ট্রাইব টিভি বাংলা ডিজিটাল: মাত্র এক দিন আগেই তিনি প্রশ্ন তুলেছিলেন, “ইরানে শাসকবদল কেন হবে না?” আর ঠিক তার ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প জানালেন, আমেরিকা ইরানে শাসকবদল চায় না (Donald Trump On Iran)। তাঁর বক্তব্য, ‘‘আমি কোনও বিশৃঙ্খলা দেখতে চাই না। শান্তিই একমাত্র অগ্রাধিকার।’’
ট্রাম্পের শাসকবদল মন্তব্য ঘিরে জল্পনা (Donald Trump On Iran)
ট্রাম্পের এই মন্তব্য ঘিরে আন্তর্জাতিক রাজনীতিতে চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে (Donald Trump On Iran)। কারণ, সোমবার গভীর রাতে (ভারতীয় সময়) ট্রাম্প নিজেই ট্রুথ সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করেছিলেন—“শাসকবদল শব্দটা হয়তো রাজনৈতিক ভাবে ঠিক নয়, কিন্তু যদি বর্তমান শাসক ইরানকে সঠিক পথে না চালাতে পারেন, তবে কেন সেখানে শাসকবদল হবে না?” এই মন্তব্যে জল্পনা তৈরি হয়েছিল যে, ট্রাম্প প্রশাসন হয়তো ইরানের শাসনব্যবস্থার বিরুদ্ধে সক্রিয় হতে চলেছে।
কিন্তু মঙ্গলবার সেই মন্তব্যের ব্যাখ্যা দিতে গিয়ে ট্রাম্প (Donald J. Trump) বলেন, “হ্যাঁ, যদি আমি বলেও থাকি, আজ আমি বলতে চাই— আমি এটা চাই না। আমি সব কিছু খুব তাড়াতাড়ি শান্ত হতে দেখতে চাই।” একই সঙ্গে তিনি ইরানিদের প্রশংসাও করেন, বলেন— “ইরানিরা খুব ভাল ব্যবসায়ী। ওদের প্রচুর তেল আছে। ওদের আবার গঠন করার ক্ষমতা থাকা উচিত। শুধু একটাই জিনিস ওদের থাকা উচিত নয়— পারমাণবিক শক্তি(Donald Trump On Iran)।”
শাসকবদলের মন্তব্য প্রত্যাহার ট্রাম্পের (Donald Trump On Iran)
ট্রাম্পের এই অবস্থান ঘিরে বিশ্লেষকদের একাংশ মনে করছেন, পশ্চিম এশিয়ার পরিস্থিতি যেভাবে জটিল থেকে জটিলতর হচ্ছে, সেখানে শাসকবদলের মতো চূড়ান্ত বক্তব্য থেকে এখন সরে আসতে বাধ্য হচ্ছেন ট্রাম্প। কারণ, রবিবারই মার্কিন বি-২ বম্বার দিয়ে ইরানের তিনটি পরমাণুকেন্দ্রে হামলা চালায় আমেরিকা। পাল্টা সোমবার রাতে কাতারের মার্কিনঘাঁটিতে হামলা চালায় ইরান। এর জেরে পরিস্থিতি বিপজ্জনক রূপ নেয়।

আরও পড়ুন: Iran Israel Conflict : পশ্চিম এশিয়ার যুদ্ধবিরতিতে ময়দানে কাতার! সংঘর্ষ থামলেও শান্তি এখনও অনিশ্চিত
যুদ্ধবিরতিতে রাজি ইরান ও ইজ়রায়েল (Donald Trump On Iran)
এই প্রেক্ষাপটে সোমবার রাতে ট্রাম্প ঘোষণা করেন, ইরান ও ইজরায়েল যুদ্ধবিরতিতে রাজি হয়েছে(Donald Trump On Iran)। তিনি বলেন, “আগামী ছ’ঘণ্টার মধ্যে যুদ্ধবিরতি কার্যকর হবে। প্রথমে ইরান শান্তি রক্ষা করবে, ১২ ঘণ্টা পর ইজরায়েল। ২৪ ঘণ্টার মধ্যে যুদ্ধ শেষ বলে ঘোষণা করা হবে।”তবে সংঘর্ষ থামলেও রাজনৈতিক মতভেদ এবং বাণিজ্যনৈতিক চাপানউতোর অব্যাহত। ইতিমধ্যেই ইরান ট্রাম্পের সংঘর্ষবিরতির দাবিকে অস্বীকার করেছে। তারা জানিয়েছে, যুদ্ধবিরতি নিয়ে কোনও চূড়ান্ত সমঝোতা হয়নি। সেই আবহে ট্রাম্পের শাসকবদল নিয়ে মন্তব্য এবং তার ঘূর্ণি-ঘোরানো ব্যাখ্যা আন্তর্জাতিক কূটনৈতিক মহলে বিভ্রান্তি তৈরি করেছে।

আরও পড়ুন: Iran Israel Conflict : পুতিনের ‘সাহায্য’ প্রত্যাখ্যান! ইরান-ইজরায়েল সংঘাতে একাই মধ্যস্থতায় ট্রাম্প
শাসকবদল চাই না,জেডি ভান্স (Donald Trump On Iran)
মার্কিন ভাইস প্রেসিডেন্ট জেডি ভান্স অবশ্য আগেই বলেছিলেন, ‘‘আমরা শাসকবদল চাই না (Donald Trump On Iran)। শুধু পরমাণু কর্মসূচি বন্ধ হলে তবেই কূটনৈতিক সমঝোতা সম্ভব।’’এই মুহূর্তে ট্রাম্প যে ইরানে ‘স্থিতিশীলতা’ চান, তা স্পষ্ট। কিন্তু ইজরায়েল-ইরান উত্তেজনার আবহে পরবর্তী পদক্ষেপ কী হবে, তা নির্ধারণ করবে বিশ্বের একাধিক শক্তিধর রাষ্ট্রের কূটনৈতিক ভারসাম্য। শাসকবদল হোক বা না হোক, আমেরিকার আসল লক্ষ্য যে ইরানের পারমাণবিক ক্ষমতা রোধ— তা বলাই বাহুল্য।