ট্রাইব টিভি বাংলা ডিজিটাল: ভারতীয় সেনার গর্ব, কর্নেল সোফিয়া কুরেশিকে ‘সন্ত্রাসবাদীদের বোন’ বলে কুমন্তব্য করে সারা দেশে তীব্র সমালোচনার মুখে পড়েছিলেন মধ্যপ্রদেশের মন্ত্রী বিজয় শাহ(Colonel Sofiya Qureshi)। ঘটনার পর তিনি প্রকাশ্যে ক্ষমা চাইলেও, তা যে সত্যিকারের অনুশোচনাজনিত নয়, বরং আদালতের নির্দেশ পালন করার একটি ফরমালিটি মাত্র—সেই অভিযোগেই ফের তাঁর বিরুদ্ধে তীব্র ভর্ৎসনা করল দেশের সর্বোচ্চ আদালত।
বিজয় শাহকে ভৎসনা (Colonel Sofiya Qureshi)
মন্ত্রী বিজয় শাহকে (Dr. Vijay Shah) ভৎসনা করলো, সোমবার এই সংক্রান্ত মামলার শুনানিতে বিচারপতি সূর্য কান্ত এবং বিচারপতি এন কোটিশ্বর সিংহের বেঞ্চ বিজয় শাহকে স্পষ্ট ভাষায় জানিয়ে দেয়—“কুমিরের কান্না কাঁদবেন না(Colonel Sofiya Qureshi)।” আদালতের মন্তব্য, অনেকেই আইনের চোখ এড়াতে মেকি অনুতাপ দেখান। বিজয়ের ক্ষমা প্রার্থনাও ঠিক তেমনই মনে হচ্ছে। বিচারপতি সূর্য কান্ত বলেন, “এটা কী ধরনের ক্ষমা আপনি চেয়েছেন? ক্ষমা চাওয়ার তো একটা ধরন থাকে। মাঝে মাঝে মানুষ আইনি প্রক্রিয়া এড়াতে বিনয়ী ভাষা ব্যবহার করেন। কুমিরের কান্না কাঁদেন। আপনি দেখাতে চাইছেন, আদালত আপনাকে ক্ষমা চাইতে বলেছে। কিন্তু নিজের মন্তব্যের জন্য এখনও আন্তরিক ভাবে অনুশোচনা নেই।”
সোফিয়ার পাশে দেশ, আদালতের কড়া বার্তা প্রশাসনকে (Colonel Sofiya Qureshi)
আদালত প্রশ্ন তোলে, এই কুরুচিকর মন্তব্যের পর রাজ্য প্রশাসন অভিযুক্ত মন্ত্রীর বিরুদ্ধে কোনও প্রশাসনিক ব্যবস্থা নিয়েছে কি না(Colonel Sofiya Qureshi)। সেই প্রশ্নের জবাব চেয়েছে মধ্যপ্রদেশ সরকারের কাছে। পাশাপাশি, মন্ত্রী বিজয় শাহের বিরুদ্ধে কী ধরনের পুলিশি পদক্ষেপ হয়েছে, তা জানাতে বলা হয়েছে রাজ্য পুলিশের ডিজি-কে। সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে, ২০ মার্চের মধ্যে তিন সদস্যের একটি বিশেষ তদন্তকারী দল (SIT) গঠন করতে হবে। দলে থাকতে হবে এক মহিলা আইপিএস অফিসার। তদন্তের অগ্রগতি এবং রিপোর্ট জমা দিতে হবে ২৮ মে-র মধ্যে।

কে কর্নেল সোফিয়া কুরেশি? (Colonel Sofiya Qureshi)
৩৫ বছরের কর্নেল সোফিয়া কুরেশি ভারতের সিগন্যাল কোরের এক শীর্ষ আধিকারিক (Colonel Sofiya Qureshi)। ভারত-পাকিস্তান সীমান্তে চলমান উত্তেজনার সময় প্রতিদিনের সামরিক ও কূটনৈতিক যৌথ সাংবাদিক বৈঠকে দেশের হয়ে মুখপাত্রের ভূমিকা পালন করেন তিনি। তাঁর স্পষ্ট এবং শক্তিশালী ভাষণে সারা দেশের মানুষের আস্থা ও শ্রদ্ধা অর্জন করেন সোফিয়া। তার পাশে ছিলেন উইং কমান্ডার ব্যোমিকা সিংহ ও বিদেশসচিব বিক্রম মিস্রী। সোফিয়া হিন্দিতে বলতেন, ব্যোমিকা ইংরেজিতে অনুবাদ করতেন। তাঁদের যৌথ উপস্থাপনায় দেশবাসী প্রথমবার সেনার কার্যপ্রণালি এত কাছ থেকে দেখার সুযোগ পেয়েছিল।

রাজনৈতিক বক্তব্য না, অপমান— বলছে আদালত (Colonel Sofiya Qureshi)
সোফিয়ার মতো একজন সম্মানীয় সেনা অফিসারকে উদ্দেশ করে মন্ত্রীর মন্তব্য শুধুমাত্র রাজনৈতিক ‘স্টান্ট’ নয়, তা একজন মহিলার, একজন অফিসারের, এবং সবচেয়ে বড় কথা, দেশের সেবিকার অপমান(Colonel Sofiya Qureshi)। তাই আদালতের ভর্ৎসনা শুধু এক ব্যক্তির উদ্দেশে নয়, বরং দেশের মূল্যবোধ ও শৃঙ্খলার প্রতি দায়বদ্ধতার বার্তা।দেশ যখন তার সেনার প্রতি গর্ব অনুভব করছে, তখন একজন নির্বাচিত জনপ্রতিনিধির এহেন মন্তব্য শুধুই অগ্রহণযোগ্য নয়, তা নাগরিক দায়িত্ববোধকেও প্রশ্নবিদ্ধ করে। সুপ্রিম কোর্টের এই কড়া অবস্থান রাজনৈতিক মহল ও প্রশাসনের কাছে একটি বার্তা—সীমা লঙ্ঘনের দায় কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না।