ট্রাইব টিভি বাংলা ডিজিটাল: হোয়াইট হাউসের পূর্ব দিকের ঘরে রাখা ডেস্কে বসে থাকা স্কুলের বাচ্চাদের মাঝেই, ট্রাম্প একটি বিশেষ অনুষ্ঠানে এই নতুন আদেশে স্বাক্ষর করার পর হেসে তা তুলে ধরেন (Eliminate Education Department)। কিন্তু কী আছে এই আদেশে? কেন শুরু হল বিতর্ক?
শিক্ষা ব্যবস্থা রাজ্যের হাতে ফিরিয়ে দেওয়ার উদ্যোগ (Eliminate Education Department)
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বৃহস্পতিবার এক নির্বাহী আদেশে স্বাক্ষর করেছেন, যার লক্ষ্য মার্কিন শিক্ষা দফতর (Department of Education) সম্পূর্ণভাবে বন্ধ করা (Eliminate Education Department)। দীর্ঘদিন ধরে অ্যামেরিকার রক্ষণশীল শিবির এই দফতর বিলুপ্তির দাবি জানিয়ে আসছে, যাতে রাজ্যগুলো ফেডারেল সরকারের হস্তক্ষেপ ছাড়াই নিজ নিজ শিক্ষা ব্যবস্থা পরিচালনা করতে পারে।
হোয়াইট হাউসের ইস্ট রুমে এক বিশেষ অনুষ্ঠানে, যেখানে স্কুলপড়ুয়া শিক্ষার্থীরাও উপস্থিত ছিল, ট্রাম্প এই আদেশে স্বাক্ষর করেন এবং উচ্ছ্বাসের সঙ্গে সেটি তুলে ধরেন।
“এটি আমাদের কোনো উপকার করছে না” (Eliminate Education Department)
ট্রাম্প ঘোষণা করেন (Eliminate Education Department), “আমরা শিক্ষা দপ্তরকে সম্পূর্ণরূপে বন্ধ করতে যাচ্ছি। যত দ্রুত সম্ভব এটি বন্ধ করে দেওয়া হবে। এটি আমাদের কোনো উপকার করছে না। আমরা শিক্ষার নিয়ন্ত্রণ রাজ্যগুলোর হাতে ফিরিয়ে দেব, যেখানে এটি থাকার কথা।”
কংগ্রেসের অনুমতি ছাড়াই কি সম্ভব? (Eliminate Education Department)
১৯৭৯ সালে প্রতিষ্ঠিত শিক্ষা দফতর বন্ধ করতে কংগ্রেসের অনুমোদন প্রয়োজন হবে (Eliminate Education Department)। তবে বিশেষজ্ঞদের মতে, ট্রাম্পের নির্বাহী আদেশের মাধ্যমে এই দফতরের তহবিল এবং কর্মীসংখ্যা কমিয়ে কার্যত অকার্যকর করে দেওয়া সম্ভব। এই সিদ্ধান্ত ট্রাম্পের অন্যতম প্রধান নির্বাচনী প্রতিশ্রুতি পূরণের অংশ। তিনি টেক টাইকুন এলন মাস্কের সহযোগিতায় মার্কিন সরকারে ব্যাপক পরিবর্তন আনার পদক্ষেপ নিচ্ছেন, যার মধ্যে এটি অন্যতম।
“একনায়কতান্ত্রিক সিদ্ধান্ত” বলে সমালোচনা ডেমোক্র্যাটদের
ট্রাম্পের এই সিদ্ধান্তে ডেমোক্র্যাটরা এবং শিক্ষাবিদরা ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। সেনেটের শীর্ষ ডেমোক্র্যাট নেতা চাক শুমার একে “একনায়কতান্ত্রিক ক্ষমতার অপব্যবহার” এবং “ট্রাম্পের নেওয়া অন্যতম ধ্বংসাত্মক সিদ্ধান্ত” বলে অভিহিত করেছেন।
রিপাবলিকান নেতাদের সমর্থন
ফ্লোরিডার গভর্নর রন ডেসান্টিস এবং টেক্সাসের গভর্নর গ্রেগ অ্যাবট-সহ শীর্ষ রিপাবলিকান নেতারা এই স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন। ট্রাম্প দাবি করেছেন, এই পদক্ষেপে সরকারি খরচ কমবে এবং শিক্ষার মান উন্নত হবে। তিনি বলেন, মার্কিন শিক্ষা ব্যবস্থা ইউরোপ এবং চীনের তুলনায় পিছিয়ে রয়েছে, তাই এই পরিবর্তন জরুরি।
আরও পড়ুন: Sunita Williams: সুনীতারা একা নয়, মহাকাশে আটকে ছিলেন আরও অনেকে! দীর্ঘ মহাকাশে থাকার রেকর্ড কার?
