ট্রাইব টিভি বাংলা ডিজিটাল: প্রয়াত হলেন মুম্বইয়ের ক্রিকেটের প্রাক্তন অধিনায়ক(Milind Rege) এবং প্রাক্তন নির্বাচক মিলিন্দ রেগে। ১৯ ফেব্রুয়ারি বুধবার সকালে নিজের বাড়িতে প্রয়াত হয়েছেন। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৭৬ বছর। ম্যাচের আগের দিনই শোকের ছায়া ভারতীয় ক্রিকেটে। তাঁর মৃত্যুতে শোকাহত মুম্বই ক্রিকেট মহল। গত রবিবারই ৭৬ বছর পূরণ করেছিলেন তিনি। মৃত্যুর আগে পর্যন্ত কাজ করেছেন মুম্বই ক্রিকেট সংস্থার (এমসিএ) পরামর্শদাতা হিসাবে।
অল্প বয়সেই ক্রিকেট দলে সুযোগ (Milind Rege)
তাঁর পুরো নাম মিলিন্দ দত্তাত্রেয় রেগে(Milind Rege)। খুব অল্প বয়সেই বম্বে ক্রিকেট দলে সুযোগ পান। ১৯৬৭-৬৮ থেকে ১৯৭৭-৭৮ পর্যন্ত খেলেছেন প্রথম শ্রেণির ক্রিকেট। বোম্বের পাশাপাশি পশ্চিমাঞ্চলের প্রতিনিধিত্বও করেছেন। সাতের দশকের মাঝামাঝি সময়ে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়েছিলেন মিলিন্দ। কিন্তু সুস্থ হয়ে ফের মাঠে ফেরেন তিনি। ১৯৭৭-৭৮ মরশুমে মুম্বই ক্রিকেট দলের অধিনায়ক হিসেবে তাঁর ‘কামব্যাক’ সাড়া ফেলেছিল সেই সময়। প্রভাদেবীর বাসিন্দা রেগে সুনীল গাভাসকরের সঙ্গে সেন্ট জেভিয়ার্স হাই স্কুল এবং সেন্ট জেভিয়ার্স কলেজে পড়তেন। সেই সময় থেকেই দু’জনের মধ্যে গাঢ় বন্ধুত্ব। বন্ধুহারা হলেন গাভাসকর।
সেই সময়ের ক্রিকেট জগতের রত্ন (Milind Rege)
সেই সময় টানা ১৩ বার রঞ্জি জেতে মুম্বই দল। রেগে অফ স্পিনিং অলরাউন্ডার ছিলেন। ৫২টি প্রথম শ্রেণীর ম্যাচ খেলেন। ১২৬ উইকেট নেন। গড় ২৯.২৩। তারমধ্যে দু’বার পাঁচ উইকেট নেওয়ার নজির আছে। পাশাপাশি ১৫৩২ রানও করেন। সর্বোচ্চ অপরাজিত ৬৭। সেই সময়ের ক্রিকেটের এক রত্ন ছিলেন তিনি(Milind Rege)। রেগে টাটা এসসি, দাদর ইউনিয়ন ক্লাব এবং ক্রিকেট ক্লাব অফ ইন্ডিয়ার হয়ে খেলেন।
আরও পড়ুন: Pak Air Show in Karachi: চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির আগে পাক এয়ার শো! ভয়ে কাঁটা নিউজিল্যান্ড দল
ওয়াংখেড়ে স্টেডিয়ামের ৫০ বছর পূর্তি
গত মাসে ওয়াংখেড়ে স্টেডিয়ামের ৫০ বছর পূর্তিতে মুম্বই দলের আটজন জীবিত সদস্যকে সংবর্ধিত করে এমসিএ, যারা ১৯৭৪ সালে আইকনিক স্টেডিয়ামে প্রথম ম্যাচ খেলেছিলেন। অশোক মানকাডের সেই দলের সদস্য ছিলেন রেগে(Milind Rege)। সেই ম্যাচে গুরুত্বপূর্ণ ৬৩ রান করেন। ইনিংস এবং ৯৬ রানে জেতে মুম্বই। সেই দলে ছিলেন সুনীল গাভাসকর, ফারুক ইঞ্জিনিয়র, করসেন ঘাউরিরাও। ১৯৭১ সালে রঞ্জি ট্রফি চ্যাম্পিয়ন মুম্বই দলের সদস্য ছিলেন তিনি।
