ট্রাইব টিভি বাংলা ডিজিটাল: আন্তর্জাতিক বাণিজ্য নীতিতে এক গুরুত্বপূর্ণ মোড় ঘুরল মার্কিন মুলুকে। প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের (Donald J. Trump) ‘পাল্টা শুল্ক’ নীতিকে প্রথমে ‘ক্ষমতা-বহির্ভূত’ বলে বাতিল করেছিল আন্তর্জাতিক বাণিজ্য বিষয়ক আদালত(Donald Trump Tariff Row)। কিন্তু মাত্র ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই সেই সিদ্ধান্ত স্থগিত রাখার নির্দেশ দিল আমেরিকার একটি আপিল আদালত। হোয়াইট হাউসের কাছে এটি বড় স্বস্তির বার্তা বলেই মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।
কেন বাতিল হয়েছিল পাল্টা শুল্ক নীতি? (Donald Trump Tariff Row)
গত ২ এপ্রিল ট্রাম্প ঘোষণা করেন, আমেরিকার উপর যে দেশ যতটা শুল্ক চাপায়, আমেরিকাও তাদের রফতানি পণ্যে ঠিক ততটাই পাল্টা শুল্ক আরোপ করবে (Donald Trump Tariff Row)। এই সিদ্ধান্তের আওতায় ভারতের উপরেও চাপানো হয়েছিল ২৬ শতাংশ অতিরিক্ত শুল্ক। যুক্তি ছিল— এতে আমেরিকার স্থানীয় শিল্প উপকৃত হবে এবং বাণিজ্য ঘাটতি হ্রাস পাবে। তবে এই শুল্কনীতির বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে আন্তর্জাতিক বাণিজ্য আদালতে মামলা দায়ের হয়। বুধবার আদালত জানিয়ে দেয়, এই সিদ্ধান্ত মার্কিন সংবিধান অনুযায়ী প্রেসিডেন্টের ক্ষমতার আওতায় পড়ে না, ফলে তা বাতিলযোগ্য। এই রায়ের পরেই হোয়াইট হাউসে চাপ তৈরি হয়। শেয়ার বাজারে তৎক্ষণাৎ ইতিবাচক প্রভাব দেখা দিলেও প্রশাসন এই রায়ে খুশি ছিল না। মুখপাত্র কুশ দেশাই অভিযোগ তোলেন, “অনির্বাচিত বিচারকেরা দেশের জরুরি অর্থনৈতিক নীতির ভবিষ্যৎ ঠিক করতে পারেন না (Donald Trump Tariff Row)।”
জাতীয় নিরাপত্তা বিপন্ন হওয়ার সম্ভবনা(Donald Trump Tariff Row)
তড়িঘড়ি আপিল আদালতের দ্বারস্থ হয় ট্রাম্প প্রশাসন। তারা জানায়, শুল্ক প্রত্যাহার করা হলে দেশের জাতীয় নিরাপত্তা বিপন্ন হতে পারে(Donald Trump Tariff Row)। আদালতের কাছে তারা আর্জি জানায়, অন্তত চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত না আসা পর্যন্ত বাণিজ্য আদালতের রায় স্থগিত রাখা হোক। আপিল আদালত সেই আর্জি মেনে নেয় এবং জানিয়ে দেয়, মামলার পরবর্তী শুনানির আগে পর্যন্ত ট্রাম্পের শুল্কনীতি বহাল থাকছে।

আরও পড়ুন: Imran Khan : জেল থেকেই আন্দোলনের ডাক ইমরানের! চাপে শাহবাজ সরকার
একই সঙ্গে আদালত নির্দেশ দিয়েছে, মামলাকারীদের ৫ জুন এবং হোয়াইট হাউসকে ৯ জুনের মধ্যে তাঁদের বক্তব্য লিখিত আকারে জমা দিতে হবে।বাণিজ্য আদালতের রায়ের পর ভারত-সহ একাধিক দেশ যেভাবে স্বস্তি পেয়েছিল, আপিল আদালতের এই নতুন সিদ্ধান্তে সেই স্বস্তি খানিকটা ম্লান হতে পারে। বিশেষ করে ভারতের মতো দেশ, যারা আমেরিকার সঙ্গে একটি স্থায়ী বাণিজ্যচুক্তির পথে এগোচ্ছে, তাদের পক্ষে এটা নতুন চাপের ইঙ্গিত(Donald Trump Tariff Row)।

আদালতের আইনি প্রতিবন্ধকতা(Donald Trump Tariff Row)
হোয়াইট হাউসের ঘনিষ্ঠ সূত্রে জানা গেছে, বিকল্প পথে শুল্ক আদায়ের জন্য বিভিন্ন আইনি ও প্রশাসনিক সম্ভাবনা খতিয়ে দেখা হচ্ছে(Donald Trump Tariff Row)। ট্রাম্প প্রশাসনের পক্ষ থেকে আরও কিছু দেশের সঙ্গে বাণিজ্য চুক্তি গঠনের কথাও বলা হয়েছে, যদিও নির্দিষ্ট কোনও দেশের নাম এখনও প্রকাশ করা হয়নি। এই ঘটনাপ্রবাহ প্রমাণ করে, মার্কিন বাণিজ্যনীতি এখন এক দ্বিধাবিভক্ত পথের সামনে দাঁড়িয়ে। একদিকে অভ্যন্তরীণ আদালতের আইনি প্রতিবন্ধকতা, অন্যদিকে প্রেসিডেন্টের জাতীয় নিরাপত্তার যুক্তি। সামনের মাসগুলিতে এই টানাপড়েন মার্কিন অভ্যন্তরীণ অর্থনীতি ও বৈদেশিক সম্পর্ক— উভয় ক্ষেত্রেই বড় প্রভাব ফেলতে চলেছে বলেই মনে করছেন কূটনৈতিক মহল।