ট্রাইব টিভি বাংলা ডিজিটাল: শীত এলেই বেড়ে যায় খুশকির সমস্যা(Dandruff Treatment)। চুল ঝরা, রুক্ষ চুল, বিভিন্ন ধরনের স্ক্যাল্প ইনফেকশন জন্য বেশিরভাগ ক্ষেত্রে দায়ী এ খুশকি। মাথার স্কাল্প একবার খুশকির আক্রমণের শিকার হলে এটি একদিকে যেমন মাথার ত্বককে ক্ষতিগ্রস্ত করে, তেমনি চুলেরও মারাত্মক ক্ষতি করে। অতিরিক্ত খুশকির প্রভাবে বাড়তে পারে চুল পড়ার সমস্যাও। খুশকি থেকে রেহাই পেতে বাজারে নানা ধরনের শ্যাম্পু ও লোশন পাওয়া যায়। কিন্তু সেগুলিতে থাকা বিভিন্ন রাসায়নিক উপাদানের প্রভাবে কখনও কখনও উল্টে চুলেরই ক্ষতি হয়। তাই ঘরোয়া উপায় কাজে লাগিয়েই দূর করুন খুশকি।
কী কারণে হতে পারে খুশকি? (Dandruff Treatment)
খুশকি মূলত একটি ছত্রাক। এই ছত্রাক দেখতে ম্যালাসেজিয়া ইস্টের মতো(Dandruff Treatment)। ম্যালাসেজিয়া ইস্ট বৃদ্ধির ফলে ত্বক অনেকটাই শুষ্ক হয়ে ওঠে। যে কারণে দেখা দেয় খুশকি। চুল এবং মাথার তালু অপরিষ্কার থাকলে খুশকির সমস্যা দেখা দিতে পারে। মাথার তালুতে নোংরা জমে, ঘাম বসে থাকলেও খুশকি হতে পারে। স্ক্যাল্প এবং চুল রুক্ষ, শুষ্ক হলেও এই সমস্যা দেখা যায়। এ ছাড়া আরও যেসব কারণে খুশকি হতে পারে সেগুলো হলো তৈলাক্ত ত্বক, সোরিয়াসিস, একজিমা, সেবোরিক ডার্মাটাইটিস এবং ঘনঘন শ্যাম্পু করার প্রবণতা।
আয়ুর্বেদশাস্ত্রে খুশকির সমাধানে প্রাকৃতিক উপাদানকে (Dandruff Treatment)
প্রাচীনকাল থেকেই আয়ুর্বেদশাস্ত্র অনুযায়ী, খুশকির সমস্যা সমাধানে কার্যকর হিসেবে দাবি করা হয়েছে প্রাকৃতিক উপাদানকে(Dandruff Treatment)। শুধু আয়ুর্বেদশাস্ত্রই নয়, আধুনিক ডার্মাটোলিজিস্টদের গবেষণায়ও প্রমাণ মিলেছে এই উপাদানের কার্যকারিতা। তবে আপনার চুলে খুশকির সমস্যা বাড়াবাড়ি রকমের হয়, তাহলে অতি অবশ্যই বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত। তবে ঘরোয়া উপায়ে কীভাবে মুক্তি পাবেন খুশকি থেকে? চলুন দেখে নেওয়া যাক।
আরও পড়ুন:Saffron Milk Benefits: দুধের সঙ্গে কেশর? জানেন কত গুণ? জানুন এর উপকারিতা
নারকেল তেল ও পেঁয়াজের রস
নারকেল তেলে অ্যান্টি-ব্যাকটেরিয়াল বৈশিষ্ট্য রয়েছে। নারকেল তেলের সঙ্গে পেঁয়াজের রস ব্যবহার করলে এর কার্যকারিতা আরও অনেকাংশে বেড়ে যায়। এই পদ্ধতিটি করতে প্রথমে ২ টেবিল চামচ পেঁয়াজের রস এবং ২ টেবিল চামচ নারকেল তেল নিয়ে ভালো করে ফেটিয়ে নিন। এরপর এই মিশ্রণটি নিয়ে ভালো করে স্কাল্পে লাগিয়ে কয়েক মিনিট ম্যাসাজ করুন। তারপর ১ ঘণ্টা রেখে মাইল্ড শ্যাম্পু দিয়ে মাথা ধুয়ে ফেলুন। এই প্রক্রিয়াটি সপ্তাহে এক দিন করুন। এছাড়াও আলাদা আলাদা ভাবেও লাগাতে পারেন এই দুটি উপাদান।
