ট্রাইব টিভি বাংলা ডিজিটাল: ভারতীয় প্রতিরক্ষা গবেষণা ও উন্নয়ন সংস্থা (DRDO)-র সঙ্গে যৌথ ভাবে অত্যাধুনিক ড্রোন ‘ইউরোড্রোন’ উৎপাদনের প্রস্তাব দিল ইউরোপীয় রাষ্ট্রগোষ্ঠী (Eurodrone)। প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের একটি উচ্চপদস্থ সূত্র জানিয়েছে, জার্মানি, ফ্রান্স, ইতালি ও স্পেনের যৌথ উদ্যোগে গঠিত ‘অর্গানাইজেশন ফর জয়েন্ট আর্মামেন্ট কর্পোরেশন’ (OCCAR) এই প্রস্তাব দিয়েছে, এবং তা ইতিমধ্যেই পর্যালোচনার পর্যায়ে রয়েছে।
কেন গুরুত্বপূর্ণ ইউরোড্রোন? (Eurodrone)
‘ইউরোড্রোন’ হল একটি Medium Altitude Long Endurance শ্রেণির অত্যাধুনিক পাইলটবিহীন উড়ন্ত যান (UAV), যার পেলোড বহন ক্ষমতা প্রায় ২৩০০ কেজি (Eurodrone)। এটি খারাপ আবহাওয়াতেও ৪০ ঘণ্টা টানা উড়তে সক্ষম, ফলে দীর্ঘ সময় ধরে নজরদারি ও আক্রমণের উপযুক্ত।
বর্তমানে ভারতীয় সেনার ন্যূনতম ১০০টি MALE ড্রোনের প্রয়োজন রয়েছে, বিশেষ করে দুর্গম সীমান্তবর্তী এলাকায় নজরদারি, অস্ত্রবাহী পরিবহণ এবং চটজলদি হামলার উদ্দেশ্যে। ইউরোড্রোন সেই প্রয়োজন মেটাতে কার্যকর হতে পারে বলে মনে করছে প্রতিরক্ষা মহল।
‘অপারেশন সিঁদুর’ ও ড্রোনের গুরুত্ব (Eurodrone)
সম্প্রতি ভারতীয় সেনার চালানো ‘অপারেশন সিঁদুর’ স্পষ্ট করে দিয়েছে, ভবিষ্যতের যুদ্ধক্ষেত্রে ড্রোন-নির্ভর হামলা ও নজরদারি অনিবার্য(Eurodrone)। এই অভিযানেই ড্রোনের মাধ্যমে দ্রুত তথ্য জোগাড় ও নিশানাভেদী হামলার সক্ষমতা কার্যত বদলে দিয়েছে যুদ্ধের কৌশল। এর পরই ড্রোন প্রযুক্তিতে দ্রুত উন্নতির সিদ্ধান্ত নেয় প্রতিরক্ষা মন্ত্রক।

আরও পড়ুন: Iran Israel Conflict : আমেরিকার গালে থাপ্পড়—যুদ্ধবিরতির পর প্রথমবার মুখ খুললেন আয়াতোল্লা খামেনেই
আন্তর্জাতিক আগ্রহ ও প্রতিযোগিতা (Eurodrone)
ভারতের এই প্রয়াসে আগ্রহ দেখাচ্ছে আন্তর্জাতিক প্রতিরক্ষা শিল্প। শুধু ইউরোপ নয়, মার্কিন সংস্থা জেনারেল ক্যাটালিস্ট-ও সম্প্রতি ভারত সরকারের সঙ্গে একটি MALE ড্রোন প্রকল্পে অংশ নিতে প্রস্তাব দিয়েছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, ভারতের বিশাল প্রতিরক্ষা বাজারে প্রবেশ করতে চাইছে বহু দেশ। সেই কারণেই এমন প্রস্তাবনাগুলি একের পর এক আসছে।

ডিআরডিওর অবস্থান (Eurodrone)
সূত্র জানাচ্ছে, ডিআরডিও ইতিমধ্যেই ইউরোড্রোন প্রকল্প নিয়ে কারিগরি বিশ্লেষণ শুরু করেছে। কী পরিমাণ স্থানীয় উৎপাদন সম্ভব, যৌথ প্রযুক্তি হস্তান্তরের সুযোগ কতটা থাকবে, এবং ভারতের ভূখণ্ড ও যুদ্ধ পরিস্থিতির উপযোগিতা কেমন— এসব দিক বিবেচনা করেই সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে(Eurodrone)।
যুদ্ধনীতির দ্রুত পরিবর্তনশীল পরিপ্রেক্ষিতে ভারতীয় সশস্ত্র বাহিনীর জন্য এই যৌথ উদ্যোগ হতে পারে একটি গুরুত্বপূর্ণ মোড়। ইউরোপের প্রযুক্তি এবং ভারতের প্রতিরক্ষা শিল্পের মেলবন্ধনে গড়ে উঠতে পারে একটি শক্তিশালী এবং আত্মনির্ভর UAV পরিকাঠামো। এখন দেখার, ভারত কোন প্রস্তাবকে চূড়ান্তভাবে গ্রহণ করে, আর কীভাবে তা বদলে দিতে পারে দেশের ভবিষ্যৎ যুদ্ধপ্রস্তুতি।