ট্রাইব টিভি বাংলা ডিজিটাল: আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প (Donald Trump New Decision) গত বুধবার একটি নতুন নির্বাহী আদেশে স্বাক্ষর করেছেন, যার ফলে রূপান্তরকামী খেলোয়াড়রা আর মেয়েদের খেলায় অংশগ্রহণ করতে পারবেন না। এই পদক্ষেপটি ট্রাম্পের শাসনামলে আরও একটি গুরুত্বপূর্ণ পরিবর্তন হিসেবে চিহ্নিত হতে চলেছে, যা সমাজের বিভিন্ন অংশে বিতর্কের সৃষ্টি করেছে।
হোয়াইট হাউসে সাক্ষর (Donald Trump New Decision)
হোয়াইট হাউসে ট্রাম্প এই নির্বাহী (Donald Trump New Decision) আদেশে স্বাক্ষর করেন। তাঁর সঙ্গে ছিলেন বেশ কয়েকজন শিশু ও মহিলা ক্রীড়াবিদ, মার্কিন হাউস স্পিকার মাইক জনসন, কংগ্রেসওম্যান মার্জোরি গ্রিন এবং অন্যান্য শীর্ষস্থানীয় রিপাবলিকান নেতারা। নির্বাহী আদেশে স্বাক্ষরের পর ট্রাম্প বলেন, ‘‘আজ থেকে মেয়েদের খেলাধূলার বিরুদ্ধে দীর্ঘ যুদ্ধের অবসান হল!’’ এই বক্তব্যে তিনি স্পষ্টতই সেই নীতি গ্রহণের কথা বলছিলেন, যা রূপান্তরকামী খেলোয়াড়দের মেয়েদের খেলাধুলায় অংশগ্রহণের অনুমতি দিচ্ছিল না।
লিঙ্গ পরিচয়ের নতুন অংশ (Donald Trump New Decision)
ট্রাম্পের এই পদক্ষেপটি যুক্তরাষ্ট্রে লিঙ্গ পরিচয়ের নতুন নীতির (Donald Trump New Decision) অংশ। প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকেই তিনি ঘোষণা করেছিলেন, আমেরিকায় সরকারিভাবে শুধু দুটি লিঙ্গকে স্বীকৃতি দেওয়া হবে— পুরুষ ও মহিলা। এর বাইরে অন্য কোনো লিঙ্গ পরিচয়কে সরকারি নথিপত্রে বা নীতিতে অন্তর্ভুক্ত করা হবে না। ২০২৫ সালে দ্বিতীয়বার ক্ষমতায় ফিরে আসার পর ট্রাম্প আরও একবার এই নীতি কার্যকর করার উদ্দেশ্যে নির্বাহী আদেশ জারি করেছিলেন। এর ফলে, এখন থেকে পাসপোর্ট, ভিসা এবং অন্যান্য সরকারি নথিপত্রে শুধুমাত্র পুরুষ ও মহিলা এই দুটি লিঙ্গের নাম উল্লেখ করা হবে।
আরও পড়ুন: Trump On Gaja-Israel War: এবার গাজা দখলের হুমকি ট্রাম্পের, নেতানিয়াহুর সঙ্গে আলোচনার পরই হুমকি
বাইডেনের নীতি বদল
এর আগে, প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন রূপান্তরকামীদের জন্য সরকারি নথিতে পৃথক লিঙ্গের ব্যবস্থা চালু করেছিলেন। ২০১৯ সালে, বাইডেনের প্রশাসন সিদ্ধান্ত নেয় যে, রূপান্তরকামীদের জন্য নতুন একটি লিঙ্গ নির্বাচন করার সুযোগ দেওয়া হবে। বাইডেন ক্ষমতায় আসার পর প্রথম দিনেই এই নীতিটি কার্যকর করেছিলেন। কিন্তু ট্রাম্পের শাসনামলে এই নীতি বদলানোর উদ্যোগ নেয়া হয় এবং শীঘ্রই সেই পদক্ষেপ কার্যকর হয়ে যায়।
সিদ্ধান্তে অটল ট্রাম্প
এছাড়া, ট্রাম্পের নির্বাচনী প্রচারে প্রায় ৫০ শতাংশ অংশ জুড়ে ছিল সমকামী ও রূপান্তরকামীদের বিরুদ্ধে প্রচারণা। এমনকি, প্রেসিডেন্টের শপথগ্রহণের দিন ওয়াশিংটনের বিশপ ম্যারিয়ান এগডার বাড সমাজে সমকামী-রূপান্তরকামী মানুষদের অস্তিত্ব স্বীকার করার জন্য সরাসরি ট্রাম্পকে অনুরোধ করেন। তবে, ট্রাম্প তার অবস্থানে অটল ছিলেন।
রূপান্তরকামীদের অধিকার হরণ
নতুন এই আদেশটি রূপান্তরকামীদের বিরুদ্ধে একটি নতুন ধরণের বৈষম্যের জন্ম দিতে পারে, এই আশঙ্কা অনেক সমর্থক এবং অধিকারকর্মীদের মধ্যে রয়েছে। তারা মনে করেন, এটি রূপান্তরকামীদের জন্য সামাজিক ন্যায়বিচারের পথে একটি বড় বাধা হতে পারে। তারা দাবি করছেন যে, এই নিষেধাজ্ঞাটি রূপান্তরকামী খেলোয়াড়দের স্বাভাবিক জীবনযাপনের অধিকারকে হরণ করবে এবং তাদের প্রতি বৈষম্য বাড়াবে।
ট্রাম্পের সঙ্গতিপূর্ণ পদক্ষেপ
তবে, ট্রাম্পের সমর্থকরা এই পদক্ষেপটিকে নারী সুরক্ষা এবং স্বাস্থ্য-সামাজিক নীতির সঙ্গে সংগতিপূর্ণ বলে মনে করছেন। তাদের দাবি, রূপান্তরকামী খেলোয়াড়রা শারীরিকভাবে মেয়েদের খেলাধুলার সঙ্গে তুলনা করা যায় না, এবং এটি মেয়েদের জন্য একটি ন্যায়বিচারের বিষয়।
বৈষম্যের নীতি
এই বিতর্কের মধ্যে, ট্রাম্পের সিদ্ধান্ত নিয়ে আমেরিকা জুড়ে নানা ধরনের মতবিরোধ সৃষ্টি হয়েছে। সমাজের একাংশ মনে করছে যে, এই ধরনের নীতি চূড়ান্তভাবে বৈষম্যের পক্ষে কাজ করবে, অন্যদিকে ট্রাম্পের সমর্থকরা এই পদক্ষেপকে সঠিক হিসেবে দেখছেন। ভবিষ্যতে, এই নির্বাহী আদেশের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা দায়ের হওয়া বা আরও অন্যান্য উদ্যোগ গ্রহণের সম্ভাবনা রয়েছে।