ট্রাইব টিভি বাংলা ডিজিটাল: মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের (Donald Trump) সাম্প্রতিক ঘোষণা বিশ্ব বাণিজ্য মহলে আলোড়ন সৃষ্টি করেছে (Dirty 15)। ট্রাম্প প্রশাসন ২ এপ্রিলকে ‘আমেরিকার মুক্তি দিবস’ (লিবারেশন ডে) হিসেবে ঘোষণা করতে চলেছে এবং এদিনই প্রকাশ করা হবে নতুন ‘পারস্পরিক শুল্ক’ নীতি। এই নীতির আওতায় একাধিক দেশের বিরুদ্ধে অতিরিক্ত শুল্ক আরোপ করতে চলেছে যুক্তরাষ্ট্র, যাদের বাণিজ্য নীতি ট্রাম্প প্রশাসন অন্যায্য বলে মনে করছে। ট্রাম্প নিজেই এই দেশগুলোকে ‘কুখ্যাত পঞ্চদশ’ (Dirty 15) বলে অভিহিত করেছেন।
ট্রাম্পের লক্ষ্যবস্তু কারা? (Dirty 15)
যদিও আনুষ্ঠানিকভাবে এখনও কোনও দেশের নাম (Dirty 15) প্রকাশ করা হয়নি, মার্কিন কোষাগার সচিব স্কট বেসেন্ট জানিয়েছেন, এই তালিকায় এমন দেশ রয়েছে যারা আমেরিকার মোট বাণিজ্যের ১৫ শতাংশেরও বেশি অংশীদার এবং মার্কিন পণ্যের উপর উচ্চ হারে শুল্ক এবং কঠোর বাণিজ্য বিধিনিষেধ আরোপ করে। মার্কিন বাণিজ্য দফতরের ২০২৫ সালের রিপোর্ট অনুসারে, এই তালিকায় থাকতে পারে— চিন, ইউরোপীয় ইউনিয়ন, মেক্সিকো, ভিয়েতনাম, আয়ারল্যান্ড, জার্মানি, তাইওয়ান, জাপান, দক্ষিণ কোরিয়া, কানাডা, ভারত, থাইল্যান্ড, ইতালি ও সুইৎজ়ারল্যান্ড। ট্রাম্প প্রশাসনের দাবি, এই দেশগুলো মার্কিন বাণিজ্যের ভারসাম্য নষ্ট করছে এবং আমেরিকার অর্থনীতিকে ক্ষতিগ্রস্ত করছে।
নতুন শুল্কের সম্ভাব্য প্রভাব (Dirty 15)
নতুন নীতির আওতায় কোন কোন পণ্যে শুল্ক আরোপ হবে, তা এখনো নির্দিষ্টভাবে জানানো হয়নি (Dirty 15)। তবে বিশেষজ্ঞদের অনুমান, শুল্ক বৃদ্ধির আওতায় আসতে পারে—
- ইস্পাত ও অ্যালুমিনিয়াম: আগেও ট্রাম্প এই শিল্পে উচ্চ শুল্ক আরোপ করেছেন।
- বিদেশি গাড়ি ও খুচরো যন্ত্রাংশ: ৪ এপ্রিল থেকে গাড়ি এবং গাড়ির যন্ত্রাংশের ওপর ২০% শুল্ক কার্যকর হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
- ওষুধ এবং সেমিকন্ডাক্টর: প্রযুক্তি ও ওষুধ শিল্পের উপরও শুল্ক বসতে পারে।
বিশ্ব অর্থনীতিতে এর প্রভাব ব্যাপক হতে পারে। মার্কিন বাজারে বিদেশি পণ্যের দাম বেড়ে গেলে আমেরিকান ভোক্তাদের জন্য জীবনযাত্রার ব্যয় বৃদ্ধি পাবে। একই সঙ্গে, আমেরিকার বিরুদ্ধে অন্যান্য দেশ প্রতিশোধমূলক শুল্ক আরোপ করতে পারে, যা আন্তর্জাতিক বাণিজ্যকে আরও জটিল করে তুলবে।

আরও পড়ুন: India China : ড্রাগন-হাতির যুগল নৃত্য! রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মুকে চিঠি প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং-এর
বিশ্বজুড়ে প্রতিক্রিয়া ও ভারতের অবস্থান (Dirty 15)
ট্রাম্পের ঘোষণার পর বিশ্ব বাণিজ্য মহলে উদ্বেগ ছড়িয়ে পড়েছে (Dirty 15)। বিশেষজ্ঞদের মতে, নতুন শুল্ক নীতি অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি কমিয়ে দিতে পারে এবং বৈশ্বিক বাজারে অস্থিরতা সৃষ্টি করতে পারে। ইতিমধ্যেই ২১টি দেশের বাণিজ্য নীতি নিয়ে আপত্তি জানিয়েছে মার্কিন বাণিজ্য প্রতিনিধি দফতর (USTR)। এই তালিকায় রয়েছে ভারত, চিন, ইউরোপীয় ইউনিয়ন, রাশিয়া, ব্রাজিল, দক্ষিণ কোরিয়া, মালয়েশিয়া, মেক্সিকো, অস্ট্রেলিয়া ও ইংল্যান্ড। ভারত এই পরিস্থিতির উপর নজর রাখছে এবং বিকল্প বাণিজ্য নীতির কৌশল নিয়ে ভাবনা-চিন্তা করছে। নয়াদিল্লির আশঙ্কা, নতুন শুল্ক নীতি ভারতের রপ্তানির উপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে, বিশেষ করে তথ্যপ্রযুক্তি, ফার্মাসিউটিক্যালস এবং ইস্পাত খাতে।

আরও পড়ুন: US Tariff War : বুধবার রাতে ট্রাম্পের “পাল্টা শুল্ক” ঘোষণার সঙ্গে সঙ্গে কার্যকর, জল মেপে ব্যবস্থা নেবে ভারত!
বিশ্ব বাণিজ্যে পরিবর্তন (Dirty 15)
ট্রাম্প প্রশাসনের নতুন শুল্ক নীতি বিশ্ব বাণিজ্য ব্যবস্থায় বড় পরিবর্তন আনতে পারে। মার্কিন প্রেসিডেন্টের ঘোষণা অনুযায়ী, ২ এপ্রিল আনুষ্ঠানিকভাবে এই নীতি প্রকাশ করা হবে। বিশ্বজুড়ে অর্থনৈতিক বিশ্লেষকরা এখন অপেক্ষায় রয়েছেন— ট্রাম্প প্রশাসন ‘কুখ্যাত পঞ্চদশ’ তালিকায় কাদের রাখে এবং নতুন শুল্কের হার কত হয়। এর পরবর্তী প্রতিক্রিয়া ও পাল্টা শুল্ক যুদ্ধ কেমন হবে, সেটাই দেখার বিষয়।