ট্রাইব টিভি বাংলা ডিজিটাল: সম্প্রতি আইএসএফের একটি মিছিল (Debangshu Bhattacharya) ঘিরে উত্তেজনা ছড়ায়, যেখানে পুলিশের গাড়িতে আগুন ধরানো এবং পাথরবৃষ্টি হয়। এই ঘটনাকে ‘দাঙ্গাবাজি’ বলার পরেই রাজ্য রাজনীতিতে ঝড় উঠে গেছে। যিনি এই মন্তব্য করেছিলেন, তাঁর বিরুদ্ধে আইএসএফ নেতা তথা ভাঙরের বিধায়ক নওশাদ সিদ্দিকী সরাসরি তোপ দেগেছেন। অভিযোগ, এই মন্তব্যে নাকি গোটা মুসলিম সমাজ অপমানিত। এমনকি, তৃণমূলের রাজ্য সভাপতি সুব্রত বক্সিকে লিখেছেন চিঠিও।
সমাজমাধ্যমে পোস্ট (Debangshu Bhattacharya)
এই প্রসঙ্গে তৃণমূলের যুব নেতা দেবাংশু ভট্টাচার্য্য (Debangshu Bhattacharya) লিখেছেন, “নওশাদদা আমার বিরুদ্ধে ক্ষেপেছে গো! সেদিন আইএসএফের পুলিশের গাড়ি জ্বালানো, পাথর ছোঁড়া ভিড়কে দাঙ্গাবাজ বলেছি বলে আমাদের রাজ্য সভাপতি সুব্রত বক্সিকে চিঠি লিখেছে আমার বিরুদ্ধে! বলছে মুসলিম সমাজ নাকি ক্ষুব্ধ!
তো আপনার পার্টি দাঙ্গাবাজ নয়? আপনি শিওর তো? তৎকালীন তৃণমূল সাংসদ নুসরাত জাহানকে যখন বেঁধে পেটানোর হুমকি দিয়েছিল আপনার পার্টির প্রতিষ্ঠাতা আব্বাস সিদ্দিকী, তখন প্রতিবাদ করেছিলেন? “কল্লা নামিয়ে দেওয়া উচিত” মার্কা যে সমস্ত হুমকি তার মুখ থেকে নিঃসৃত হয়েছিল, এসবের বিরুদ্ধে বিধায়ক হওয়ার আগে বা পরে কখনো মুখ খুলেছিলেন? উনি তো আপনাদের পার্টির প্রতিষ্ঠাতা! ভোটের আগে উনি আপনাদের পার্টির মুখ ছিলেন.. তিনি সরাসরি গলা কেটে দেওয়ার হুমকি দিতে পারেন? এইসব বক্তব্য থেকে জন্ম নেওয়ার একটা রাজনৈতিক দল দাঙ্গাবাজ নয়তো কী?”
দাঙ্গাবাজ বিজেপি! (Debangshu Bhattacharya)
তিনি আরও কটাক্ষ করে বলেছেন, “ঘটনা যে সব দিকে এগোচ্ছে, কাল বিজেপিকে (Debangshu Bhattacharya) দাঙ্গাবাজ বললে বিজেপিও সুব্রত বক্সীকে চিঠি লিখে বলবে “হিন্দু সমাজ ক্ষুব্ধ!” কী দিনকাল পড়ল.. হে ঈশ্বর!
মুসলিম সমাজ কাকে বলে জানেন ভাইজান? সেদিন যখন NRC-র ভয় দেখিয়ে কোটি কোটি মুসলমানকে দেশে কোণঠাসা করে রাখা হচ্ছিল, সেদিন দল তৈরি করেননি কেন? বাংলার বিধানসভা নির্বাচনের ঠিক কয়েক মাস আগে পার্টি তৈরি করেছিলেন কাদের ক্ষমতায় আসার রাস্তা পরিষ্কার করে দেওয়ার জন্য? কাদের ফান্ডিং ছিল ওই বিরাট বিরাট জনসভার পেছনে? মাসখানেক আগে যখন এক বৃদ্ধ মুসলমান চাচাকে মিথ্যা অপবাদে ট্রেনের মধ্যে আক্রমণ করা হলো, তখন সত্য উন্মোচন করতে এই দেবাংশুকে ভিডিও বানাতে হয়েছিল কেন? কোথায় ছিলেন আপনি?”
আরও পড়ুন: Murshidabad Unrest: রাজ্যপালের সফরের আগে উত্তপ্ত ধুলিয়ান, প্রশাসনিক তৎপরতা ঘিরে রাজনৈতিক চাপানউতোর!
“কোথায় ছিল আপনার পার্টি? শেষ কবে মাইকের সামনে দাঁড়িয়ে শুভেন্দু অধিকারীকে দাঙ্গাবাজ বলেছেন? চোর বলেছেন? মনে পড়ে? আপনাকে যখন একটি সংবাদ মাধ্যম জিজ্ঞেস করেছিল, শুভেন্দু অধিকারী না অধীর চৌধুরী? আপনি শুভেন্দু অধিকারীর ঢালাও প্রশংসা করে তার নামটা বেছে নিয়েছিলেন। সেই ভিডিও এখনও মার্কেটে অ্যাভেলেবেল। আপাতভাবে একটি সেকুলার দল করা অধীর চৌধুরীকে বেছে না নিয়ে, শুভেন্দু অধিকারীকে বেছে নিয়েছিলেন কী কারণে জন্য নওশাদ বাবু?”

তিনি আরও বলেছেন, “মুখ খোলাবেন না। অনেক গুলো স্ক্রিনশট এখনও রাখা আছে। কার সাথে কী কী আলোচনা করেছেন মেসেজে এসব বেরিয়ে এলে আপনার পার্টির সমর্থকরাই আপনাকে ত্যাগ করবে। সেগুলো প্রকাশ্যে এলে সুবিধা জনক হবে না আপনার জন্য। রাজনৈতিক সৌজন্যের খাতিরে সে সমস্ত করি না।
বিজেপি যেমন ভাবে সব হিন্দু বুঝি তার পকেটস্থ, আপনিও সেই একই ভ্রান্ত বৃত্তে পাক খাচ্ছেন! না মোদী আর বিজেপি হিন্দুদের প্রতিনিধি, না আপনি বা আইএসএফ মুসলিম সমাজের প্রতিনিধি। মরীচিকা থেকে বেরিয়ে আসুন। ভাঙরের আইএসএফের বাইরে বেরিয়ে একটু প্রকৃত, সাধারণ, খেটে খাওয়া মুসলমানদের সাথে মেলামেশা বাড়ান.. অনেক ভুল ভাঙবে।
আর হ্যাঁ, সত্যিটা হজম করতে শিখুন।”