ট্রাইব টিভি বাংলা ডিজিটাল: বিশ্বজুড়ে পরিবেশবান্ধব পণ্যের চাহিদা বাড়তে থাকায় পাট আবার ফিরে আসছে আলোচনার কেন্দ্রে। আর সেই বৈশ্বিক চাহিদা পূরণে ভারতের কৃষিক্ষেত্রে নতুন বিপ্লবের নাম ‘রাজা পাট’ (Raja jute)। অতুলনীয় গুণমান, উচ্চ ফলন এবং দ্বিগুণ বাজারদরের সুবাদে এই পাট এখন শুধু ফসল নয়, গ্রামীণ অর্থনীতির ভিত মজবুত করার এক শক্তিশালী হাতিয়ার হয়ে উঠেছে।
বিশ্বচাহিদার গুরুত্বপূর্ণ জোগানদাতা হয়ে উঠছে হায়দরাবাদভিত্তিক নুজিভীডু সিডস কোম্পানির উদ্ভাবিত ‘রাজা পাট’। উচ্চ ফলনশীল এই পাট প্রজাতি চাষ করে ইতিমধ্যেই প্রচুর কৃষক আর্থিকভাবে লাভবান হয়েছেন।
দাম দ্বিগুণ, লাভ দ্বিগুণ (Raja jute)
গত বছরের তুলনায় এ বছর রাজা পাটের দাম প্রায় দ্বিগুণ হয়েছে। ২০২৪ সালে প্রতি কেজির দাম যেখানে ছিল ₹৪,০০০, সেখানে ২০২৫ সালে তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ₹৮,০০০। ফলে এই পাট চাষে আগ্রহ বেড়েছে রাজ্যের বহু কৃষকের। তুলসীহাটা, হরিশচন্দ্রপুর সহ একাধিক অঞ্চলে কৃষকদের মুখে হাসি ফুটেছে।

আরও পড়ুন:Weather update: বর্ষা মরসুমে এমন আবহাওয়া অস্বাভাবিক নয়!
নতুন প্রজাতির এই উচ্চমানের পাট উদ্ভাবন করেন ডঃ মোহাম্মদ মসিউর রহমান, যিনি নুজিভীডু সিডস কোম্পানির গবেষণা বিভাগের প্রধান। ২০২০ সালে উদ্ভাবিত এনজে-৭০০৫ (রাজা পাট) (Raja jute) বর্তমানে দেশের একাধিক রাজ্যে দ্রুত জনপ্রিয়তা অর্জন করছে। এর আঁশ সাধারণ পাটের তুলনায় উন্নত, লম্বা ও অধিক পরিমাণে উৎপাদনযোগ্য। এই পাট থেকে মিলছে অতিরিক্ত ২ কুইন্টাল ফলন, এবং চাষের খরচও তুলনামূলকভাবে কম। গাছের উচ্চতা প্রায় ২ ফুট বেশি, আঁশ মোটা ও শক্তপোক্ত। কৃষকদের বক্তব্য, একরে গড়ে ১০ হাজার টাকা পর্যন্ত বেশি লাভ হচ্ছে।
মেগা ফিল্ড ডে-তে ঢাকের তালে উদযাপন
এই সাফল্যকে সামনে রেখে মালদার তুলসীহাটায় অনুষ্ঠিত হলো ‘মেগা ফিল্ড ডে’ অনুষ্ঠান, যেখানে উপস্থিত ছিলেন ২০২৫ সালের পদ্মশ্রী প্রাপ্ত ঢাকি সম্রাট গোকুল চন্দ্র দাস। তিনি বলেন, “রাজা পাট (Raja jute) শুধু ফসল নয়, চাষিদের ভাগ্যবদলের হাতিয়ার হয়ে উঠেছে।” ঢাকের তালে কৃষকদের মন ভরান সম্রাট গোকুল চন্দ্র দাস।
অনুষ্ঠানে অংশ নেওয়া চাষিরা জানান, আগের প্রজাতির তুলনায় রাজা পাট (Raja jute) অনেক বেশি ফলন ও আয় দিচ্ছে। অনেকেই বলেছেন, আগের তুলনায় বহুগুণ বেশি রোজগার হচ্ছে এখন। যারা এখনও এই চাষ শুরু করেননি, তারাও এখন আগ্রহী হচ্ছেন।
ভবিষ্যতের দিশা ‘রাজা পাট’
নুজিভীডু সিডস কোম্পানির তরফে জানানো হয়েছে, রাজা পাট একটি টেকসই ও লাভজনক কৃষিপণ্য, যা ভারতের পাট শিল্পকে আন্তর্জাতিক মানে উন্নীত করতে সক্ষম। বাংলাদেশের তুলনায় ভারতের আঁশ মানে ঘাটতি থাকলেও, রাজা পাট সেই ঘাটতি পূরণ করছে বলেই দাবি গবেষকদের।