ট্রাইব টিভি বাংলা ডিজিটাল: রান্নাঘরের কৌটো, রেস্তরাঁর (Effects of Plastic) খাবারের প্যাকেট, শিশুর খেলনা, এমনকি অফিসের জল বোতল—প্লাস্টিক ছাড়া যেন আমাদের দৈনন্দিন জীবন কল্পনাই করা যাচ্ছে না। অথচ এই নিত্য ব্যবহার্য প্লাস্টিকই নীরবে কাড়ছে আমাদের ঘুম, নষ্ট করছে শরীরের প্রাকৃতিক তাল, এমনকি বাড়াচ্ছে মরণরোগের ঝুঁকিও—সতর্ক করছেন বিজ্ঞানীরা।
‘দেহঘড়ি’র উপর সরাসরি প্রভাব (Effects of Plastic)
সম্প্রতি নরওয়ের একটি গবেষণায় উঠে এসেছে চাঞ্চল্যকর (Effects of Plastic) তথ্য। দেশটির ‘নরওয়েজিয়ান ইউনিভার্সিটি অফ সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজি’-র বিজ্ঞানীরা জানাচ্ছেন, প্লাস্টিকজাত দ্রব্যে ব্যবহৃত কিছু রাসায়নিক—বিশেষ করে যেগুলো খাবার সংরক্ষণ বা প্যাকেজিংয়ে ব্যবহৃত হয়—তা শরীরের কোষীয় সংকেত ও ‘দেহঘড়ি’র উপর সরাসরি প্রভাব ফেলছে।
কোষের সঙ্কেত বিঘ্নিত হচ্ছে (Effects of Plastic)
আমাদের দেহ হাজার হাজার কোটি কোষের সমন্বয়ে (Effects of Plastic) গঠিত। প্রতিটি কোষের নিজস্ব কার্যপ্রণালী রয়েছে, যা শরীরের বিভিন্ন অঙ্গকে একসঙ্গে কাজ করতে সাহায্য করে। এই কোষীয় সংকেতের উপর নির্ভর করে শরীর রোগ প্রতিরোধ করে, স্নায়ু কাজ করে এবং অঙ্গপ্রত্যঙ্গের মধ্যে যোগাযোগ স্থাপন হয়। কিন্তু প্লাস্টিকে থাকা রাসায়নিক পদার্থ এই সংকেত পদ্ধতিকে বিঘ্নিত করছে বলে দাবি গবেষকদের। বিশেষত পিভিসি জাতীয় প্লাস্টিকে যে অ্যাডিনোসিন ১ রিসেপ্টর সক্রিয় হয়, তা কোষের মধ্যে ভুল সংকেত পৌঁছে দিয়ে দেহের স্বাভাবিক কাজ ব্যাহত করে।
দেহ-ঘড়ির ছন্দে আঘাত
শরীরের নিজস্ব ছন্দ বা ‘সার্কাডিয়ান ক্লক’-এর কথা এখন অনেকেই জানেন। এই দেহঘড়িই নিয়ন্ত্রণ করে কখন ঘুমাবেন, কখন জাগবেন, কখন খিদে পাবে, কখন বিশ্রাম প্রয়োজন। কিন্তু গবেষণা বলছে, প্লাস্টিকজাত কিছু রাসায়নিক এই ঘড়ির হিসাব ওলটপালট করে দিচ্ছে।
আরও পড়ুন: Laptop Care: হঠাৎ বৃষ্টিতে ভিজে গেল ল্যাপটপ? কী করবেন, কী করবেন না জেনে নিন এখনই!
১৭ মিনিট করে নষ্ট
গবেষকেরা জানাচ্ছেন, প্রতিদিন গড়ে ১৭ মিনিট করে নষ্ট হয়ে যাচ্ছে দেহঘড়ির নির্ধারিত সময় থেকে। যদিও শুনতে তা তুচ্ছ মনে হতে পারে, কিন্তু এই প্রতিদিনের ক্ষতি আস্তে আস্তে জমে গিয়ে বড় আকার নেয়, যার প্রভাব পড়ে ঘুমের গুণমান, কর্মক্ষমতা এবং মানসিক স্বাস্থ্যে।
ঝুঁকি বাড়ছে দীর্ঘমেয়াদি রোগের
দেহঘড়ির ছন্দপতন শুধু ঘুমেই বিঘ্ন ঘটায় না, এটি বাড়িয়ে দেয় স্থূলতা, হৃদরোগ, স্মৃতিভ্রংশ এবং ক্যানসারের মতো জটিল অসুখের ঝুঁকিও। পাশাপাশি, শরীরের প্রাকৃতিক রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যাওয়ার ফলে সংক্রমণের আশঙ্কাও বাড়ে।
আরও পড়ুন: Laptop Care: হঠাৎ বৃষ্টিতে ভিজে গেল ল্যাপটপ? কী করবেন, কী করবেন না জেনে নিন এখনই!
কী করা উচিত?
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, খাবার সংরক্ষণে বা পরিবহনে প্লাস্টিকের বিকল্প খুঁজতে হবে এখনই। কাচের কন্টেনার, স্টিলের টিফিনবক্স বা জৈব উপাদান দিয়ে তৈরি প্যাকেজিং ব্যবহার করা যেতে পারে। অল্প সময় বাঁচানোর জন্য প্লাস্টিকে মোড়া খাবার বেছে নিলে, দীর্ঘ মেয়াদে তার খেসারত হতে পারে ভয়াবহ।