ট্রাইব টিভি বাংলা ডিজিটাল: পুরুলিয়ার জয়পুর থানার ডিমডিহা (Dimdiha) গ্রাম। রাস্তার ধারে দ্বিতল ভবন। দেয়ালে লেখা দেখে বোঝা যাবে ওটা একটা স্কুল (Drunkards in Girls School)। তবে এই স্কুলে নেই কোনো পড়ুয়া, নেই কোনো শিক্ষক। সন্ধ্যেবেলায় সেখানে হাতে বোতল নিয়ে আসর বসায় অন্য পড়ুয়ারা। বসে মদের পাঠশালা। অবাক লাগলেও এমনি ঘটনার ছবি দেখা গেলো পুরুলিয়ার জয়পুর ব্লকের ডিমডিহা গার্লস জুনিয়র হাই স্কুলে (Dimdiha Girls High School)।
মেয়েদের পড়ার জন্য হয় জমিদান (Drunkards in Girls School)
গ্রামের মেয়েরা শিক্ষিত হবে, এই ভেবেই স্কুলের জন্য জমিদান করেছিলেন গ্রামবাসীরা। সেই জমির ওপর স্কুলের ভবনও তৈরি হয়। আলাদা আলাদা ক্লাসরুম, দেওয়ালে ব্ল্যাকবোর্ড, সবই আছে। কিন্তু ছাত্রী থেকে শিক্ষক-শিক্ষিকা কই? বারান্দার চেহারা দেখে তো বোঝার উপায় নেই স্কুল নাকি মদের ঠেক? বছরের পর বছর এভাবেই পড়ে রয়েছে আস্ত স্কুল (Drunkards in Girls School)। স্কুলের এহেন অবস্থা দেখে হতাশ গ্রামবাসীরা।
গার্লস হাই স্কুল নাকি মদের ঠেক? (Drunkards in Girls School)
গ্রামবাসীদের দাবি, এলাকার মেয়েদের জন্য তৈরি করা হয়েছিল এই জুনিয়র গার্লস হাই স্কুল (Dimdiha Girls High School)। চালুও হয়েছিল সেই স্কুল। কিন্তু শিক্ষকের অভাবে বন্ধ হয়ে যায় ওই স্কুল। এখন সন্ধ্যে নামলেই হাতে বোতল নিয়ে আসর বসায় এলাকার ছেলেরা (Drunkards in Girls School)। স্কুলের প্রত্যেকটা ঘরে গেলেই দেখতে পাওয়া যাবে সেই ছবি। স্কুলের প্রত্যেকটা ঘরে গড়াগড়ি খাচ্ছে বিভিন্ন মদের বোতল আর মদের গ্লাস। বিভিন্ন এলাকা থেকে নাকি মদের নেশায় ছুটে যান যুবকরা।
আরও পড়ুন: Waqf Bill Issue: ওয়াকফ বিল সংশোধন করে সম্পত্তি বিক্রি করতে চাইছে কেন্দ্র, ফিরহাদের নিশানায় মোদি
স্কুল তৈরির ইতিহাস (Drunkards in Girls School)
জানা যায়, ২০১৩ সালে গ্রামের ৩ জন সহৃদয় ব্যক্তির কাছ থেকে ৫০ ডেসিমিল জমি নেওয়া হয়। সেই জমিতে ১৬ লক্ষ টাকা দিয়ে ২০১৬-১৭ সালে স্কুল ভবনটি নির্মাণ করা হয়। নাম দেওয়া হয় ডিমডিহা গার্লস জুনিয়ার হাইস্কুল (Dimdiha Girls High School)। তারপরেও ২০২১-২২ সালে আরও ৫ লক্ষ টাকা ব্যয় করে টয়লেট ও ডিপ টিউবওয়েল খনন করা হয়।
হতাশ জমিদাতারা
যারা মহৎ কাজের জন্য জমিদান দান করে ছিলেন তারা খানিকটা হতাশ। জমি দাতা কনিলাল মাহাতোর গলাতেও আক্ষেপের সুর। সরকারের ভূমিকাতেও চরম হতাশ তিনি। সরকার স্কুলটি চালু করুক এটাই তার প্রত্যাশা।
কেন চালু হয়নি ওই স্কুল?
এখন প্রশ্ন আজ পর্যন্ত কেন চালু হয়নি ওই স্কুল? গ্রামবাসীদের বক্তব্য একজন অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষককে এই স্কুলের জন্য নিয়োগ করা হয়েছিল কিন্তু তিনি কোনও দিন পা দেননি এই স্কুলে। ফলে স্কুল ভবন চলে গিয়েছে স্থানীয় দুষ্কৃতীদের দখলে। দিনের বেলায় এলাকার গরু-ছাগলের আস্তানা হয়ে উঠেছে এই স্কুল। আর সন্ধ্যা হলে এই স্কুল ভবন হয়ে যায় মদের ঠেক।
স্থানীয় বাসিন্দা নিরঞ্জন মাহাতো জানান, ‘স্কুল শুরু হলেও পঠনপাঠন হয় না। স্কুলে কোনও শিক্ষক নেই। এই স্কুল সরকার যে কাদের সুবিধার জন্য তৈরী করা করেছে তা বোঝা দায়।’
স্কুল চালুর প্রতিশ্রুতি
এদিকে, জেলা শিক্ষাদপ্তরের কাছেও এই স্কুল নিয়ে কোনো তথ্য নেই। জেলা বিদ্যালয় পরিদর্শক মহুয়া বসাক জানিয়েছেন কয়েকদিন আগে তিনি দায়িত্ব নিয়েছেন। প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন খোঁজ নিয়ে বিষয়টি দেখবেন।