ট্রাইব টিভি বাংলা ডিজিটাল: পুরীতে ১৫ বছরের নাবালিকাকে গায়ে আগুন লাগিয়ে পুড়িয়ে মারার চেষ্টার ঘটনায় তোলপাড় গোটা ওড়িশা। রাস্তায় দগ্ধ অবস্থায় দৌঁড়চ্ছে এক কিশোরী। মুখ গলায় বাঁধা কাপড়, হাত বাঁধা। সাহায্য চেয়ে ছুটে আসে এক বাড়ির দিকে। তাকে সাহায্য করেন ওই বাড়ির মালিক দুখিশ্যাম সেনাপতি(Puri Incident)। সে দিন ঠিক কী ঘটেছিল?সেই ভয়াবহ দৃশ্যের বিবরণ দিলেন তিনি।
প্রত্যক্ষদর্শীর ভয়াবহ বয়ান (Puri Incident)
পুলিশকে দুখিশ্যাম সেনাপতি জানিয়েছেন, ‘মেয়েটি আমার বাড়ির দিকে আগুনে জ্বলতে জ্বলতে দৌড়ে আসে(Puri Incident)। আমার স্ত্রী, মেয়ে এবং আমি মিলে আগুন নিভিয়ে ওকে জামাকাপড় দিই। তারপর মেয়েটিই জানায়, ও পাশের গ্রামে থাকে।’ তিনি আরও জানান, ‘মেয়েটি তাকে বলেছিল যে এক বন্ধুর সঙ্গে দেখা করে ফেরার সময় ওকে তিনজন মিলে আগুন লাগিয়েছে। আমি ওর পরিবারকে খবর দিই। এরপর পুলিশকে ফোন করি। অপরাধীদের খুঁজেতে বেরিয়েছিলাম, কিন্তু তারা ততক্ষণে পালিয়ে গিয়েছিল। পরে মেয়েটিকে আমরা প্রথমে স্থানীয় স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিয়ে যাই, সেখান থেকে ভুবনেশ্বর এইমসে পাঠানো হয়।’ সেনাপতি বলেন, অ্যাম্বুলেন্স দেরিতে এসে পৌঁছয়, ততক্ষণে মেয়েটিকে তারা অটোরিকশায় করে নিয়ে যাওয়ার ব্যবস্থা করেন। এই ঘটনায় গোটা গ্রামে আতঙ্ক ছড়িয়েছে। আমাদের সন্তানরা একা বাইরে যেতে ভয় পাচ্ছে। আমরা অভিযুক্তদের অবিলম্বে গ্রেফতারির দাবি জানাচ্ছি।’

নাবালিকাকে পুড়িয়ে মারার চেষ্টা (Puri Incident)
পুলিশ সূত্রে খবর, গত শনিবার বন্ধুর বাড়িতে যাওয়ার সময় তিন দুষ্কৃতী বাইকে করে এসে ওই নাবালিকাকে জোর করে তুলে নিয়ে যায় (Puri Incident)। তারপর নদীর ধারে নিয়ে গিয়ে গায়ে কেরোসিন ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেয়। জ্বলন্ত অবস্থাতেই কোনওক্রমে দুষ্কৃতীদের কবল থেকে পালিয়ে রাস্তায় ছুটে বেরিয়ে আসে মেয়েটি। দুষ্কৃতীরা তখনই এলাকা ছেড়ে চম্পট দেয়।প্রথমে নির্যাতিতাকে উদ্ধার করে স্থানীয় কমিউনিটি হেলথ সেন্টারে ভর্তি করা হয়। পরে এইমস ভুবনেশ্বরে স্থানান্তরিত করা হয়। সেখান থেকে উন্নত চিকিৎসার জন্য রবিবার তাঁকে এয়ারলিফ্ট করে পাঠানো হয়েছে দিল্লির এইমসে। নির্যাতিতার শরীরের ৭০ শতাংশ পুড়ে গিয়েছে বলে জানা গিয়েছে।
‘গ্রীন করিডর’ (Puri Incident)
পুরীর দগ্ধ কিশোরীকে রবিবার দিল্লির এআইআইএমএসে নিয়ে যেতে ১২ মিনিটে ১১ কিলোমিটার রাস্তা ফাঁকা করে তৈরি করা হয়েছিল ‘গ্রীন করিডর’(Puri Incident)। ভুবনেশ্বরের এইমস থেকে বিজু পট্টনায়ক আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর যাওয়ার রাস্তায় গাড়ি চলাচলে নিষিদ্ধ করা হয়েছে। সেখান থেকে এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে করে দিল্লি নিয়ে যাওয়া হয় তাকে।এইমস এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, বর্তমানে ওই কিশোরীকে বার্নস অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ব্লকের বার্ন আইসিইউতে ভর্তি করা হয়েছে। তার অবস্থা আশঙ্কাজনক এবং অক্সিজেন সাপোর্ট দেওয়া হচ্ছে। চিকিৎসকদের একটি দল তাঁকে সর্বদা পর্যবেক্ষণ করছে।এই ঘটনায় ওড়িশার মুখ্যমন্ত্রী মোহনচরণ মাঝি গভীর শোকপ্রকাশ করেছেন। দোষীদের খুঁজে কঠোর শাস্তি দেওয়া হবে বলেও আশ্বস্ত করেছেন তিনি।

আরও পড়ুন-Love Jihad: আইসিসের কায়দায় ধর্মান্তকরণ! একাধিক রাজ্য থেকে গ্রেফতার ১০, অনুশোচনা অভিযুক্তের
কলেজ ছাত্রীর আত্মহত্যা (Puri Incident)
উল্লেখ্য, সম্প্রতি ওড়িশার বালেশ্বরে এক কলেজ ছাত্রী অভিযোগ করেছিলেন, তাঁকে যৌন হেনস্থা করেছে কলেজেরই এক অধ্যাপক(Puri Incident)। কলেজ কর্তৃপক্ষ ব্যবস্থা না নেওয়ায় প্রতিবাদে তিনি নিজের গায়ে আগুন লাগিয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করেন। শরীরের ৯৫ শতাংশ পুড়ে গিয়েছিল তাঁর। ঘটনার কয়েকদিন পরই চিকিৎসাধীন অবস্থায় তাঁর মৃত্যু হয়। সেই ঘটনার ঠিক পরপরই ঘটল পুরীর এই বর্বরতা।