মুম্বাই ক্রিকেটে নানা ভূমিকায়
ক্রিকেটার হিসেবে অবসরের পরও মুম্বই ক্রিকেটে নানা ভূমিকায় দেখা গিয়েছে তাঁকে। দুদশক মুম্বই ক্রিকেট অ্যাসোসিয়েশনের বহু সাবকমিটির সদস্য ছিলেন মিলিন্দ। ২০১১ সালে হয়েছিলেন নির্বাচকদের চেয়ারম্যান। ২০১২ সালে অবসর নেওয়ার পরও তাঁকে চার সদস্যের প্যানেলে রেখে দেওয়া হয়। ২০১৫ সালে ফের তিনি চেয়ারম্যান হন। এরই সঙ্গে টাটা স্পোর্টস ক্লাবের সম্পাদকের পরও মিলিন্দ সামলেছেন দু’দশকেরও বেশি সময়। এছাড়া তিনি মুম্বই ক্রিকেটে ভিডিও বিশ্লেষণের ব্যবহার সমর্থন করেছিলেন যা ২০০৬ সাল থেকে মুম্বইয়ের সিস্টেমে প্রবর্তন হয়েছিল। মৃত্যুর আগে পর্যন্ত কাজ করেছেন মুম্বই ক্রিকেট সংস্থার (এমসিএ) পরামর্শদাতা হিসাবে।
আরও পড়ুন: IPL 2025: আইপিএল-এর উদ্বোধনী ম্যাচেই নাইটদের প্রতিপক্ষ রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরু
তিন দশক ধরে মুম্বাই ক্রিকেটের সঙ্গে জড়িত
মাত্র ২৬ বছর বয়সে হৃদরোগে আক্রান্ত হন তিনি। যার ফলে অকালে শেষ হয়ে যায় ক্রিকেটজীবন। এই রবিবার ৭৬ বছরে পা রাখেন মুম্বইয়ের প্রাক্তন অধিনায়ক। বর্তমানে মুম্বই ক্রিকেট অ্যাসোসিয়েশনের পরামর্শদাতা ছিলেন। প্রায় তিন দশক ধরে মুম্বই ক্রিকেটের সঙ্গে জড়িত ছিলেন রেগে। মুম্বইয়ের মুখ্য নির্বাচক ছিলেন। এমসিএর ক্রিকেট ইমপ্রুভমেন্ট কমিটির সদস্যও ছিলেন। রেগে বিশেষভাবে খ্যাত ছিলেন মুম্বইয়ের রঞ্জি ট্রফি স্কোয়াডে এক তরুণ সাচিন তেন্ডুলকারকে অন্তর্ভুক্ত করার জন্য সিলেকশন প্যানেলে থাকার জন্য। ১৯৮৮ সালে তেন্ডুলকারের প্রথম রঞ্জি ট্রফির অভিষেক ঘটে রেগের সিলেকশন প্যানেলের মাধ্যমে।
বিসিসিআই- এর শোকপ্রকাশ
বিসিসিআই তাদের অফিসিয়াল এক্স হ্যান্ডলে রেগের মৃত্যুতে শোক জানিয়ে একটি বিবৃতি প্রকাশ করেছে, ‘‘বিসিসিআই মিলিন্দ রেগের প্রয়াণে শোকাহত। তিনি মুম্বই ক্রিকেটের এক অমূল্য রত্ন ছিলেন এবং তার অবদান ক্রিকেট বিশ্বে চিরকাল স্মরণীয় হয়ে থাকবে। তাঁর দৃষ্টিশক্তি এবং প্রতিভার প্রতি আগ্রহ ক্রিকেট দুনিয়ায় বিশেষ প্রশংসিত ছিল।’’