক্রান্তদের নমুনা পরীক্ষা করে দেখা গিয়েছে, ১০ শতাংশের দেহে ‘ভিব্রিও কলেরা’ ব্যাকটেরিয়ার উপস্থিতি রয়েছে, যা এই রোগের মূল কারণ।
সজাগ প্রশাসন (Cholera Spread)
৯ জুন প্রথম বার আতঙ্ক ছড়ায় জাজপুর (Cholera Spread) জেলায়। ডায়রিয়ার মতো উপসর্গ নিয়ে একাধিক মানুষ হাসপাতালে ভর্তি হন। এরপরই সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ে ঢেঙ্কানল, ভদ্রক, কেওনঝাড় ও কটকের মতো জেলাগুলিতে। অন্যান্য কয়েকটি জেলাতেও ডায়রিয়ার বিচ্ছিন্ন ঘটনা ঘটছে। ফলে প্রশাসন এখনই সজাগ হয়েছে। রাজ্যের সব জেলাশাসকদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, যেন তৎক্ষণাৎ প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হয়।
ডায়রিয়া ও কলেরার উপসর্গ
মঙ্গলবারের তথ্য অনুযায়ী, একদিনেই প্রায় ৩০০ জন নতুন রোগী ডায়রিয়া ও কলেরার উপসর্গ নিয়ে চিকিৎসা নিচ্ছেন। যদিও ওআরএস এবং অ্যান্টিবায়োটিকের মাধ্যমে এখন অনেকাংশে এই রোগ নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব, তবে প্রাথমিক পর্যায়ে অবহেলা বিপজ্জনক হয়ে উঠতে পারে বলেই জানাচ্ছেন চিকিৎসকরা।
কলেরার প্রধান লক্ষণ
বিশেষজ্ঞদের মতে, কলেরার প্রধান লক্ষণ হল ঘন ঘন জলের মতো মল হওয়া। পাশাপাশি দেখা দেয় বমি, পেটে ব্যথা, জ্বর এবং তীব্র জলশূন্যতা। শিশু ও বৃদ্ধদের ক্ষেত্রে এই জলশূন্যতা মারাত্মক হতে পারে। সময়মতো ওআরএস, বিশুদ্ধ জল এবং প্রাথমিক ওষুধ না পেলে রোগীর অবস্থা সংকটজনক হয়ে উঠতে পারে। তাই কোনও উপসর্গ দেখা দিলে অবিলম্বে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়ার আহ্বান জানানো হয়েছে।

আরও পড়ুন: Akshay Kumar: বছরে ৪টি ছবি করায় ট্রোল! সপাটে জবাব অক্ষয় কুমারের
রোগের বিরুদ্ধে সবচেয়ে বড় ঢাল
প্রসঙ্গত, ১৯৭১ সালে এই রোগ যখন ভয়ঙ্কর রূপ নিয়েছিল, সেই সময় বাঙালি চিকিৎসক দিলীপ মহলানবীশের তৈরি ওআরএস সমাধান হয়ে উঠেছিল জীবনদায়ী। আজও সেই পথেই হাঁটছে চিকিৎসা-পদ্ধতি। তবে, প্রশাসনের পাশাপাশি সাধারণ মানুষকেও সচেতন না হলে এই সংক্রমণ রোখা কঠিন হবে। পরিষ্কার জল পান করা, খাদ্যসামগ্রী ঢেকে রাখা এবং হাত ধোয়ার অভ্যাসই পারে এই রোগের বিরুদ্ধে সবচেয়ে বড় ঢাল হয়ে উঠতে।