লেবুর রস
দুই টেবিল-চামচ লেবুর রস অল্প জলের সঙ্গে মিশিয়ে মাথার ত্বকে ভালোভাবে ম্যাসাজ করুন। ২-৫ মিনিট ম্যাসাজ করার পর চুল ধুয়ে নিন। সপ্তাহে দু’বার এইভাবে চুলে লেবু ব্যবহার করুন।
মেথি
মেথি সারারাত জলে ভিজিয়ে রেখে সকালে ছেঁকে নিয়ে ভাল করে বেটে নিন। ছেঁকে নেয়া জল ফেলে দেবেন না। এবার বেটে নেয়া মেথি চুলের গোঁড়ায় মাথার ত্বকে ভাল করে লাগিয়ে নিন। ঘণ্টা খানেক রেখে চুল ভাল করে ধুয়ে ফেলুন। চুল ধোয়ার পর মেথি ভিজিয়ে রাখা জল দিয়ে আরও একবার চুল ধুয়ে নিন। এ ভাবে সপ্তাহে দু’বার মেথি-মালিশ করুন।
আরও পড়ুন:Ayurvedic Oil: শীতের দিনে উপকারী ভেষজ তেল, জেনে নিন অজানা তেলের উপকারিতা
বেকিং সোডা বা খাবার সোডা
খুশকির সমস্যা দূর করার জন্য ব্যবহার করতে পারেন বেকিং সোডাও। কীভাবে এই উপকরণ খুশকির সমস্যা দূর করে, দেখে নেওয়া যাক। বেকিং সোডার মধ্যে অ্যান্টি-ফাঙ্গাল উপকরণ থাকে। এই উপকরণ স্ক্যাল্প থেকে মরা কোষ সরিয়ে ফেলতে এক্সফোলিয়েটরের কাজ করে। বেকিং সোডার সঙ্গে ডিমের কুসুম এবং পাতিলেবুর রস মিশিয়ে বাড়িতেই তৈরি করে নিতে পারেন এহ্যার মাস্ক যা সহজে খুশকি দূর করতে সাহায্য করবে।
রিঠা
চুলের সৌন্দর্য বাড়াতে রিঠার জুরি মেলা ভার। খুশকির সমস্যার সমাধানেও এটি বেশ কার্যকর। রিঠা পাউডার বা রিঠা সিদ্ধ জল চুলের ত্বকে লাগিয়ে ঘণ্টা খানেক রেখে ভালমতো ধুয়ে ফেলুন। এ ভাবে সপ্তাহে দু’বার রিঠা মাথায় মাখলে খুশকির সমস্যায় দ্রুত উপকার পাবেন।
টকদই
খুশকি দূর করতে টকদই মাথার ত্বকে ভালোভাবে ম্যাসাজ করুন। ১০ মিনিট রেখে ভাল করে ধুয়ে ফেলুন। এতে খুশকির সমস্যা কমতে পারে।
নিমের রস, অলিভ ও নারকেল তেল
নিমের অ্যান্টিফাঙাল উপাদানে স্কাল্পের ব্যাকটেরিয়া সংক্রমণ প্রতিরোধের ক্ষমতা রয়েছে। তাই খুশকির বিরুদ্ধে নিম কঠিন প্রতিরোধ ব্যবস্থা তৈরি করতে পারে। খুশকি দূর করতে সপ্তাহে তিন দিন স্কাল্পে ৪ চামচ নিমপাতার রস, ৩ চামচ অলিভ ও নারকেল তেল মিশিয়ে মাথায় ম্যাসাজ করুন। স্কাল্পে ও চুলের গোড়ায় যেন এই মিশ্রণ পৌঁছায়। এক ঘণ্টা অপেক্ষা করুন। তারপর শ্যাম্পু করে নিন। কন্ডিশনার ব্যবহার করুন।