ট্রাইব টিভি বাংলা ডিজিটাল: ২৩ লক্ষ কোটি টাকার ঋণ (৭৬ লক্ষ কোটি পাকিস্তানি রুপি) মাথায় নিয়ে চলেছে পাকিস্তান। অথচ এই ভয়াবহ আর্থিক সংকটের মধ্যেও প্রতিরক্ষা খাতে খরচ কমার বদলে তা বেড়েই চলেছে(Education System Of Pakistan)। চিন থেকে ব্যয়বহুল পঞ্চম প্রজন্মের স্টেলথ যুদ্ধবিমান জেএফ-৩৫ কেনার সিদ্ধান্ত নিয়েছে শাহবাজ শরিফের নেতৃত্বাধীন সরকার। যার প্রত্যক্ষ মূল্য চোকাতে হচ্ছে দেশের শিশু ও শিক্ষা খাতে।
সামরিক আগ্রাসনের খেসারত দিচ্ছে শিক্ষা (Education System Of Pakistan)
আন্তর্জাতিক শিশু সুরক্ষা সংগঠন ‘সেভ দ্য চিলড্রেন’ জানাচ্ছে, আজ পাকিস্তানে প্রতি তিন জন শিশুর মধ্যে এক জন স্কুলের মুখ দেখতে পাচ্ছে না(Education System Of Pakistan)। সংখ্যাটি ভয়ানক— আড়াই কোটিরও বেশি স্কুলছুট শিশু। অন্যদিকে, পাকিস্তানের ‘ইকোনমিক সার্ভে ২০২৪’ বলছে, ২০২৪-২৫ অর্থবর্ষে শিক্ষাখাতে ব্যয় কমেছে ২৯ শতাংশ। জিডিপির অনুপাতে বর্তমানে শিক্ষায় বরাদ্দ মাত্র ০.৮ শতাংশ, যা পাকিস্তানের ইতিহাসে সর্বনিম্ন।
রাষ্ট্রপুঞ্জের সুপারিশ অনুযায়ী, শিক্ষাখাতে অন্তত ৪-৬ শতাংশ ব্যয় হওয়া উচিত। পাকিস্তান (Shehbaz Sharif) তার ধারেকাছেও নেই। উল্টে ২০১৮ সাল থেকে টানা বরাদ্দ কমেছে। অথচ ২০২৩ সালে সরকার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল, ২০২৯ সালের মধ্যে জিডিপির ৪ শতাংশ শিক্ষায় খরচ করা হবে। এখন তা শুধু কথার কথাই থেকে গেছে।
যুদ্ধে বাজেট, স্কুলে সংকট (Education System Of Pakistan)
২০২৩-২৪ অর্থবর্ষে পাকিস্তানের প্রতিরক্ষা বাজেট ছিল ১.৮ লক্ষ কোটি পাকিস্তানি রুপি(Education System Of Pakistan)। চলতি অর্থবর্ষে তা বেড়ে হয়েছে প্রায় ২ লক্ষ কোটি টাকা— অর্থাৎ ১৪.৯৮% বৃদ্ধি। ২৩ লক্ষ কোটি টাকার ঋণ মাথায় নিয়েও এই অগ্রাধিকারে পাকিস্তানের শিক্ষা, স্বাস্থ্য, শিশুকল্যাণ সবকিছুকেই ছাপিয়ে যাচ্ছে সেনা খাতে অর্থ বরাদ্দ।
চিন থেকে স্টেলথ যুদ্ধবিমান কেনা, ভারতের সামরিক শক্তির পাল্টা হিসাবে নিজেদের জুজু তুলে ধরা— এই অজুহাতেই চলছে ব্যয়বহুল সামরিকীকরণ। অথচ দেশের ভিতরে অনাহার, বেকারত্ব ও শিক্ষার অভাব ক্রমেই মারাত্মক আকার নিচ্ছে।

আগ্রাসন-নির্ভর বাজেট প্রবণতা (Education System Of Pakistan)
পাকিস্তানের এই সামরিক আগ্রাসন-নির্ভর বাজেট প্রবণতা স্বল্পমেয়াদে রাজনৈতিক বার্তা দিলেও, দীর্ঘমেয়াদে একটি গোটা প্রজন্মের ভবিষ্যৎকে বিপন্ন করে তুলছে (Education System Of Pakistan)। শিক্ষা খাতে বিনিয়োগ না করে অস্ত্রভাণ্ডার গড়া যে কোনও দেশের আত্মঘাতী সিদ্ধান্ত— পাকিস্তান তারই বাস্তব উদাহরণ হয়ে উঠছে।এর পাশাপাশি প্রতিরক্ষা খাতে বরাদ্দের তথ্য আরও উদ্বেগজনক। ২০২৩-২৪ অর্থবর্ষে প্রতিরক্ষা বাজেট ছিল ১ লক্ষ ৮০ হাজার কোটি পাকিস্তানি রুপি। ২০২৪-২৫ অর্থবর্ষে তা বেড়ে হয়েছে প্রায় ২ লক্ষ কোটি টাকা— বৃদ্ধি প্রায় ১৫ শতাংশ। যুদ্ধবিমানের মতো ব্যয়বহুল অস্ত্র কেনায় এই বাজেট আরও ফুলে-ফেঁপে উঠছে(Education System Of Pakistan)।

আরও পড়ুন: Eurodrone : ভারতের সঙ্গে ইউরোড্রোন যৌথ উৎপাদনের প্রস্তাব ইউরোপীয় ইউনিয়নের, খতিয়ে দেখছে ডিআরডিও
প্রতিরক্ষা খরচ বাড়াচ্ছে পাকিস্তান (Education System Of Pakistan)
ভারতের সামরিক উপস্থিতিকে অজুহাত করে পাকিস্তান নিজেদের প্রতিরক্ষা খরচ বাড়াচ্ছে, এ কথা সরকারি মহল থেকে বলা হচ্ছে নিয়মিত(Education System Of Pakistan)। কিন্তু এই বাহ্যিক শত্রুর ভয়ে অভ্যন্তরীণ অগ্রগতি থেমে গেলে, সেই রাষ্ট্র আর কত দিন টিকে থাকতে পারে?এই পরিস্থিতিতে আন্তর্জাতিক মহল উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। শিক্ষা খাতে বঞ্চিত শিশুদের সংখ্যা শুধু সামাজিক বা মানবিক সংকট নয়, বরং একটি দেশের দীর্ঘমেয়াদি ভবিষ্যতের ওপর মারাত্মক নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে। কর্মদক্ষতা, নাগরিক সচেতনতা, সামাজিক স্থিতাবস্থা— সবকিছুই হুমকির মুখে পড়বে।