ট্রাইব টিভি বাংলা ডিজিটাল: ইরান যদি আমেরিকার উপর হামলা চালানোর চেষ্টা করে, তাহলে ‘তছনছ’ করে দেওয়া হবে। পশ্চিম এশিয়ায় সংঘাতের মধ্যেই হুঁশিয়ারি দিলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প(Donald Trump)।এতদিন তিনি সমঝোতার প্রস্তাব দিচ্ছিলেন। এবার ইরানকে সরাসরি হুঁশিয়ারি ট্রাম্পের।এতে পশ্চিম এশিয়ার পরিস্থিতি আরও ঘোরাল হতে পারে বলে মনে করছেন কূটনীতিকরা।
ইরান-ইজরায়েল সংঘাত (Donald Trump)
এই মুহূর্তে ইরান এবং ইজরায়েলের সংঘাত তৃতীয় দিনে পদার্পণ করেছে(Donald Trump)।শুক্রবারের পর থেকে লাগাতার একে অপরের উপর হামলা চালিয়ে যাচ্ছে ইরান-ইজরায়েল। নতুন করে ফের ইরানের তৈল সংশোধনাগার, প্রতিরক্ষা ঘাঁটিতে হামলা চালিয়েছে ইজরায়েল। পাল্টা তেল আভিভে ক্ষেপণাস্ত্র দেগেছে তেহরানও।রবিবার সকালে ফের হামলার ঝাঁজ বাড়িয়েছে দুই দেশ। ইয়েমেনে সংগঠন হুথিরাও ইরানের সঙ্গে একজোট হয়ে ইজরায়েলে হামলা চালিয়েছে। ইরাকের পশ্চিমে বায়ুসেনা ঘাঁটিতে আমেরিকার বাহিনী মোতায়েন রয়েছে। সেখানেই তিনটি ড্রোনের মাধ্যমে হামলার চেষ্টা হয় বলে জানা যাচ্ছে। তবে এখনও পর্যন্ত কোনও সংগঠন এর দায় স্বীকার করেনি। তবে ইরান সমর্থিত সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলি এর নেপথ্যে থাকতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে। দুই দেশ মিলিয়ে অন্তত ৮৮ জনের মৃত্যু হয়েছে।

মার্কিন প্রেসিডেন্টের হুঁশিয়ারি (Donald Trump)
শুক্রবার ‘চিরশত্রু’ ইরানের উপর আকাশপথে অন্যতম বৃহৎ হামলাটি চালিয়েছে ইজরায়েলি বাহিনী(Donald Trump)। তার নেপথ্যে আমেরিকার হাত দেখেছেন অনেকেই। ট্রাম্প এই হামলাকে একপ্রকার সমর্থনও করেন। ইজরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুর পাশে দাঁড়িয়ে জানিয়ে দেন, এই হামলার কথা তিনি আগে থেকেই জানতেন। তা ঠেকানোর চেষ্টাও করেছিলেন। কিন্তু ইরান অনড় থাকায় তা সম্ভব হয়নি। তারপরেই শনিবার আমেরিকাকে হুঁশিয়ারি দেয় ইরান। এবার ইরানকে পাল্টা হুঁশিয়ারি দিয়ে ট্রুথ সোশ্যালে ট্রাম্প লিখলেন, ‘ইরানে যে হামলা হয়েছে, তা নিয়ে আমেরিকার কিছুই করার ছিল না। যদি আমাদের উপর কোনও পথে, কোনও ভাবে বা আকারে ইরান হামলা চালায়, তা হলে আমেরিকার সেনাবাহিনী সর্বশক্তি দিয়ে ঝাঁপিয়ে পড়বে আপনাদের উপর। এমন ভাবে ঝাঁপিয়ে পড়বে, যা আগে দেখা যায়নি।’ তবে তিনি দুই দেশের মধ্যে সমঝোতা করানোর প্রস্তাবও দিয়ে রেখেছেন। ট্রাম্প লিখেছেন, ‘ইরান এবং ইজরায়েলের মধ্যে অনায়াসে আমরা একটা চুক্তি করাতে পারি, এই সংঘাতে ইতি টানতে পারি।’