শিক্ষা সচিব লিন্ডা ম্যাকমাহনের দায়িত্ব (Eliminate Education Department)
ট্রাম্পের এই নির্বাহী আদেশে শিক্ষা সচিব লিন্ডা ম্যাকমাহনকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে (Eliminate Education Department), “শিক্ষা দফতর বন্ধ করার জন্য প্রয়োজনীয় সব পদক্ষেপ নিতে এবং শিক্ষার দায়িত্ব রাজ্যগুলোর হাতে ফিরিয়ে দিতে”। লিন্ডা ম্যাকমাহন এর আগে ওয়ার্ল্ড রেসলিং এন্টারটেইনমেন্টের (WWE) প্রধান নির্বাহী ছিলেন। ট্রাম্প তার নিয়োগের সময়ই ইঙ্গিত দিয়েছিলেন যে শিক্ষা দফতরের দিন শেষ হতে চলেছে।
শিক্ষা দফতরের ভবিষ্যৎ কী?
হোয়াইট হাউসের প্রেস সেক্রেটারি ক্যারোলিন লেভিট জানিয়েছেন, শিক্ষা দফতর পুরোপুরি বন্ধ না হলেও এটি খুব ছোট পরিসরে পরিচালিত হবে। শিক্ষাঋণ এবং নিম্নআয়ের শিক্ষার্থীদের জন্য কিছু অনুদান পরিচালনার জন্য একটি সীমিত দফতর টিকে থাকতে পারে।
“সুন্দর দিন” বলে প্রশংসা ডানপন্থী সংগঠনের
ডানপন্থী একটি থিঙ্ক ট্যাঙ্ক হেরিটেজ ফাউন্ডেশন, যার “প্রোজেক্ট ২০২৫” পরিকল্পনার বেশ কিছু সুপারিশ ট্রাম্প বাস্তবায়ন করছেন, এই সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছে। এক্স (পূর্বে টুইটার)-এ তারা লিখেছে, “শিক্ষা দফতর ভেঙে দেওয়ার জন্য এটি একটি সুন্দর দিন।”
আরও পড়ুন: Sunita Williams Return Cost: সুনীতাদের ফেরানোর খরচ ইসরোর বার্ষিক বাজেটের চেয়েও বেশি! কী জানাল নাসা
শিক্ষা দফতর কেন গুরুত্বপূর্ণ?
মার্কিন শিক্ষা ব্যবস্থায় প্রাথমিক ও মাধ্যমিক স্তরের জন্য মাত্র ১৩ শতাংশ তহবিল ফেডারেল সরকারের তরফ থেকে আসে। বাকি অর্থ রাজ্য এবং স্থানীয় প্রশাসন সরবরাহ করে। তবে, ফেডারেল সরকারের তহবিল নিম্ন আয়ের স্কুল ও বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন শিক্ষার্থীদের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এছাড়া, শিক্ষার্থীদের গুরুত্বপূর্ণ নাগরিক অধিকার নিশ্চিত করতে ফেডারেল শিক্ষা দফতর বড় ভূমিকা পালন করে।
অন্যান্য সরকারি দফতর বন্ধের পরিকল্পনা
ট্রাম্প, তার উপদেষ্টা এলন মাস্ক এবং মাস্কের “ডিপার্টমেন্ট ফর গভর্নমেন্ট এফিসিয়েন্সি” (DOGE) এর মাধ্যমে ইতিমধ্যেই বেশ কয়েকটি সরকারি সংস্থা কার্যত অকার্যকর করে দিয়েছেন। এছাড়া, ট্রাম্প প্রশাসন মার্কিন আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সংস্থা (USAID) বন্ধেরও চেষ্টা করছিল, তবে এই সপ্তাহের শুরুতে একজন ফেডারেল বিচারক এই সিদ্ধান্তকে সংবিধানবিরোধী বলে আটকে দেন।