আরও পড়ুন-Iran-Israel conflict: ইরান-ইজরায়েল সংঘাত; বিশ্বব্যাপী ব্যাপক প্রভাব
আমেরিকার ‘মদত’? (Donald Trump)
ইরানে ইজরায়েলের হামলায় মৃত্যু হয়েছে সে দেশের চার শীর্ষ সেনাকর্তা এবং ছ’জন পরমাণু বিজ্ঞানীর(Donald Trump)। নিহত হয়েছেন ইরানের সশস্ত্রবাহিনীর সর্বাধিনায়ক মেজর জেনারেল মহম্মদ বাগেরি। এর নেপথ্যে আমেরিকার ‘মদত’ রয়েছে বলে মনে করেছে ইরান। ট্রাম্পও জানিয়ে দেন, এই হামলার কথা তিনি আগেই জানতেন। হামলাকে তিনি সমর্থনও করেছেন। জানা গিয়েছে, ইরানে ইজরায়েলের এই হামলার ঠিক আগে ট্রাম্পের সঙ্গে ফোনে কথা বলেছিলেন নেতানিয়াহু। দীর্ঘক্ষণ তাঁদের মধ্যে আলোচনা হয়েছে। ট্রাম্প তখনই জানিয়ে দেন, ইজরায়েল হামলা চালালে আমেরিকা বাধা দেবে না। শনিবার ট্রাম্প নেতানিয়াহুর পাশে দাঁড়িয়ে এও জানিয়েছিলেন যে, কূটনীতি এবং আলোচনার জন্য ইরানকে ৬০ দিন সময় দেওয়া হয়েছিল। সেই সময় পেরিয়ে গিয়েছে। শুক্রবারই (স্থানীয় সময়) ৬১তম দিন। সেই কারণেই ইজরায়েল ইরানের উপর হামলা চালিয়েছে।

আরও পড়ুন-Iran-Israel conflict: ইজরায়েলে পর পর ক্ষেপণাস্ত্র হামলা ইরানের, আক্রমণের ঝাঁজ বাড়াল তেল আভিভ
ইরানের হুমকি (Donald Trump)
থেমে থাকেনি ইরানও(Donald Trump)। পাল্টা হামলা চালিয়েছে ইজরায়েলে। শনিবার তারা আমেরিকা, ব্রিটেন এবং ফ্রান্সকেও হুমকি দিয়েছে। বলেছে, ইজরায়েলকে সাহায্য করলে তাদের সামরিক ঘাঁটিতেও হামলা হবে। রবিবার ওমানে আমেরিকার সঙ্গে যে বৈঠক হওয়ার কথা, তাতেও ‘না’ বলে দিয়েছে ইরান। তারপরেই ইরানকে পাল্টা হুঁশিয়ারি দিয়ে রাখলেন ট্রাম্প। জানালেন, ইজরায়েল যে হামলা শুরু করেছে, তা নিয়ে তাঁর কিছুই করার ছিল না। কিন্তু ইরান আমেরিকার উপর প্রত্যাঘাত করলে ছেড়ে কথা বলবে না।

আন্তর্জাতিক বিধিনিষেধ লঙ্ঘন (Donald Trump)
আন্তর্জাতিক বিধিনিষেধ ভেঙে ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ কর্মসূচি চালানো হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে ইরানের বিরুদ্ধে(Donald Trump)। আমেরিকা চায় না ইরান ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ কর্মসূচি চালিয়ে যাক। একাধিক রিপোর্ট অনুযায়ী, ইরান ইতিমধ্যেই ইউরেনিয়ামের বিশুদ্ধতা ৬০ শতাংশে নিয়ে গিয়েছে। পরমাণু অস্ত্র তৈরি করতে এই বিশুদ্ধতার পরিমাণ আরও কয়েক শতাংশ বৃদ্ধি করতে হবে ইরানকে। কিন্তু আমেরিকা চায় এখানেই থেমে যাক ইরান।